বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

অভিশপ্ত যত শহর

আবদুল কাদের

অভিশপ্ত যত শহর

অশরীরী, ভূত কিংবা অভিশাপ মানব সমাজেরই একটি অংশ। আমরা যতই দূরে রাখতে চাই না কেন সাহিত্য, কাব্য, চিত্রশিল্প, চলচ্চিত্র, জাদুবিদ্যা সব মাধ্যমেই ভূতের অবাধ বিচরণ। স্টিফেন কিং-এর ‘সালিমের ভৌতিক গ্রাম’ আর লীলা মজুমদারের ‘অহিরীটোলার বাড়ি‘, গল্প কিন্তু ভূতকে কেন্দ্র করেই। ছেলে-বুড়ো সবাই পড়তে ভালোবাসে এসব গল্প। গোটা বিশ্বে এমনও শহর-গ্রাম রয়েছে যা কালক্রমে ভৌতিক ও অভিশপ্ত হয়ে আছে। আজও সেখানে রাত নামে ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে। এমন কিছু ভৌতিক ও অভিশপ্ত শহর-গ্রাম নিয়ে আজকের রকমারি।

 

আল জাজিরাহ আল হামরা

‘আল জাজিরাহ আল হামরা’, উত্তর আরব আমিরাতের পরিত্যক্ত গ্রাম। আরবরা এর নাম দেয় লাল দ্বীপ। ১৪০০ শতাব্দীতে গ্রামটির উদ্ভব। ১৮৩১ সালে এর পুনঃনির্মাণও হয়। ব্রিটিশ তথ্য অনুযায়ী ৩০০-এর বেশি ঘর ও ১৩টি মসজিদ নিয়ে ৪১০০ লোক বসবাস করত। ‘রাস আল খাইমাহ’ শহরের দক্ষিণের গ্রামটি এক সময় বণিকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। খুব বেশিদিন আগের নয়, ১৯৬০ সালে গ্রামটি বেশ সমৃদ্ধশালী ছিল। তখনো বিলাসী বাড়িঘর ছিল এখানে। উপকূলীয় গ্রামটিতে তখন ফার্সি অভিবাসী, পর্তুগিজ ব্যবসায়ী এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তারা দাপিয়ে বেড়াত। কারণ, এখানকার স্থানীয়রা মাছ এবং মুক্তার ব্যবসা করত। কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। ১৯৬৮ সালের পর হঠাৎ করেই মানুষশূন্য হতে থাকে। যারা থেকে যায় তারাও খুব ভয়ে দিন কাটায়। কারণ, এখানে অশরীরী আত্মার আনাগোনা বেশি। নানা রকম প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিস ঘটে। হয়তো এ কারণেই গ্রামটি শহর থেকে বিচ্ছিন্ন। একবার স্থানীয় চলচ্চিত্রনির্মাতা ফয়সাল হাশমি কিছু বন্ধুকে নিয়ে গ্রামটিতে একটি রাত কাটাতে আসেন। তাদের সঙ্গে ঘটতে থাকে নানা ভৌতিক কর্মকাণ্ড। বোঝার বাকি রইল না যে গ্রামটি ভয়ঙ্কর এবং অভিশপ্ত। সে রাতেই তারা গ্রাম ছাড়ে। আরেকবার কিছু পর্যটক ঘুরতে আসে। তারা প্রাচীন দুর্গের ছবি তুলতে গেলে তাদের সঙ্গেও ঘটতে থাকে অস্বাভাবিক ঘটনা। স্থানীয়দের ধারণা এখানে অভিশপ্ত আত্মা রয়েছে। তারা প্রায়ই বিচিত্র হাতের ছাপ দেখতে পান। তাদের ধারণা এটি আগত দর্শনার্থীদের জন্য সতর্ক সংকেত। ‘আল জাজিরা আল হামরা’ প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিসের জন্য জনপ্রিয়। অনেকে দুঃসাহসিকতা দেখাতে বেড়াতে আসেন। যদিও স্থানীয়রা তাদের বরাবরের মতোই নিরুৎসাহিত করে। তারা সতর্ক করে দেন যে, এখানে দুষ্ট জিনের উপদ্রব বেশি। বিজ্ঞানের যুগে এসবের ব্যাখ্যা চলে না। তবুও নিত্যনতুন ভৌতিক রহস্য আর নিঃস্ব হওয়া গ্রামটিকে কি অস্বীকার করা যায়?

