রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলা

তানভীর আহমেদ

আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলা

► আমেরিকায় এ বছর গড়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছে শিশুরা।

► প্রথম সাত মাসে ২০৪টি গণগুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ হিসেবে দেশটিতে গড়ে প্রতি মাসে ২৯টিরও বেশি গণগুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে।

► আমেরিকায় এ জাতীয় ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের প্রবণতা হ্রাসের তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও মনে করে জনপ্রিয় ওয়াশিংটন পোস্ট।

 

যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিককালে সন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ায় কোনো দেশই সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইনটাওয়ারে হামলার পর সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে নড়েচড়ে বসে গোটা বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলে আফগানিস্তান ও ইরাকে। সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার শিকড় উপড়ানোর মিশনে নেমে যুক্তরাষ্ট্র সফলতার দেখা পেলেও তাদের সামরিক অভিযানের নানাদিক নিয়ে কমবেশি প্রশ্ন উঠেছে।

সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে পড়ে আমেরিকা। বাস্তবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বিপরীত দৃশ্য কিন্তু ভিন্ন। দেশে দেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে। প্রাণ দিচ্ছে নিরীহ বেসামরিক মানুষ। সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যাতত্ত¡ নিয়ে নতুন নতুন পরিসংখ্যানে বসেছেন বিশ্লেষকরা। তখন চমকে ওঠার মতো কিছু তথ্য চোখে পড়ে তাদের। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলায় যত মানুষ মারা পড়েছে তার চেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষ মারা পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী হামলায়। খোদ যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধকর্মের মাত্রাও বেড়েছে। ২০০৩ সালের একটি পরিসংখ্যান দেখলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ অপেক্ষা আমেরিকান বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বহু বেশি। ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বন্দুকধারী আমেরিকানদের করা গুলিতে মৃতের সংখ্যা ৪ লাখেরও বেশি। যে কারণে আমেরিকার সরকার বন্দুকের লাইসেন্স পাওয়া থেকে শুরু করে বন্দুক ক্রয়ের ব্যাপারেও কড়াকড়ি আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমেরিকায় বন্দুকধারীর ছোড়া গুলিতে বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনাও উদ্বেগজনক। স্কুল, পার্ক বা জনসাধারণের চলাচলে ব্যস্ত রাস্তায় এ ধরনের অপরাধকর্মের ঘটনা ঘটছে। বন্দুকধারীদের অনেকেই আÍহত্যা করেছে। অনেকে পুলিশের গুলিতে স্পট ডেড, অনেকে ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সচেতন প্রতিটি দেশের মতো আমেরিকায় এই অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমেরিকায় বন্দুকধারীদের আক্রমণ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা বেড়েছে। মাত্র দুই দশকের ব্যবধানে বন্দুকধারীদের হামলা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে সেখানে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হামলার হুমকি তো রয়েছেই।

 

যত হামলা

>> ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯২০

নিউইয়র্ক সিটি

ঘোড়াচালিত ওয়াগন বোমায় উড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। মারা যান ৩৮ জন, মারাÍক আহত হন ৩০০ জন।

>> ১৮ মে ১৯২৭

মিসিগান

আÍঘাতী হামলাকারী। স্কুলে বোমা পুঁতে রেখে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে মারা যান ৪৬ জন, মারাÍকভাবে আহত হন ৫৮ জন।

>> ২৪ জানুয়ারি ১৯৭৫

নিউইয়র্ক সিটি

ব্যস্ত ওয়ালস্ট্রিট। সেখানে বোমা হামলা। মারা যান চারজন, রক্তাক্ত হন ৬৩ জন।

>> ১৯ এপ্রিল ১৯৯৫

ওকলাহোমা সিটি

ট্রাক বোমিংয়ের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আমেরিকা। এতে মারা যান ১৬৯ জন, মারাÍকভাবে জখম হন ৬৭৫ জন।

>> ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১

নিউইয়র্ক সিটি

টুইনটাওয়ার ও পেন্টাগনে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়, আহত হয় প্রায় ৮ হাজার ৭০০ বেসামরিক মানুষ।

>> ৫ নভেম্বর ২০০৯

টেক্সাস

উগ্রপন্থি জিহাদিদের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে সোলজার রেডিনেস সেন্টারে। মারা যান ১৩ জন, রক্তাক্ত হন আরও ৪৪ জন।

>> ৮ জানুয়ারি ২০১১

অ্যারিজোনা

রাজনৈতিক সম্মেলনে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। সুপারমার্কেট কেঁপে ওঠে। মারা যান ৬, আহত ১৩ জন।

>> ২০ জুলাই ২০১২

কলোরাডো

শহরের মুভি থিয়েটারে মুভিপ্রেমীদের ভিড়। স্থানীয় অপরাধী গুলি ছুড়তে শুরু করলে ১২ জন মারা যান। আহত হন আরও ৫৮ জন।

>> ১৫ এপ্রিল ২০১৩ ম্যাসাচুসেটস

বস্টনে ম্যারাথন। দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় সন্ত্রাসীরা। মারা যান ৩ জন। আহত হন ২৬৪ জন।

>> ৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ক্যালিফোর্নিয়া

ক্রিসমাস পার্টি ও চাকরিজীবীদের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত। হঠাৎ দুই বন্দুকধারীর গুলিতে মারা যান ১৬ জন।

সর্বশেষ খবর