রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
জাস্টিন ট্রুডো

হ্যান্ডসাম প্রাইম মিনিস্টার

তানভীর আহমেদ

হ্যান্ডসাম প্রাইম মিনিস্টার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটু অদ্ভুত কায়দায় হ্যান্ডশেক বা করমর্দন করে থাকেন। শুরুতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে অন্যের হাতটি মুঠোবন্দী করেন। শক্ত করে চেপে ধরে হঠাৎই নিজের দিকে টান মেরে বসেন তিনি। এতে অনেকেই শরীরের ভারসাম্য হারাতে বসেন প্রায়। জাপানের প্রেসিডেন্টসহ বিশ্বনেতাদের অনেকেই ট্রাম্পের এই আধিপত্য দেখানোর শরীরী কৌশলে নাকাল হয়েছেন। তবে কানাডার তরুণ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে সুবিধা করতে পারেননি ট্রাম্প। বরং ট্রুডোই চমকে দিয়েছেন ট্রাম্পকে। ট্রাম্পের বাড়ানো হাতকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে, ছন্দে ছন্দে হ্যান্ডশেক করেন তিনি। করমর্দন শেষে ট্রাম্পের চেহারাই বলে দিচ্ছিল— সব তীরে শিকার মিলে না। হ্যান্ডশেক গেমে ট্রুডোই বিশ্বকে দেখালেন, কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে হারাতে হয়।

 

হ্যান্ডশেকেই কাবু ট্রাম্প

জাস্টিন ট্রুডোর অনেক বিশেষণ রয়েছে। ‘হ্যান্ডসাম’, ‘মোস্ট অ্যাট্র্যাকটিভ’, ‘ফ্যাশনেবল’— প্রাইম মিনিস্টার। সুদর্শন, হাস্যোজ্জ্বল, সুবক্তা হিসেবেই নয়, আলোচনায় এসেছেন সিরিয়া ও ইরাক থেকে কানাডীয় যুদ্ধবিমান প্রত্যাহার, সিরিয়া ও তুরস্কের শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান করে। তারুণ্যের উচ্ছ্বাস তাকে করেছে সবার থেকে আলাদা। কখনো নেচে, কখনো যোগব্যায়াম করে, কখনো বক্সিং ম্যাচে নেমে নজর কেড়েছেন তিনি। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছেন নয় বছর পর কানাডায় কনজারভেটিভদের হারিয়ে লিবারেল পার্টিকে ক্ষমতায় এনে। তার বাবা পিয়েরে ট্রুডোও ছিলেন কানাডার প্রেসিডেন্ট। বাবার দেখানো পথে হেঁটে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে জাস্টিন ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

 

শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে

বাপ কা ব্যাটা

পিয়েরে ট্রুডো ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তার পুত্রসন্তানের বয়স তখন চার মাস। অটোয়াতে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। সফরকালে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় রিচার্ড নিক্সনের। পিয়েরে ট্রুডোর কোলে থাকা তার শিশুটিকে দেখে প্রেসিডেন্ট নিক্সন মজা করে বলেন, এই শিশুটি একদিন কানাডার  প্রধানমন্ত্রী হবে। মজার ছলে বলা সেই ভবিষ্যদ্বাণী কিন্তু সত্যি হয়েছে! ৪৩ বছর পর সেই শিশুটিই হলো কানাডার  প্রধানমন্ত্রী। পিয়েরে ট্রুডোর সন্তান জাস্টিন ট্রুডো মাত্র ৪৩ বছর বয়সে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনিই হলেন কানাডার ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী যার বাবাও ছিলেন একজন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারকে বিপুল ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হন লিবারেল পার্টির নেতা ট্রুডো। প্রায় নয় বছর পর কানাডায় কনজারভেটিভদের হারিয়ে বিজয় লাভ করে দেশটির লিবারেল পার্টি। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে উঠলেও তিনি রাজনীতি শুরু করেন ২০০৮ সালে। এর আগে এই তরুণ নানা পেশায় জড়িয়েছেন। শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তবে সময়ের প্রয়োজনেই নামেন রাজনীতিতে। খুব অল্প সময়েই দলের শীর্ষ নেতা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দেখিয়ে দেন— ‘বাপ কা ব্যাটা’ তিনি। তবে পিতার উত্তরাধিকারী হিসেবে তিনি  প্রধানমন্ত্রী হননি বা দলেরও   প্রধান হননি। নিজ যোগ্যতা বলেই তিনি হেঁটেছেন এতটা পথ।

 

সবার চেয়ে আলাদা

৪৩ বছর বয়সে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার সবচেয়ে কম বয়স্ক প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় তিনি রয়েছেন দুই নম্বরে। কিন্তু হাস্যোজ্জ্বল, খোলা মনের ও চটপটে তারুণ্যেমাখা প্রধানমন্ত্রীর কথা এলে তিনি এক নম্বরে। রাজনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রীর কথা উঠলে আমরা ভেবেই নেই ব্যক্তিটি রাশভারী। গম্ভীর মুখে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বহর নিয়ে সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবেন তিনি। না, সে ভাবনায় ছেদ ফেলেছেন জাস্টিন ট্রুডো। রাস্তায় নেচে গেয়ে ভক্তদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগিতেই তিনি বরং  স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ফেসবুক, টুইটারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় তার নাচ। ভারতীয় উৎসব সংগীত ‘হাদিপ্পা’-এর সঙ্গে তার নাচে কোটি কোটি মানুষ আনন্দ পেয়েছে। কোর্তা-পায়জামা পরে এ ধরনের নাচ নতুন নয় তার জন্য। এর আগে নির্বাচনী প্রচারণাতেও তাকে রাস্তায় নাচতে দেখা গেছে। টরেন্টো গিয়ে চীনা নববর্ষ উদযাপনেও সিংহ পুতুলের সঙ্গে তিনি নেচে গেয়ে আনন্দ করেন। রেগিনা মোসাইক কালচার ফেস্টিভ্যালেও স্টেজ মাতিয়েছেন তিনি। শার্ট-প্যান্ট পরেই দর্শকদের আনন্দ উল্লাসে নেচে শামিল হন তিনি। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে তার ভালোলাগার গল্প এখন আর কারোই অজানা নেই। ত্রিনিদাদে গিয়ে ভারতীয় উৎসব সংগীতে নেচেছিলেন তিনি। তার উদারমনের এই শারীরিক প্রকাশই তাকে সাধারণের কাছে আলোচনায় এনেছে। অন্য প্রধানমন্ত্রীদের মতো বড়সড় নিরাপত্তা বহর নিয়ে ছোটেন না তিনি। তার পরিবারের অতীত ঘাঁটলে জানা যাবে তিনি বেড়েই উঠেছেন বেশ রাজনৈতিক পরিবেশে। তার দাদা ছিলেন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের একজন। তার নানা ছিলেন এমপি এবং মন্ত্রী। তার বাবা ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তার মা ছিলেন অভিনেত্রী, জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক। তার স্ত্রী সোফিয়াও একজন খ্যাতনামা মডেল, উপস্থাপিকা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে জাস্টিন ট্রুডো নানা পেশায় জড়িয়েছেন। বরফে স্কি করার স্নো-বোর্ডিং খেলায় তিনি পেশাদার কোচ ছিলেন। নাইটক্লাবের গেটে দারোয়ান হিসেবেও কাজ করেছেন। বরফে ছোটার ‘র‌্যাফটিং গাইড’ও ছিলেন তিনি। এ ছাড়া অভিনেতা ও ক্যাম্প কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছে তার সুনাম। করেছেন শিক্ষকতা। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে অল্পবিস্তর গাঁজাও টেনেছেন— সহজ স্বীকারোক্তি তার। এখন সেসব ছেড়েছেন পুরোপুরি। ক্ষমতার মালিক হয়ে গেলেই যে নেতারা বদলে যান— সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছেন তিনি। বরং সব শ্রেণির মানুষের মনই জয় করে নিয়েছেন। ধর্ম, জাতি, ভাষা ও শ্রেণির বিভেদ ভুলে সবাইকে কাছে টেনে নিয়েছেন, প্রাপ্য সম্মান দিয়েছেন বলেই তিনি সবার চেয়ে আলাদা। নির্বাচিত হওয়ার পর সিরিয়া ও তুরস্কের শরণার্থীদের কানাডায় আশ্রয় দিয়েছেন। মধ্যবিত্তের করের বোঝা কমিয়ে বাড়িয়েছেন ধনীদের। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় এনেছেন স্বচ্ছতা  ও জবাবদিহিতা। বৃদ্ধদের পেনশন প্ল্যান বর্ধিত করেছেন। বাজেটে অবকাঠামো উন্নয়নে বিশাল অর্থ অনুমোদন করেছেন।

 

বাহুতে ট্যাটু করেন যোগব্যায়াম

কানাডার নাগরিকত্ব নিতে এসে শান্তিতে নোবেলজয়ী কিশোরী মালালা বক্তব্য রাখেন কানাডার পার্লামেন্টে। মালালা বলেন, মানুষ সব সময় বলে, তিনি (ট্রুডো) এখনো কতটা তরুণ! কানাডার ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় তরুণ প্রধানমন্ত্রী। তিনি যোগব্যায়াম করেন। তার গায়ে ট্যাটু আঁকা।’ এসব কথা বলামাত্রই উপস্থিত সবাই হেসে ওঠেন। যোগব্যায়ামের প্রসার ঘটাতে নিজেই ব্যায়াম করেন সাধারণের সম্মুখে। সেসব ছবি ছড়িয়ে পড়ে মিডিয়ায়। তার বাহুতে আঁকা ট্যাটু নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে কৌতূহল। অনেকের মনেই প্রশ্ন, ট্রুডোই কি ট্যাটু আঁকা প্রথম প্রধানমন্ত্রী? হয়তো তাই।

 

গাঁজার পক্ষে ট্রুডো!

২০১০ সালের কথা। জাস্টিন ট্রুডো তখন কানাডা পার্লামেন্টের সদস্য। সে সময়ও তিনি অল্প-বিস্তর গাঁজা খেতেন বলে স্বীকার করে নেন। এ বলেই থামেননি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচনে প্রচারণায় বলেন, নির্বাচিত হলে চিকিৎসা ও উৎসব উদযাপনে গাঁজা (মারিজুয়ানা) বৈধ করবেন। বিরোধী দলের নেতারা সে নিয়ে কম উপহাস করেননি। কিন্তু ট্রুডোর উদার মানসিকতারই জয় হলো। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে গাঁজা বৈধকরণ বিলও তোলেন কানাডা পার্লামেন্টে। গাঁজা সেবনে বৈধতা দিলেও নিজে আর কখনো গাঁজা খাবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন ট্রুডো।

 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী কি বিবাহিত

এখন তার বয়স ৪৫। উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। সুদর্শন এই ফ্যাশনেবল তরুণের হাসিমুখ, কথা বলার স্টাইল আর স্মার্ট চলন-বলন দেখে নারীভক্তের বাড়াবাড়ি থেমে নেই। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া নারী ভক্তরা তাই ইন্টারনেটে খোঁজ নেন, ইজ কানাডিয়ান প্রাইম মিনিস্টার ম্যারিড? নারী ভক্তদের প্রবল কৌতূহল দেখে সার্চ ইঞ্জিন গুগল মজার কাণ্ড ঘটিয়েছে। কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী কি বিবাহিত— এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে গুগল ট্রুডোর স্ত্রী সোফির ছবি দেখাচ্ছে। নারী ভক্তরা  যা বোঝার বুঝে নিক!

 

বিপদের বন্ধু

ট্রাম্প সাতটি মুসলিম দেশের জনগণকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। শরণার্থীদের কোনো দেশেই ঠাঁই মিলছে না। যারা শান্তির কথা বলে, মানবতার কথা বলে— তারাই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে তুরস্ক, সিরিয়ার শরণার্থীরা লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। তখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলছেন, ওয়েলকাম টু কানাডা। অন্য সব বিশ্বনেতা, রাষ্ট্রনায়কদের থেকে এখানেই তিনি আলাদা। মানবতার কথা মুখের বুলি নয় তার কাছে। ২০১৫ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছেন তিনি। প্রথম চার মাসেই প্রায় ২৫ হাজার শরণার্থীকে কানাডায় আশ্রয় দেন। সে সংখ্যা বাড়ছেই। তিনি নিজেই ছুটে যাচ্ছেন শরণার্থীদের কাছে। তাদের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতিশীল এই তরুণ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন— ‘ধর্মবিশ্বাস যাই হোক না কেন নির্যাতন, সন্ত্রাস ও যুদ্ধপীড়িত অঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা কানাডায় স্বাগত।’

 

পড়ে না চোখের পলক!

ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিতে হোয়াইট হাউসে আসেন ট্রুডো। অতিথির তালিকায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পও। ফ্যাশন-স্টাইল, সৌন্দর্যে ইভাঙ্কার রূপে যখন ঘুম হারায় তরুণেরা তখন ট্রুডোকে দেখে ইভাঙ্কাই যেন গলে গেলেন মোমের মতো! ইভাঙ্কারইবা দোষ কিসে— ট্রুডোর জন্য বিশ্বজুড়ে তরুণীদের একই হাল।

 

রাজনীতিতে পথচলা

জাস্টিন ট্রুডো গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু তার বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েন। ২০০৮ সালে তিনি সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামেন। সে বছর মন্ট্রিলের পাপিনিউ থেকে এমপি নির্বাচিত হন। সকালের সূর্য গোটা দিনের প্রতিচ্ছবি— কানাডার প্রভাবশালী পত্রিকা গ্লোব অ্যান্ড মেইলের প্রধান সম্পাদক সম্পাদকীয়তে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এই বলে যে, নতুনদের মধ্যে তিনিই হয়তো আগামীর প্রধানমন্ত্রী। ২০১১ সালের নির্বাচন। লিবারেল পার্টির অবস্থা তখন নাজুক। কিন্তু চমক দেখালেন ট্রুডো। ২০১১ সালের নির্বাচনে তার দল আসন পেয়েছে ১৮৪টি। নির্বাচনে ভরাডুবির পর মাইকেল পদত্যাগ করেন দলের নেতৃত্ব থেকে। ২০১৩ সালে জাস্টিন ট্রুডো দলনেতা পদে  প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং বিপুল সমর্থন পেয়ে দলের নেতৃত্ব নেন। লিবারেল পার্টির প্রধান নেতা হিসেবে তিনি ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে নামেন। মাত্র এক বছর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে জয় ছিনিয়ে নেন তিনি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ট্রুডো।

 

বক্তৃতা দিয়েই আয় ৪৫ লাখ ডলার

নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই বেকায়দায় পড়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। নির্বাচনী প্রতিপক্ষ দেখিয়ে দিলেন অর্থ-বিত্তে ট্রুডো ধনীদের কাতারেই পড়েন। মধ্যবিত্তের অর্থকষ্ট, টানাপড়েনের তিনি কী বুঝবেন? কানাডার মতো ধনী দেশে মধ্যবিত্তের কষ্ট না বুঝলে ভোট মিলবে? জাস্টিন ট্রুডোর বাপ-দাদাদের ব্যবসা, সম্পত্তির বেশ প্রসার  রয়েছে। তার দাদা গড়ে তোলেন ফিলিং স্টেশন, রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, বিনোদন পার্ক। এমনকি মন্ট্রিলে বেসবল টিমের মালিকানাও। পৈতৃক সম্পত্তি পেয়েছেন দুই ভাই মিলে। সেটাও ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। মিস্টার কানাডিয়ান প্রাইম মিনিস্টারের পৈতৃক সম্পত্তি ও বর্তমান আয় মিলিয়ে সম্পদের পরিমাণ ৩.২ মিলিয়ন ডলার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতন পান ৩ লাখ ৩৪ হাজার ডলার। এ ছাড়া গাড়ি ভাড়া বাবদ পান আরও ২ হাজার ডলার। এ ছাড়া শেয়ার রয়েছে কানাডা ইনকরপোরেশনে। এ ছাড়া শুধু বক্তৃতা দিয়ে বছরে আয় করেন ৪৫ লাখ ডলার।

 

প্রেমিক হিসেবেও সফল

শুধু রাজনীতিতে নয়, প্রেমিক হিসেবেও দারুণ সফল ট্রুডো। স্ত্রী সোফির সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের গল্পের শুরুটা বেশ মজার। ২০০৩ সালের ঘটনা। একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে প্রথম চোখে চোখে কথা হয় দুজনের। সোফিকে কিন্তু আগে থেকেই চিনতেন ট্রুডো। তবে প্রেমের ব্যাপারে কেউই পা বাড়াননি। জাস্টিনের ছোট ভাইয়ের সহপাঠিনী ছিল সোফি। সে হিসেবে চেনাজানা ছিল তাদের। সেই চ্যারিটি অনুষ্ঠানের পর চুটিয়ে প্রেম শুরু করেন। এরপর ২০০৪ সালের অক্টোবরে এঙ্গেজমেন্ট সারেন। আর ২০০৫ সালের মে মাসে করেন বিয়ে। এখন তাদের সংসারে রয়েছে তিন সন্তান।

সর্বশেষ খবর