রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী হামলা

তানভীর আহমেদ

বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী হামলা

গত দুই দশকের ব্যবধানে সারা বিশ্বেই সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হতাহতের সংখ্যাও। ২০০৬ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সন্ত্রাসী আক্রমণে সারা বিশ্বে ১ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। ছোট-বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে ৯০ হাজারের মতো। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০০০ সাল-পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসীদের সাংগঠনিক সক্ষমতা বেড়েছে। উন্নত অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক ভিত্তিও শক্তিশালী হয়েছে। সন্ত্রাসীদের মানচিত্র এখন গোটা বিশ্ব। মধ্যপ্রাচ্য কী আফ্রিকা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নিরাপদ আশ্রম গড়ে তুলেছে বিভিন্ন দেশে। তাই সন্ত্রাসী হামলা থেকে বিশ্বের কোনো দেশই সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমূল পরিবর্তন এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের হামলার পর। ইউরোপ থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়া সর্বত্রই সন্ত্রাসীদের কমবেশি পদচারণা। ইসলামিক স্টেট, বোকো হারাম, তালেবান আর আল-কায়েদার সন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক হুমকি হিসেবে বিবেচিত।

 

 

গুলি আর বোমায় কেঁপে ওঠে প্যারিস

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অন্য আর ১০ দিনের মতোই শান্ত একটি দিনের শুরু। কিন্তু কে জানত এই শান্ত শহরেই সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে শতাধিক মানুষের প্রাণপ্রদীপ নিভে যাবে? শহরের অন্তত ছয়টি স্থানে কাছাকাছি সময়ের মধ্যে ঘটে গেল ঘটনা। প্রথমটি ঘটল একটি কনসার্টে। শহরের কেন্দ্রস্থলে বাটাক্লঁ কনসার্ট হলে। কনসার্ট দেখতে ওই হলে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। রক কনসার্টের ছেদ ঘটল কয়েকজন সন্ত্রাসীর আগমনে। অন্তত তিন হামলাকারী কনসার্ট হলে ঢুকে কালাশনিকভের মতো দেখতে রাইফেল বের করে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। পরে হামলাকারীরা ওই হলে অনেককে জিম্মি করে ফেলল। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ছয়টি স্থানে বোমা হামলার পর আতঙ্কে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন ওই সব এলাকার লোকজন। সবাই যার যার জায়গায় আটকা পড়েন। আতঙ্কে কেউই যেন নড়তে পারছিলেন না। পরে হামলাকারীদের ঘিরে ওই সব স্থান থেকে লোকজনকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়। কনসার্ট দেখতে এসেছিলেন জুলিয়েন পেরেজ। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় দেওয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, হঠাৎ হলে ঢুকে দুই সন্ত্রাসী। খুবই শান্ত, খুবই কৃতসংকল্প ছিল তারা। এরপর যথেচ্ছভাবে গুলি করতে শুরু করে। কালো পোশাক পরা থাকলেও তাদের মুখোশ পরা ছিল না। হামলাকারীদের একজন খুবই তরুণ। সর্বোচ্চ ২৫ বছর বয়স হতে পারে। অন্য সাধারণ একটি ছেলের মতোই ছিল সে। হাতে একটি কালাশনিকভ রাইফেল। দুই বন্দুকধারী হলটির পেছনের দিকে দাঁড়িয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গুলি করতে শুরু করে। এরপর লোকজন মেঝেতে শুয়ে পড়ে। কয়েকজনকে তারা মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঢঙে গুলি করে। যুবক দুটি একটুও নড়াচড়া করেনি। হলটির পেছনে দাঁড়িয়ে তারা শুধু গুলি চালিয়েছে। পাখির মতো গুলি করেছে। কনসার্ট থেমে গেল। সবাই নিচে শুয়ে পড়ল। গুলি শেষ হয়ে গেলে বন্দুকধারী যুবকরা আবার গুলি ভরার সময় তারা পালিয়ে একটি খালি কক্ষে চলে যায়। জিম্মিদের একজন বেঞ্জামিন ক্যাজোনোভেস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে- ‘ওরা একের পর এক জবাই করছে। অনেকেই ভিতরে আটকা পড়েছে। জীবন্ত জবাই করা হচ্ছে... ভয়াবহ পরিস্থিতি, চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ’। হামলাকারীরা  অন্ধের মতো গুলি চালিয়েছিল।

 

 

যে যেদিকে পারে দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করছিল। ফ্রান্সের প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অন্তত আট হামলাকারী নিহত হয়। তাদের মধ্যে সাতজন ছিল আত্মঘাতী। বাটাক্লঁ কনসার্ট হলেই নিহত হয় চার হামলাকারী। তাদের মধ্যে তিনজন নিজেদের সঙ্গে রাখা বোমায় আত্মঘাতী হয়। আর একজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। তিনজন হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছে জাতীয় স্টেডিয়ামের কাছে। আর একজন প্যারিসের রাস্তায় গুলিতে নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের বিখ্যাত স্টাদে দ্য ফ্রান্সে চলছিল ফ্রান্স-জার্মানির হাই ভোল্টেজ ফুটবল ম্যাচ। ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ, সঙ্গী জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার। খেলার তখন প্রথমার্ধের ১৭ মিনিট। এ সময় হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ। এই বিকট শব্দে গ্যালারির দর্শক, মাঠের খেলোয়াড়রা বিভ্রান্ত হন।  কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইল ম্যাসেজে তাদের কাছে পৌঁছে গেল প্যারিসের ভয়াবহ হামলার খবর। এতক্ষণ গ্যালারিতে চলা আনন্দ উচ্ছ্বাস যেন নিভে গেল সহসাই। এদিকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যেই ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট খেলা চলে। তবে খেলা শেষ হওয়ার পরও স্টেডিয়াম ছাড়তে চাইছিলেন না দর্শকরা। উৎকণ্ঠিত দর্শকরা গ্যালারি ছেড়ে ভিড় করলেন সবুজ মাঠে। মাঠের সবুজ টার্ফে দর্শক, ফুটবল কর্মকর্তা, সাংবাদিক, নিরাপত্তারক্ষী সবাই যেন মিলেমিশে একাকার। তার পর ধীরে ধীরে মাঠ থেকে বের করে নেওয়া হলো দর্শকদের। আক্রমণের ঘটনা সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ল দাবানলের মতো। শহরের পুলিশ ভারী অস্ত্রসহ সেখানে অভিযান চালায়। হামলার পর পর তল্লাশি জোরদার করা হয় প্যারিসজুড়ে। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীদের এই ন্যক্কারজনক হামলায় নিভে গেছে শতাধিক প্রাণ।


 

 

২০০৮ মুম্বাই জঙ্গি হামলা

ভারতের মুম্বাইয়ে ২০০৮ সালের আগেও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। তবে পুরো বিশ্বকেই কাঁপিয়ে দেয় ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরের সন্ত্রাসী হামলাটি। পাকিস্তান থেকে জলপথে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীরা সেদিন মুম্বাইজুড়ে চালায় তাণ্ডব। সেদিন মুম্বাইয়ে ১০টিরও বেশি ধারাবাহিক গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই হামলা চলে। সন্ত্রাসী হামলায়  ১৬৪ জন নিহত ও কমপক্ষে ৩০৮ জন আহত হন। সারা বিশ্বে এই ঘটনা তীব্রভাবে নিন্দিত হয়। আটটি হামলার ঘটনা ঘটে দক্ষিণ মুম্বাইয়ে। এ ছাড়া মুম্বাইয়ের বন্দর এলাকার মাজাগাঁও ও ভিলে পার্লের একটি ট্যাক্সির মধ্যেও বিস্ফোরণ ঘটে। ২৮ নভেম্বর সকালের মধ্যেই মুম্বাই পুলিশ ও অন্যান্য রক্ষীবাহিনী তাজ হোটেল ছাড়াও অন্য সব আক্রান্ত স্থান সুরক্ষিত করে ফেলে। ২৯ নভেম্বর ভারতের জাতীয় রক্ষীবাহিনী (এনএসজি) তাজ হোটেলে আশ্রয়গ্রহণকারী অবশিষ্ট জঙ্গিদের হত্যা করে। এই অপারেশনটির নাম ছিল অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডো।

জীবিত অবস্থায় ধরা পড়া  একমাত্র জঙ্গি আজমল কাসভ জেরার মুখে স্বীকার করে, হামলাকারী জঙ্গিরা ছিল পাকিস্তানি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবার সদস্য।  ভারত সরকার জানায়, হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে এসেছিল এবং তাদের নিয়ন্ত্রণও করা হয়েছিল পাকিস্তান থেকে। ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী শেরি রহমান সরকারিভাবে স্বীকার করে নেন যে, আজমল কাসভ পাকিস্তানের নাগরিক। মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলা এশিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সক্ষমতার একটি চিত্র তুলে আনে।


 

 

লন্ডনে সিরিজ বোমা হামলা

২০০৫ সালের ৭ জুলাই। মধ্য লন্ডনের তিনটি আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন ও একটি বাসে আত্মঘাতী সিরিজ বোমা হামলায় নিহত হন ৫২ জন। আহত হন ৭ শতাধিক মানুষ। ব্রিটেনের মাটিতে এটাই ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। ৭ জুলাই স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে লন্ডনের রাসেল স্কয়ারের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন স্টেশনে প্রথম হামলা চালানো হয়।

এতে নিহত হন ২৬ জন। প্রায় কাছাকাছি সময়ে এজওয়ার ও অ্যাল্ডগেটে পৃথক দুটি হামলায় ছয়জন ও সাতজন নিহত হন। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাভিস্টক স্কয়ারে একটি দ্বিতল বাসে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ১৩ জন। লন্ডনে বোমা হামলাকারী চার জঙ্গির সঙ্গে আল-কায়েদার যোগাযোগ ছিল। ওই হামলাকারীদের সঙ্গে চরমপন্থি সংগঠন আল-কায়েদার সংযোগ ছিল। হামলাকারীদের সুপরিকল্পনা এই হামলার ভয়াবহতা বাড়িয়ে দিয়েছিল।

হামলার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজনরা পাকিস্তানে যে টেলিফোন বুথ থেকে যোগাযোগ করত সে নিয়ে বিস্তর বিশ্লেষণ হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যায়, তাদের আল-কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। এই হামলার জন্য তারা পরিচয় গোপন রেখে যোগাযোগ করেছিল বলেও জানা যায়। আল-কায়েদার সম্পৃক্ততা জানার পর ব্রিটেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আরও সক্রিয় ভূমিকা নেয়। ব্রিটেন বরাবরই সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু ছিল। আর সেটারই একটি শক্তিশালী প্রমাণ লন্ডনের বুকে এই ভয়াবহ সন্ত্রাসী আক্রমণ।


 

 

পাকিস্তানে স্কুলে গুলি

২০১৪ সালের শেষ দিকে পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালায় তালেবান জঙ্গিরা। এতে নিহত হয়েছে ১৩০-এর বেশি শিক্ষার্থী। নিহত শিক্ষার্থীদের বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। জঙ্গি হামলায় একই বয়সী আরও অন্তত ১২০ জনের বেশি স্কুলশিশু আহত হয়।

শুধু পাকিস্তান নয়, বিশ্বব্যাপী চলা সন্ত্রাসবাদের মধ্যে এটি ছিল ভয়ঙ্করতম। সেদিন দুপুরের আগে আট থেকে ১০ জন জঙ্গি সামরিক পোশাকে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা স্কুলের দিকে অগ্রসর হলে শুরু হয় তুমুল গোলাগুলি। প্রায় ৮ ঘণ্টার অভিযানের পর বিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ নেন সেনাসদস্যরা। তখন নয়জন জঙ্গির লাশ পাওয়া যায়, যার মধ্যে তিনজন আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারায়। জঙ্গি হামলার সময় স্কুলটিতে ১১০০-এর মতো শিক্ষার্থী ছিল। সেনাসদস্যরা সাড়ে ৯০০ মতো শিক্ষার্থীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান এ হামলার দায় স্বীকার করে। দুপুরের আগে জঙ্গিরা যখন স্কুলে ঢুকে পড়ে, তখন স্কুল মিলনায়তনে সেনাবাহিনীর একটি দল শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। গোলাগুলি শুরু হতেই শিক্ষকরা তাদের শুয়ে পড়তে বলেন।

পরে সেনাবাহিনীর লোকজন তাদের বের করে আনে। দীর্ঘ সময়ের অভিযানে স্কুলের ওপর দিয়ে ঘন ঘন সামরিক হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়। এলাকাটি ঘিরে ফেললেও উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। ৮ ঘণ্টার অভিযানে জঙ্গিরা নিহত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে সেনা মুখপাত্র আসিম বাজওয়া বলেন, শিশুদের জিম্মি করার কোনো উদ্দেশ্যই হামলাকারীদের ছিল না। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল, নিষ্পাপ এই শিশুদের হত্যা করা এবং ঢোকার পর তারা তাই করতে শুরু করে।  পায়ে গুলিবিদ্ধ এক স্কুলছাত্র হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গিরা ঢুকেই ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি তুলে গুলি চালাতে থাকে। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই শুয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে বেঞ্চের নিচে ঢুকে পড়ে। জঙ্গিরা খুঁজে খুঁজে আহতদের দেহে গুলি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করছিল বলে এই শিশুরা জানায়, যাদের অনেকে দীর্ঘ সময় বন্ধু-সহপাঠীদের লাশের পাশে মরার ভান করে শুয়ে বেঁচে যায়।


 

 

লেবাননে আইএস তাণ্ডব

লেবানন জুড়েই আইএসের তাণ্ডব। সর্বশেষ বৈরুতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪৩ জন নিহত হন। দক্ষিণ বৈরুতের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় গত বুধবার ৪৩ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হন। লেবাননে এই ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট। শিয়া হওয়ার কারণেই এখানকার মানুষ আইএসের টার্গেট হয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুটি হামলা হয়। দক্ষিণ বৈরুতে গত বছর বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে আইএস। ২০ মিটার দূরত্বে ৫ মিনিটের ব্যবধানে বোমা দুটির বিস্ফোরণ ঘটে।  এ ছাড়া উত্তর লেবাননের শহর ত্রিপলিতে একটা মিনি বাস, যা লেবানিজ সেনা আর সাধারণ লোক নিয়ে যাচ্ছিল, সেটাকে লক্ষ্য করে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে। এই আক্রমণে ১১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯ জন সেনা সদস্য ছিলেন। গাড়িবোমা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। লেবাননের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হারমেল শহরে চারজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। বোমা হামলাটি লেবাননের হারমেলের প্রধান চত্বরের পাশে রাষ্ট্রীয় একটি ভবনের কাছে ঘটে। হারমেল শহরটি সিরিয়ার সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। ওই অঞ্চলে হিজবুল্লাহ সমর্থিত জনতার বসবাস। দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বোমা হামলার ঘটনার দুই সপ্তাহের মধ্যেই নতুন করে বোমা হামলা ঘটে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবাননের বৈরুতে বেশকিছু সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে আল-কায়েদা সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। এসব ঘটনায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

সর্বশেষ খবর