 

বাহলা

আরব্য গল্প-উপন্যাসে অশরীরী কিংবা জিনের ছড়াছড়ি রয়েছে। বহু সত্য-মিথ্যার মিশেলে রচিত এসব গল্পে এখনো অনেকে শিউরে ওঠেন। তেমনি অভিশপ্ত ঘটনার সাক্ষী ওমানের বাহলা শহর। রাজধানী থেকে মাত্র ২০০ কি.মি. দূরত্বের শহরটিকে আরবিয়রা অভিশপ্ত নগরী বলে। জানবেই না কেন! আরব উপদ্বীপের এ মরুভূমির মরূদ্যানে নিকৃষ্টতম কাজ হরহামেশাই চলে। শহরটিকে অশরীরী, দুষ্ট আত্মা বা জিনের বাসস্থান বলা হয়। এর পেছনের ইতিহাস আরও ভয়ঙ্কর। আগে শহরটিতে মুসলিম চেহারার আদলে খারিজি সম্প্রদায়রা বসবাস করত। প্রকৃত অর্থে এরা কালোজাদুর বিদ্যা চর্চা করত।

 ইসলাম ধর্মে কালোজাদু বিদ্যা ও ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্পূর্ণ হারাম। কিন্তু খারিজিরা এ নিষেধ অমান্য করত এবং বাহলা দুর্গটি ছিল তাদের মূল কেন্দ্র। তারা কালোজাদুতে এতটাই পারদর্শী ছিল যে, কোনো বাহন ছাড়াই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যেতে পারত। মুসলমানদের ওপর তারা বিভিন্ন অত্যাচার করত। তাদের মূল দাবি ছিল সব মুসলিম তাদের অনুসরণ করবে। এতে করে যদি তাদের মৃত্যুও হয় হোক। ইতিহাসে খারিজিরাই প্রথম সন্ত্রাসী যারা জিহাদের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করত। বাহলার কালোজাদু নিয়ে বহু কল্পকথা রয়েছে। খারিজিরা পেশাদার জ্যোতিষী দিয়ে ভবিষ্যৎ গণনা করত। স্থানীয় অনেকেই প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিসের স্বীকার। কথিত আছে যে, এখানে অশরীরী আত্মারা এক রাতে শহরের বিশাল দেয়াল তৈরি করেছিল। অনেকটা মধ্যপ্রাচ্যের ‘সালেমের গ্রামে’র মতো ঘটনা। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, ওমানের মতো ইসলামী রাষ্ট্রে বাহলা এখনো টিকে আছে কি করে! বাহলা এখনো কালোজাদুর অভিশাপে জর্জরিত। এখনো এখানে প্রতিটি পদক্ষেপ সাবধানে ফেলতে হয়। কারণ, এসব অশরীরী কখন যে কার দুর্ভাগ্যের কারণ হয় বলা মুশকিল।

 

চিনকো সালেতাস

আর্জেন্টিনার চিনকো সালেতাসের একটি খারাপ খ্যাতি রয়েছে। প্রকৃতি এখানে যতটা না নীরব তার চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর। শহরের অদূরে গভীরতম রিও নিগ্রো অঞ্চলে এর অবস্থান। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রচুর গাছগাছালিপ্রবণ অঞ্চল হওয়াতে প্রাকৃতিকভাবেই আলো খুব কম। ‘চিনকো সান্তোসে’র আরেক নাম ‘ফাইভ ওয়াটারফল, কিন্তু স্থানীয়রা ‘জাদুকরের শহর’ বলে থাকে। স্থানীয় বাজো নিগ্রোর বহু মানুষ কালোজাদুর প্রতি দারুণভাবে আকৃষ্ট।

