বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিএনপির গলার কাঁটা জামায়াত

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

পঞ্চগড় পৌরসভায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের তিন প্রার্থীই জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে জামায়াত হবে সেখানে বিএনপির গলার কাঁটা। এ সুযোগ নিতে পারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। কিন্তু আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশও দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানান। আবার আওয়ামী লীগের শরিক জাসদেরও একজন প্রার্থী রয়েছেন। নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন জাকিয়া খাতুন। ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করছেন বর্তমান মেয়র তৌহিদুল ইসলাম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জামায়াত নেতা আবদুল খালেক। এ ছাড়া জাসদ মনোনীত প্রার্থী হলেন আবদুল মজিদ বাবুল। ভোটের মাঠে বিএনপির প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও সেখানে জামায়াত প্রার্থী দেওয়ায় কিছুটা বেকায়দায় তৌহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের গ্রুপ অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বলে জানা গেছে। তৌহিদুলের সমর্থকরা বলছেন, বিএনপির প্রার্থী  কর্মীরা নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে অতি আশাবাদী। তারা মনে করছেন, ৩০ বছর ধরে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়ে আসছেন বর্তমান মেয়র তৌহিদুল ইসলাম। তৃণমূল পর্যায়ে তার রয়েছে বিপুল জনপ্রিয়তা। কাজেই নির্বাচনে তিনিই জিতবেন এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তবে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের অনুসারী বিএনপির একটি বিপুল অংশ মাঠে কাজ করছেন না। তাদের অভিযোগ, মেয়র তৌহিদুল ইসলাম জমির উদ্দিন সরকারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছেন না। এমনকি ৪ ডিসেম্বর তার বাড়িতে প্রেস কনফারেন্স করার সময় একটিবারের জন্য জমির উদ্দিন সরকারের নাম উল্লেখ করেননি তার বক্তব্যে। ফলে বিএনপির একটি বড় অংশের ভোট তৌহিদুল ইসলাম নাও পেতে পারেন। এ ব্যাপারে বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ জানান, ‘তৌহিদুল ইসলাম বিএনপির মূল আন্দোলনের সময় অফিস দখল করে আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। পৌর নির্বাচনে তিনি সাবেক স্পিকারকে অবজ্ঞা করেছেন। কিন্তু যেহেতু তিনি বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন তাই বিএনপির একটি বড় অংশ মাঠে না থাকলেও ধানের শীষেই ভোট দেবে।’  অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ২০ দলের শরিক হলেও পঞ্চগড় পৌরসভা নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির আবদুল খালেক। জামায়াতের ভোট ছাড়াও কিছু ধর্মভীরু ভোটারের ভোট নিজের বাক্সে ভরাবেন তিনি। এ ছাড়াও জমির উদ্দিন সরকার  পন্থি  বিএনপির একটি বড় অংশের ভোটও তিনি দখল করতে পারেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন মেয়র হয়েও যেতে পারেন তিনি। একইভাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ১৪ দলে থাকলেও জেলা সভাপতি আবদুল মজিদ বাবুল মেয়র প্রার্থী। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভোট থেকে কিছু ছিটকে পড়বে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। তবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাকিয়া খাতুনকে। বিএনপির কোন্দল এবং জামায়াতের প্রার্থিতার মধ্যে সুযোগ খুঁজছেন তারা। এ ছাড়া নিজেদেরও রয়েছে বিশাল ভোটব্যাংক। নারী প্রার্থী হওয়ায় মহিলা ভোটারদের কাছে রয়েছে জাকিয়া খাতুনের জনপ্রিয়তা।  সব মিলিয়ে পঞ্চগড় পৌরসভায় লড়াই জমবে নৌকা আর ধানের শীষে।

সর্বশেষ খবর