শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিশ্বসেরা নারী ব্যবসায়ী

তানিয়া তুষ্টি

বিশ্বসেরা নারী ব্যবসায়ী

বার্ষিক আয় ৪৩০ মিলিয়ন ডলার

সবচেয়ে বেশি আয়ের সিইওদের নিয়ে বাড়তি কৌতূহল রয়েছে সবার। বিশ্বের সেরা সব প্রতিষ্ঠানের সিইওরা আকাশছোঁয়া বেতন পেয়ে থাকেন। নারী সিইও হিসেবে এগিয়ে আছেন মেরিসা মেয়ার। বিশ্বখ্যাত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিসা মেয়ার। এর আগে তিনি গুগলের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুখপাত্র হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। ফরচুন পত্রিকার বিবেচনায় ২০১২ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাবান নারী ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বের তিনি ১৪তম হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। বিশ্বখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে তিনি ছিলেন প্রথম নারী প্রকৌশলী। দীর্ঘদিন ধরেই প্রযুক্তিবিশ্বে প্রতিযোগিতায় নানাভাবে পিছিয়ে পড়ছিল ইয়াহু। নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর ইয়াহুকে লোকসান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। তবে ইয়াহুর অবস্থা আবার পতনের মুখে। কিন্তু শুরুর দিকে ভালোই সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। এক ধাপে ইয়াহুর শেয়ারের দাম বেড়েছিল ২৫ শতাংশ। তার কর্মদক্ষতার প্রশংসা করেন সবাই। বর্তমানে তার বার্ষিক আয় ৪৩০ মিলিয়ন ডলার।

 

আইরেন রোজেনফেল্ড [ সিইও, মোন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল]

স্ন্যাকস ও চকোলেট উৎপাদক জায়ান্ট করপোরেশন মোন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান ও সিইও আইরিন আইরেন রোজেনফেল্ড। ৬০ বছর বয়সী মার্কিন এই নাগরিক নিউইয়র্কে ওয়েস্টবেরি রাজ্যে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি মার্কেটিং এবং পরিসংখ্যান বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। অত্যন্ত মেধাবী রোজেনফেল্ড গত ত্রিশ বছর ধরে ফুড অ্যান্ড বেভারেজ শিল্পের সঙ্গে আছেন।

বিশ্বের দ্ব্ব্বিতীয় বৃহত্তম ফুড কোম্পানি ক্রাফটস ফুডসের চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে আইরিন রোজেনফেল্ড তার কর্মদক্ষতা নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছেন। ২০০৬ সালে রোজেনফেল্ড ক্রাফট ফুডে জয়েন করেছিলেন। সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরিতে তিনি বেশি জোর দিতেন।  তার নেতৃত্বে আসার পর কোম্পানিটি ধীরে ধীরে নিজের আয়তন বাড়াতে শুরু করে। ২০০৯ সালে তিনি ক্রাফটকে পরিবর্তন করে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপে ডো জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়ালে পরিণত করেন। বর্তমানে  রোজেনফেল্ডের বার্ষিক বেতন ১৯.৩ মিলিয়ন ডলার।

বছরে দশ বিলিয়ন পাউন্ড ক্যাডবেরি উৎপাদন করে বিখ্যাত ব্রিটিশ ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছেন। কর্মক্ষমতার গুণে আইরিন ২০০৮ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ৫০ ওমেন টু ওয়াচে ষষ্ঠ হন। ২০১১ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের ‘মোস্ট পাওয়ারফুল ওমেন’ লিস্টে দশম হন।  রোজেন ফেল্ড সিকাগোর ইকোনমিক  ক্লাবেরও সদস্য। এছাড়াও তিনি জর্জ ম্যানুফেকচারস অ্যাসোসিয়েশন এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ   ৯৬ মিলিয়ন ডলার।

 

ক্যারল মাইরোইটজ [ প্রেসিডেন্ট ও সিইও, টিজেএক্স কোম্পানিজ]