কুখ্যাত সব জাদুকর এখানে জাদুবিদ্যা চর্চা করেন। এখানে প্রতিটি পরতে পরতে মৃত্যু তাড়া করে। কারণ, ভয়ঙ্কর সব ডাইনি, পিশাচ আর অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়ায়। চিনকো সান্তোস নিয়ে ভয়ঙ্কর কিছু গল্প কথিত আছে। এখানকার গোরস্থানটি বহু ঘটনার রাজসাক্ষী। রাতে গোরস্থানটি ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। একবার কবরস্থানটির সংস্কারের সময় শ্রমিকরা একটি ১২ বছরের ফুটফুটে মেয়েকে খুঁজে পায়।

তবে, শ্রমিকদের পিলে চমকে ওঠে। ওঠারই কথা; কারণ, মেয়েটি তো ৭০ বছর আগে মারা গিয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, স্থানীয়দের মধ্যে কুসংস্কার রটে যে, মেয়েটিকে এক জাদুকর শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাদু দেখানোর জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছিল। অনেকে আবার মেয়েটির আত্মাকে ঘুর ঘুর করতে দেখেছে।

ঘটনার সত্যতা যাই হোক না কেন প্রশ্ন হলো, বহু বছর আগে মারা যাওয়া মেয়ের শরীর এত তাজা থাকল কী করে? তাহলে সদ্য দেখা মেয়েটি কি মানুষ না অন্য কিছু? এটা ছাড়াও প্রেল্লিগ্রিনির আরেক ভৌতিক ঘটনা রয়েছে যা গোটা শহরে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। একবার স্থানীয়রা লেকের পানিতে শিশুর লাশ পায়। তাদের ধারণা, ডাইনিরা শিশুটিকে লেকের পানিতে চুবিয়ে মেরেছিল। এরপর থেকে রাতে কেউ এ রাস্তা দিয়ে গেলেই শিশুটির আর্তনাদ শুনতে পায়। অনেকেই চিৎকারের উৎস খুঁজতে গিয়ে নিরাস হয়ে ফেরেন।

 

কুলধারা

১৯ শতকের ঘটনা, রাজস্থান প্রদেশের কুলধারা গ্রামের বাসিন্দারা হঠাৎ করেই গ্রাম ছাড়ে। এরপর আর কখনই তারা গ্রামে পা মাড়ায়নি। বর্তমানে এটি মৃত গ্রাম এবং এখানকার সব বাড়িঘর খালি পড়ে আছে। স্থানীয় তত্ত্ব অনুযায়ী, এখানে কেউ থাকেন না। থাকার কথাও নয়। কথিত আছে, অভিশপ্ত গ্রামটিতে মৃত্যুকূপ। এর পেছনেও একটি ইতিহাস রয়েছে। ৩০০ বছর আগে নাকি এখানে পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা থাকত। তারা ব্যবসায় পারদর্শী ছিল। আশপাশের ৮৪ গ্রামে তাদের সুনাম ছিল। স্থানীয় শাসক সালিম সিং ছিলেন জয়সালেমের রাজা। তিনি অত্যাচারী শাসক ছিলেন। একদিন গ্রাম প্রধানের মেয়েকে দেখে তার পছন্দ হয়। তার রূপে মুগ্ধ হয়ে বিয়ে করতে চান। কে চাইবে এমন অত্যাচারীর হাতে মেয়েকে তুলে দিতে! কিন্তু সালিম সিং মানতে নারাজ। তিনি গ্রামবাসীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এরপর হঠাৎ করে রাখিপূর্ণিমার রাতে সবাই গ্রাম ছাড়ে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এরপর তাদের আর কোথাও সন্ধান পাওয়া গেল না। তাহলে কি সবাই সালিমের ক্রোধের শিকার? হয়তো এর কোনো উত্তর নেই! গ্রামটি ভৌতিক কিনা, সত্যতা উদঘাটনের জন্য ২০১৩ সালে দিল্লির প্যারানরমাল সোসাইটি গবেষণা চালায়। সংগঠনটির ১৮ সদস্য ১২ ঘণ্টার তদন্ত করে বিভিন্ন প্রমাণ বের করে। ভয়েজ রেকর্ড ও ভিডিও রেকর্ড করেছিল তারা। এক রাতের তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর সব তথ্য। এখানকার আবহাওয়া হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা কিংবা অত্যধিক গরম হয়ে যায়। ভয়ঙ্কর সব চিৎকার, শিশুদের আহাজারি, অদ্ভুত ছায়া ঘুরে বেড়ায় কুলধারা পরতে পরতে। রাতে কে বা কারা দৌড়ে বেড়ায়। গাড়িতে দেখা যায় শিশুর হাতের ছাপ। ১৯৯৮ সালে দুই বিদেশি পরিত্যক্ত গ্রামটি পর্যবেক্ষণে আসে। পুলিশ তাদের ব্যাগে সোনা, রুপার বিভিন্ন সামগ্রী পায়। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তারা মাটি খুঁড়ে এসব পেয়েছে। ঘটনা যাই হোক না কেন, পরিত্যক্ত গ্রামটি রাজস্থানের অভিশপ্ত নগরী যেখানে অতৃপ্ত আত্মা এখনো ঘুরে বেড়ায়।

 

ডার্গাভস

ডার্গাভের রহস্যের সমাধান হয়তো কখনই হবে না। মধ্যযুগীয় ডার্গাভসকে ‘মৃত শহর’ বলা হয়। রহস্যেঘেরা গ্রামটি রাশিয়ার উত্তর ওসেটিয়া অ্যালানিয়ায় অবস্থিত। ডার্গাভস নামটির সঙ্গে গ্রামটির কোনো মিল নেই। মূলত এটি একটি মধ্যযুগীয় পাহাড়ি গোরস্থান। যার পুরোটাই সমাধিতে ভরা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোনো এক সুন্দর গ্রাম যার ঘরগুলোও বেশ সুন্দর। সে সময় ওসেটিয়ায় আদিবাসীরা বসবাস করত। তাদের পরিবারের সদস্যদের সমাধির কথা চিন্তা করে এসব সমাধিগৃহ তৈরি করা হতো। সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের সমাহিত করা হতো এখানে। অনেক কাল্পনিক এবং পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে গ্রামটিকে নিয়ে। দেখতে গ্রামের মতো মনে হলেও কাছে গেলে গা হিম হয়ে যাবে। নির্জন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো ছিটানো মৃত মানুষের খুলি আর হাড়গোর দেখলে ভয়ে জড়সড় না হয়ে উপায় নেই। ধারণা করা হয়, গোরস্থানটি ১৬ শতকের। এখানে ১০০টি পাথরের সমাধি রয়েছে। সমাধির ভিতরের মৃতদেহকে নৌকার মতো কাঠের কাঠামো দিয়ে সমাহিত করা হতো। প্রায় সব সমাধিতেই এমন নৌকার টুকরা পাওয়া যায়। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, গোটা ওসেটিয়ার ককেশাস পর্বত ও তার আশপাশে কোনো নদী নেই। তাহলে এসব নৌকার টুকরোর উৎস কী? ধারণা করা হয়, সম্ভবত গ্রামবাসীরা নৌকাসহ সমাহিত করত। কারণ, তাদের ধারণা ছিল পরপারে নৌকাটি তরী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। তারা এও বিশ্বাস করত যে বিদেহী আত্মার স্বর্গ লাভে নদী পার হতে হয়। অনেকটা ‘প্রাচীন মিসর’ এবং ‘মেসোপটেমিয়ার পরকাল’ গল্পের মতো। আরেকটি মজার বিষয় হলো প্রতিটি সমাধির সামনে কূপ ও কিছু কয়েন মেলে। প্রিয়জন মারা গেলে কয়েনগুলো কূপে ফেলা হতো। যদি কয়েনটি পাথরে পড়ে শব্দ করত, মৃতদেহের আত্মা স্বর্গে পৌঁছে গেছে বলে মনে করা হতো। অতীতে গোরস্থানটিকে মানুষ অনেক ভয় পেত। এখানে জীবিত আসতে চাইত না। অতীতের মতো এখনো ডার্গাভসে কোনো মানুষের বিচরণ নেই। হালফিল পাহাড়টি একটি নির্জন গোরস্থান।

 

বারো হ্যাক

মার্কিন তথ্যানুযায়ী ১৭৮০ সালে ওয়ালেশ পরিবারের দম্পতি রোড আইল্যান্ড থেকে বারো হ্যাক গ্রামটি আবিষ্কার করেন। এরও প্রায় ১১০ বছর পর ১৮৯০ সালে গ্রামটি সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে যায়। অভিশপ্ত গ্রামটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। তথাকথিত প্রমফেট নামক স্থানটি ‘নিরিবিলি মোড়’ নামে পরিচিত। নামটি যদিও অদ্ভুত। বর্তমানে সেখানে কিছু ভাঙা দেয়াল, ভিম এবং কয়েকটি কবর ছাড়া কিছুই নেই।

এ গ্রামটি নিয়ে কিছু প্যারানরমাল ঘটনা প্রচলিত রয়েছে। গ্রামটি সবার কাছেই ভৌতিক। যার জন্য এর নামও দেওয়া হয় ‘ভুতুড়ে কণ্ঠের গ্রাম’। মাঝে মাঝে এখানে বিকট চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যায়। যদিও এমন নির্জন জঙ্গলের মতো শত বছরের পুরনো স্থানে কেউ থাকে না। তাহলে এখানে কী সত্যিই অশরীরী ভূত-প্রেত রয়েছে? বহু দর্শনার্থী এখানে ঘুরতে এসে রিপোর্ট করেন যে, এখানে অদ্ভুত সব বিদেহী আর্তনাদ শুনতে পান। শহরটিতে আগে যারা থাকতেন তারাও একই কথা বলেন।

অনেকে অভিযোগ করেন এখানে ঘোড়ার খুরের শব্দ, কুকুরের কান্না এমনকি শূকরের ডাক শুনতে পান। অনেক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, তারা কবরস্থানের কাছাকাছি মুণ্ডুও দেখতে পেয়েছেন। অনেকে আবার ছোট বাচ্চার প্রেতাত্মাও দেখেন। ১৯৭১ সালে এক প্যারানরমাল বিশেষজ্ঞ পল ইনো রিপোর্ট করেন, তিনি বারো হ্যাক কবরস্থানে গোঙানোর শব্দ পান।

পরে তিনি আবিষ্কার করেন একটি কাটা মাথা কান্না করছে যার চোখ দিয়ে অজস্রধারায় পানি ঝরছে। যদিও গ্রামটি অনেক আগে থেকেই পরিত্যক্ত হয়েছে। কারণ, জায়গাটি বসবাসের অযোগ্য। যারা এখানে ছিল তারা অনেক আগেই দেশান্তরী হয়েছেন। অনেকে আবার ব্যক্তিগতভাবে তদন্ত করে দেখেন জায়গাটি কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি কিনা। তবে যাই হোক না কেন, অ্যাডভেঞ্চার আর ভয়ঙ্কর প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিসের জন্য বারো হ্যাক গ্রামটি বেশ জনপ্রিয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর