বরিশাল সিটির তিন প্রবেশদ্বারে সিটি টোল আদায়ে চলছে হরিলুট। প্রবেশদ্বারগুলোতে নিজস্ব কর্মচারী দিয়ে টোল আদায় কিংবা বাৎসরিক ইজারা দেওয়ার বিধান থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবে গত পাঁচ বছর ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে ভাগবাটোয়ারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনটি সিটি গেটে বিভিন্ন যানবাহন থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা টোল আদায় হলেও সিটি করপোরেশনের তহবিলে জমা হচ্ছে নামমাত্র। বিসিসির বাজার শাখার সুপারিনটেন্ডেন্ট নুরুল ইসলামের মাধ্যমে প্রতিদিন তিন সিটি গেটের আদায় করা টাকার একাংশ বিসিসির তহবিলে জমা হয়। বাকি টাকা আত্মসাৎ হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) বিপুল অঙ্কের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
তিনটি সিটি গেটে প্রথম দুই-তিন সপ্তাহ বিসিসি কর্মচারীরা টোল আদায় করলেও এরপর তৎকালীন মেয়র হিরণ তার অনুগত দলীয় নেতা-কর্মীদের টোল আদায়ের দায়িত্ব দেন। সিটি করপোরেশনের মনোগ্রামখচিত রশিদ (মেমো) দিয়ে টোল আদায় করেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। বিগত মেয়রের ধারাবাহিকতায় চলছে টোল আদায়। গত মে মাসে তিন সিটি টোল প্লাজা বাৎসরিক ইজারা দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতার কারণে ওই দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় গড়িয়ার পাড় সিটি গেটে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা লিটন মোল্লা ১৫ দিন, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম জাভেদ ৭ দিন এবং বিএনপি নেতা রমজান মোল্লা ও কাউন্সিলর খায়রুল মামুন শাহিন মিলে ৮ দিন করে টোল আদায়ের সমঝোতা হয়। সেলিম জাভেদ জানান, গড়িয়ার পাড় থেকে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় বিসিসির তহবিলে ৪ হাজার ১০০ টাকা জমা দেওয়া হয়, যা বুঝে নেন বাজার শাখার সুপারিনটেন্ডেন্ট মো. নূরুল ইসলাম। একইভাবে নগরীর রুপাতলি থেকে টোল তোলেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বিদ্যুৎ কর্মকার পিংকু। প্রতিদিন সেখান থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা তিনি বিসিসির তহবিলে জমা দিচ্ছেন। কালিজিরা টোল প্লাজায় ১৫ দিন টোল আদায় করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম এবং বাকি ১৫ দিন টোল তোলেন জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা কবির হোসেন। মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হলেও কেউ টেন্ডারে অংশ নেয়নি। তাই টোল প্লাজাগুলো স্থানীয়দের মধ্যে ঠিকা দেওয়া হয়েছে।