ক্যারল এম মাইরোইটজ রিটেইল কোম্পানি টিজেএক্স কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও। বর্তমানে কোম্পানিটি আমেরিকার নেতৃস্থানীয় একটি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। ক্যারলের বার্ষিক বেতন ১৭.৪ মিলিয়ন ডলার। ২০১৫ সালে তিনি ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় ৭৬তম ক্ষমতাধর নারী হন। এছাড়া ফরচুনের বিবেচনায় ২০১৪ সালে পৃথিবীর ১২তম ক্ষমতাধর নারী হিসেবে বিবেচিত হন।

ক্যারল সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেছেন মার্কেটিং এবং ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। ২০০১ সালে ক্যারল এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে টিজেএক্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। একই সঙ্গে কোম্পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ মারম্যাক্সের প্রেসিডেন্টও হন। তারপর ২০০৪ সালে তিনি সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। এরপর ২০০৫ সালে তিনি টিজেএক্সের উপদেষ্টা হন। যে কোনো জিনিসের প্রয়োজনে আপনাকে সাহায্য করবে ক্যারল এম মাইরোইটজের টিজেএক্স। সিইও হিসেবে তিনি কোম্পানিকে এমনভাবে দাঁড় করিয়েছেন যেখানে স্বল্প খরচে একজন ক্রেতা পোশাক থেকে শুরু করে ঘরের যে কোনো জিনিস কিনতে পারবেন।

ক্যারল ২০০৭ সালে ২১ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে টিজেএক্স ম্যাক্সকে রিটেইল ব্র্যান্ডে পরিণত করেন। ক্যারল প্রথমে কাজ শুরু করেন সাকসের একজন অ্যাসিসট্যান্ট বায়ার হিসেবে। কিন্তু তিনি সেখান থেকে দেখিয়েছেন, কেউ কর্মঠ হলে কীভাবে তা মানুষকে ওপরে উঠতে সিঁড়ি হিসেবে কাজ করে। সিএনএনের করা তালিকায় বিশ্বের ২৬তম ক্ষমতাধর নারী ব্যবসায়ী তিনি।

 

ইন্দ্রা নুয়ি [ সিইও, পেপসিকো]

 

ইন্দ্রা নুয়ি। ইউরোপের করপোরেটের দুনিয়া কাঁপিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শীর্ষ আলোচনায় থাকা এক কর্মময় নারীর নাম। ৫১ বছর বয়সে মার্কিন বহুজাতিক পেপসির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন ইন্দ্রা নুয়ি। বর্তমানে সংস্থাটির সিইও তিনি। ভারতের গর্ব ইন্দ্রা নুয়ি পুরো বিশ্বের কর্পোরেট দুনিয়ায় নারীদের যোগ্যতার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

মার্কিন করপোরেট দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ৪১তম স্থানে আছে। সেখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে থাকা এই নারীর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। ইন্দ্রাও স্বপ্ন দেখিয়েছেন সংস্থাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার। ১৯৯৪ সালে পেপসিতে যোগদানের পর ধাপে ধাপে যোগ্যতা আর দক্ষতা প্রমাণ করেই মাত্র দেড় যুগের ব্যবধানে একেবারে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে উঠে আসেন তিনি। বর্তমানে তার বার্ষিক বেতন ১৬.২ মিলিয়ন ডলার।

 

মেরি ব্যারা [ সিইও, জেনারেল মোটরস]

১৯০৮ সালে উইলিয়াম সি ডিউরেন্ট জেনারেল  মোটরস নামে গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য ছোট পরিসরের এই গাড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তখন থেকেই মানসম্পন্ন কর্মী তৈরিতে তারা অতুলনীয়। বিশেষ করে নারী কর্মীর যোগ্যতার মূল্যায়নে জেনারেল মোটরস এগিয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় অটোমোবাইল শিল্পে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম সিইও হিসেবে মেরি ব্যারাকে ২০১৪ সালের গোড়ার দিকে নিয়োগ দেয়া হয়।

মেরি ব্যারা পারিবারিক পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেও নিজের কাজে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ১৯৮০ সালে জেনারেল মোটরসে মেরি ব্যারা শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ শুরু করেন। পদের উন্নতিতে বোর্ড অব ডিরেক্টর, বিশ্বায়িত পণ্যমান উন্নয়ন, ক্রয় ও সরবরাহ, ব্যবস্থাপনা, নমুনা-নকশা, প্রকৌশলী, পণ্যমান ও নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোর সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন এবং শেষ ধাপে জেনারেল মোটরস বিজ্ঞ হিসেবে সিইও পদে মেরি ব্যারাকে নির্বাচিত করা হয়।

 

আরজুলা এম বার্নস [ সিইও, জেরক্স]

আরজুলা এম বার্নস জেরক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বিশ্বসেরা নারী ব্যবসায়ীদের তালিকায় ২৭ নম্বরে আছেন তিনি। প্রসেস অ্যান্ড ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট শিল্পের অধীনে কালার প্রিন্টার ও কপিয়ার তৈরির প্রতিষ্ঠান জেরক্সে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন ২০০৯ সাল থেকে। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের বড় আইটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার নিয়ে সফল হন। যন্ত্রপ্রকৌশল শাখায় কাজের মধ্য দিয়ে বার্নস জেরক্সে যোগ দেন ১৯৮০ সালে। তার নিষ্ঠা ও যোগ্যতার কারণে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পান তিনি। বর্তমানে তিনি বার্ষিক বেতন পান ১৩.২ মিলিয়ন ডলার। বার্নসের উদ্যোগে কোম্পানিটি কম্পিউটার সার্ভিসে লক্ষণীয়ভাবে উন্নতি করে। তার কঠোর পরিশ্রমে জেরক্স কোম্পানিটি ভালো একটি অবস্থানে দাঁড়ায় এবং লাভবান কোম্পানিতে পরিণত হয়। এর আগে জেরক্সের নির্বাহী সহকারী হিসেবে কয়েক বছর কাজ করেন। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান এক্সপ্রেস করপোরেশন, বোস্টন সায়েন্টিফিক করপোরেশনসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

 

মেলিন্ডা গেটস [ কো-চেয়ার, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন]

 

বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বস-এর ২০১৩ ও ২০১৪ সালের ১০০ প্রভাবশালী নারীর মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছেন মেলিন্ডা গেটস। তিনি বিল গেটসের স্ত্রী।

১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করা তার পুরো নাম মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। ১৯৯৪ সালে বিল গেটসের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই মাইক্রোসফটে পেশাজীবন শুরু করেন মেলিন্ডা। এমএস পাবলিশার, এমএস বব, এনকার্টা ও এক্সপিডিয়া প্রকল্পে কাজ করেছেন। তিনি মাইক্রোসফট থেকে ইনফরমেশন প্রোডাক্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে অবসর নেন। মানবতার সেবায় ১৯৯৮ সালে তিনি গড়ে তোলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনে তিনি কো-চেয়ার হিসেবে কাজ করছেন। এ পর্যন্ত তিনি ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছেন।

 

ভার্জিনিয়া রোমেট্টি[ চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট ও সিইও, আইবিএম]

নারী ব্যবসায়ীদের কাছে সবচেয়ে অনুপ্রেরণীয় একজন রোমেট্টি। তার পুরো নাম ভার্জিনিয়া জিনি এম. রোমেট্টি। কম্পিউটিং জগতের সেরা প্রতিষ্ঠান আইবিএমের সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে আছে। আইবিএমের চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট এবং সিইও রোমেট্টি।  তিনি প্রথম কোনো নারী যিনি এই কোম্পানিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আইবিএমকে শুধু কম্পিউটার প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে টেকনোলজি জায়ান্ট কোম্পানিতে পরিণত করার পেছনে তার রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। আইবিএমের ১০৩ বছরের ইতিহাসে জিনি রোমেট্টি হচ্ছেন নবম সিইও। বিশ্বজুড়ে যে কয়জন নারী ক্ষমতার চূড়ায় আসীন, তাদের মধ্যে করপোরেট দুনিয়ায় সবচেয়ে উচ্চারিত নামটি ৫৭ বছর বয়সী জিনি রোমেট্টি। ১৯৮২ সালে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১০ বছরের মাথায় প্রতিষ্ঠানটির কনসাল্টিং গ্রুপে যোগ দেন। তার হাত ধরেই এগিয়ে চলছে আইবিএম।

 

ম্যাগ হুইটম্যান [ সিইও, এইচপি]

হুইটম্যান ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত অনলাইন নিলাম সাইট ইবের সিইও ছিলেন। তার সময়েই ইবে মাত্র ৩০ জনের কোম্পানি থেকে বেড়ে ১৫০০০ কর্মীর প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয় এবং বার্ষিক আয় ৪০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে ৮০০  কোটি ডলারে পৌঁছায়...

 

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এইচপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাগ হুইটম্যান। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনের সিইওদের তালিকাতেও তিনি আছেন। এছাড়া ক্ষমতাধর নারী ব্যবসায়ী হিসেবেও তার নাম চলে আসে। তিনি হিউলেড প্যাকার্ড (এইচপি) বোর্ডে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন। তিনি ২০১১ সালে এইচপির সিইও হন। প্রতিবছর তার আয় এক কোটি ৭৬ লাখ ৪৩ হাজার ২৫০ মার্কিন ডলার প্রায়। ১৯৮৯ সালে হুইটম্যান ওয়ার্ল্ড ডিজনি কেম্পানির স্ট্রাটিজিক প্লানিং ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্ট্রাইড রাইট, ফ্লোরিস্টস, ট্রান্সওয়ার্ল্ড ডেলিভারি, হাসব্রো, ইবেইতে পরিচালনা পরিষদে কাজ করেন।  হুইটম্যান ১৯৫৬ সালের ৪ আগস্ট নিউ ইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হার্বারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৭৭ সালে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি সিনসিনাটিতে প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের ব্র্যান্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। হুইটম্যান ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত অনলাইন নিলাম সাইট ইবের সিইও ছিলেন। তার সময়েই ইবে মাত্র ৩০ জনের কোম্পানি থেকে বেড়ে ১৫০০০ কর্মীর প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয় এবং বার্ষিক আয় ৪০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে ৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। এইচপিকে কম্পিউটার ব্যবসা  থেকে সরিয়ে সফটওয়্যার ব্যবসায় নিতে চেয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সিইও লিও অ্যাপোথেকার। তার সেই পরিকল্পনা পছন্দ হয়নি এইচপি কর্তৃপক্ষের। তাই লিও অ্যাপোথেকারকে ছাঁটাই করা হয়েছিল। অবশ্য, এইচপি ছাড়ার সময় লিও অ্যাপোথেকার তার পাওনাদি বুঝে নিয়ে গেছেন। তিনি মোট ১ কোটি ডলার নগদ নিয়েছেন এইচপি থেকে। উল্লেখ্য, প্রযুক্তি জগতে এর আগেও বার্ষিক মাত্র ১ ডলার বেতন নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। টেক জায়ান্ট অ্যাপলের সাবেক সিইও স্টিভ জবসেরও বার্ষিক বেতন ছিল মাত্র ১ ডলার।

 

অন্যরকম

ধনী কিন্তু কৃপণ!

বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারী হিসেবে পরিচিত হেট্টি গ্রিন। তিনি ছিলেন আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের বাসিন্দা। এই নারী পেশায় ছিলেন একজন সফল রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ী। ১৮৩৫ সালে জন্ম নেওয়া এই নারী ব্যবসায়ী ১৯১৬ সালে মৃত্যুর সময় ব্যাংকে ৯৫ মিলিয়ন ডলার রেখে যান। হেট্টি এতটাই কৃপণ ছিলেন যে শীতের সময় গরম পানি পর্যন্ত ব্যবহার করতেন না। প্রতিদিন এক ধরনের ঠাণ্ডা পুডিং খেয়ে ব্যয় করতেন মাত্র ১৫ সেন্ট। একেবারে জরাজীর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তার একমাত্র কালো পোশাকটি কখনও পরিবর্তন করতেন না। পানি খরচ হবে বলে হাত ধুতেন খুবই কম। হেট্টি সাবান খরচ বাঁচানোর জন্য শুধু পোশাক অতিরিক্ত ময়লা অংশটুকু ধুয়ে নিতেন। এক দুর্ঘটনায় তার ছেলের পা ভেঙে যায়। কিন্তু দ্রুত চিকিৎসা না করে কম খরচের হাসপাতাল খোঁজায় বেশি সময় নষ্ট করেন। এত সময় পার হয় যে তার পাটি অকেজো হয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর