শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

হার মেনেছে বয়স

তানিয়া তুষ্টি

হার মেনেছে বয়স

দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সবারই কাম্য। এই বেঁচে থাকার মাঝেই হয়তো কেউ কেউ জীবনকে অর্থপূর্ণ করতে সক্ষম হন। জীবনের শেষপ্রান্তে এসেও অর্জনের ক্ষেত্রে ভিন্ন অর্থ দাঁড় করেন। তাদের কাছে হার মেনেছে বয়স। সবচেয়ে বেশি বয়সে পাহাড় টপকানো, রেসলিং, প্লেন চালানো অথবাবাবা-মা হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জিং সব কাজ করে বিশ্ব রেকর্ডে ওঠে তাদের নাম। এমন কিছু বিষয় নিয়ে আজকের আয়োজন।

 

৯১ বছরে স্নাতক [কিমলান জিনাকুল]

লেখাপড়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। শুধু ইচ্ছা আর অদম্য মনোবল থাকলেই যে কোনো বয়সে উচ্চতর ডিগ্রি পর্যন্ত অর্জন করা যায়। তারই প্রমাণ দিলেন থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ ‘হায়াও’-এর ৯১ বছর বয়সী নারী কিমলান জিনাকুল। এই বয়সে কেউ হয়তো ভাবতেই পারেন না কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের কথা। কিন্তু তিনি সেই কাজটিই করেছেন। দীর্ঘ ১০ বছরের পড়া শেষে চলতি বছরের ৯ আগস্ট তিনি স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট গ্রহণ করলেন। থাইল্যান্ডের সুখোথাই থাম্মাথিরাত ওপেন ইউনিভার্সিটি তাকে এই সম্মানে ভূষিত করল। কিমলানের মধ্যে সব সময় শিক্ষা গ্রহণের প্রতি আলাদা একটা আকর্ষণ কাজ করত। আর এই নীতিতে বিশ্বাসী সন্তানহারা এ নারী নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন। কিমলানের প্রতিদিনের রুটিন ছিল-সকালে ঘুম থেকে ওঠে প্রথমে বৌদ্ধমন্দিরে প্রার্থনা। এরপর প্রতিবেশী একটি মন্দির ঘুরে পড়ালেখার জন্য চলে যেতেন। তিনি পড়ালেখা করেছেন ‘হিউম্যান অ্যান্ড ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে।

 

৬৬ বছরের জোড়া দেহ [রনি ও ডনি]

ভাবা যায়, একটি মানুষ জন্ম থেকে আরেকটি মানুষের শরীরের সঙ্গে জোড়া লেগে আছে! খাওয়া, ঘুম, হাঁটাচলা, বই পড়া এমনকি প্রাকৃতিক নিয়ম-কানুনেও একজন অপরজনের সঙ্গী হতে বাধ্য হয়। এই ব্যাপারগুলো ঘটে থাকে ‘কনজয়েন্ট টুইন’ বা জোড়া লাগা যমজদের ক্ষেত্রে। এ ধরনের শিশুরা সাধারণত খুব বেশি দিন বাঁচে না। শারীরিক নানা অসুবিধার মধ্য দিয়ে তাদের দিন কাটে। তাই জন্মের কিছুদিন পরেই হয়তো মারা যায়। কিন্তু রনি ও ডনি গেইলন সব ধরনের অসুবিধাকে তোয়াক্কা না করে ৬৬ বছর বয়সে এখনো দিব্যি বেঁচে বর্তে আছেন। বর্তমানে তারাই সবচেয়ে বেশি বয়সের শারীরিক জোড়া লাগা যমজ। তাদের আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন গিয়াকমো এবং গিয়োভান্নি বাতিস্তা টস্যি। তারা ৭০ বছর বয়সে রেকর্ড গড়লেও ইহজগৎ ত্যাগ করায় রনি-ডনিই বেঁচে থাকা কনজয়েন্ট টুইন। তবে আশা করা যায়, বয়সের এই কমতি অচিরেই তারা পূরণ করতে পারবেন। রনি ও ডনির কোমর থেকে তলপেট পর্যন্ত জোড়া লাগা এবং শারীরিকভাবে সুস্থ।

 

৯২ বছরের দাম্পত্য [কারাম ও কাটারি]

আজকাল বিয়ের বাদ্যি পুরনো হতে না হতেই বিচ্ছেদের করুণ সুর বেজে ওঠে। তরুণ প্রজন্মের কাছে হয়তো বিয়ে নামক সম্পর্কের মূল্য দিনে দিনে কমে গেছে, নয়তো বিচ্ছেদটিই ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। ইদানীং অধিকাংশ ছেলেমেয়েকে দেখা যাচ্ছে, এই বিয়ের বাঁধনে জড়ানো তো কাল বিচ্ছেদ ঘটানো। তবে সে যাই হোক, এই যুগেও কিন্তু দীর্ঘ দাম্পত্যের উদাহরণ বিরল নয়। ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ৯১তম বিবাহবার্ষিকী পালন করলেন ভারতের কারাম ও কাটারি চাঁদ। এ সময় কারামের বয়স ছিল ১১০ এবং কাটারির বয়স ১০৩ বছর। এই জুটি বিয়ে করেছিল ১৯২৫ সালের ১১ ডিসেম্বর। তারা শুধু বিশ্বের দীর্ঘ সময়ের দম্পতিই নন, বয়স্ক ব্যক্তিত্বও বটে। তাই দীর্ঘ দাম্পত্যের জন্য যদি তাদের কাছ থেকে টিপস নিতে চান তবে মন্দ হবে না। তাদের কাছে দীর্ঘ দাম্পত্যের মূল রহস্য জানতে চাইলে একসঙ্গে উত্তর দিলেন, ‘একটি সুখী দাম্পত্য মানেই হলো দুজনের মাঝে কোনো দ্বিমত নয়। এ ছাড়াও একজন আরেকজনের কাছে কোনো বিষয়ে সামান্যতম গোপনীয়তা নয়।’

 

৭১-এ বডি বিল্ডার [আর্নেস্ট শেফার্ড] 

বয়স হলেই হাড়ে ভঙ্গুরতা আসবে। ক্যালসিয়াম শুকিয়ে যাবে। ভারী কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে— এসব ডাক্তারি আলাপের কোনো পাত্তায় নেই আর্নেস্ট শেফার্ডের কাছে। আর সে কারণেই ৭১ বছর বয়সে তিনি প্রথম বডি বিল্ডিং ইভেন্টে যোগ দিতে পারলেন। অথচ তার শুরুর গল্পটি একদমই ভিন্ন ছিল। তিনি ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো ধরনের ওয়ার্কআউট করতেন না। বোনের প্ররোচনায় পড়ে জিমে ভর্তি হওয়া। কিন্তু দুই বছর পরই আর্নেস্টের বোন মারা যান। এ ঘটনায় দুঃখপীড়িত আর্নেস্ট সব ওয়ার্কআউট বন্ধ করে দেন। তারও দুই বছর পর আর্নেস্টের স্বপ্নে মৃত বোনটি এসে আবারও জিমে যেতে অনুপ্রাণিত করেন। সেই থেকে আবার শুরু। সে সময় তার অর্ধেক বয়সেরও কোনো নারী এমন প্রতিযোগিতায় ছিলেন না। তাই তিনিই হন সর্বোচ্চ বয়স্ক বডি বিল্ডার। বর্তমানে তিনি প্রতিদিন ১০ মাইল করে দৌড়ান এবং শক্তি সঞ্চয়ে সপ্তাহে ৪ দিন করে জিম করেন।

 

৭০-এ পাহাড় টপকান [উইসিরো মিউরা]

মাউন্ট এভারেস্টে উঠতে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়ে বসেন। কিন্তু ৭০ বছর বয়স্ক উইসিরো মিউরার প্রাণশক্তির মুখে আর কোনো বাধা দাঁড়াতে পারেনি। এই বয়সে পর্বতে উঠে তিনি গিনেস বুকে নিজের নাম লিখিয়েছেন ২০০৩ সালে। কিন্তু রেকর্ডটি আবার কেউ কেড়ে নিতে পারে ভেবে ৭৫ বছর বয়সে আবারও চেষ্টা চালান। তবে দ্বিতীয়বারে তিনি ব্যর্থ হন। সেজন্য ৮৫ বা ৯০ বছরে আবারও রেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু তা হয়তো আর সম্ভব হবে না। কারণ ২০০৭ সাল থেকে চারবার হার্টে অস্ত্রোপচার হয়ে গেছে। তার ডায়াবেটিসও ধরা পড়েছে। এ ছাড়া শরীরে ইনজুরিও আছে। ইউসিরো তরুণ বয়সে পর্বতে চড়েছেন স্কিতে করে। ১৯৬৪ সালে ঘণ্টায় ১০৭ মাইল বেগে স্কি চালিয়ে রেকর্ড গড়েন। কিন্তু কখনই সামিট পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। অথচ ৭০ বছর বয়সে তিনি রেকর্ড গড়লেন। তিনিই প্রথম এভারেস্টে স্কি চালক হিসেবে রেকর্ড গড়েন। রেকর্ডটি গড়ার সময় তার পাড়ি দেওয়া পথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৬ হাজার ফুট।

 

৯৮-এ ইয়োগা ইনস্ট্রাক্টর [টাও পরসন লিন্স]

বেশির ভাগ বয়স্কদের ক্ষেত্রে উবু হয়ে পায়ের পাতা ছুঁয়ে দেখাটা অসম্ভব, কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ইয়োগা ইনস্ট্রাক্টর টাও পরসন লিন্সের কাছে ব্যাপারটি খুবই মামুলি। শুধু তাই নয়, যে কোনো ধরনের শারীরিক কসরত তার কাছে সোজা বিষয়। বিশেষ করে একজন ইয়োগা ইনস্ট্রাক্টর ঠিক যা করেন তিনিও তা পারেন। কিন্তু কিছুদিন আগে তার হিপ রিপ্লেসমেন্টের জন্য কিছুটা সীমাবদ্ধতা মেনে চলতে হচ্ছে। ৯৮ বছরেও টাও অনেক বেশি নমনীয় ভঙ্গিতে অ্যাথলেট করতে পারেন। এই গুণের পাশাপাশি তিনি প্রতিযোগী বলরুমেও দারুণ ডান্সার। এমনকি তিনি ২০১৫ সালে আমেরিকাস গট ট্যালেন্ট-এ মনোনীত হন। টাও আট বছর বয়স থেকে ইয়োগা করছেন। টাও কখনো পানি পান করেন না। শুধু চা আর ওয়াইন পান করেন। এই বয়সে তিনি সব সময় নখে পেইন্ট করেন এবং হিল পরেন। ২০১২ সালে তার এক স্টুডেন্ট তাকে সবচেয়ে বেশি বয়সের ইনস্ট্রাক্টর বলে আবিষ্কার করেন। তারপরই তিনি বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন।

 

৯৯-এ পাইলট [আর্নি এলি স্মিথ]    

বয়স ৮০ বা ৯০-এর কোটায় গড়ালেই তাদের জন্য প্লেনে ভ্রমণটাও যেন বিপজ্জনক। এ ছাড়াও আপনজনদের খুব বেশি চিন্তিত দেখায় বয়স্ক মানুষের ড্রাইভ করা নিয়ে। অথচ সবাইকে অবাক করে ৯৯ বছর বয়সে নিজেকে দিব্যি একজন পাইলট হিসেবে ধরে রেখেছেন আর্নি এলি স্মিথ। একবার ভাবুন তো এই বয়সের একজন ব্যক্তি খুব সাবলীলভাবে বিমান চালিয়ে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। যাই হোক সবচেয়ে বেশি বয়সের পাইলট হওয়ার কারণে গিনেস বুকে নাম উঠেছে আর্নি এলি স্মিথের। তিনি ১৯৪৬ সাল থেকে ফ্লাই করছেন। অর্থাৎ ৭০ বছর ধরে তিনি পাইলট হিসেবে কাজ করছেন। তিনি যখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সের পাইলট হিসেবে পরিচিত, সেখানে আশা ব্যক্ত করেন বিশ্বের কনিষ্ঠ পাইলট হিসেবে নিজের নাম লেখাতে পারলে ভালো হতো। তিনি আসলে এখনো অনুভব করেন আকাশের চেয়ে আর কোনো উত্তম জায়গা নেই। তাছাড়া বিমান চালাতে বয়স কোনো ব্যাপার নয়। শুধু দরকার আত্মপ্রত্যয় ও মনোবল।

 

১০৫ বছরের যমজ [রেমন্ড ও লুসিনি]

যমজ ভাইবোনের দেখা মেলে প্রায়ই। কিন্তু দীর্ঘজীবী যমজের দেখা কি এত সহজে মেলে? আমাদের গড় আয়ু যেখানে ৭০-এর কাছাকাছি সেখানে ১০০ বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যমজদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যখনই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সের যমজের কথা আসবে তখন এমন কোনো জুটিকে সামনে আনতে হবে যে কিনা বেশি বয়স্ক এবং এখনো বেঁচে আছে। ঠিক এমন সময় গিনেস বুকের বদৌলতে জানা গেছে রেমন্ড সাওমেড ও লুসিনি গ্রারি সবচেয়ে বয়স্ক যমজ। তারা জন্মেছিলেন ১৯১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে তাদের বয়স ১০৫ বছর। দুর্ভাগ্যবশত তারা দুজনই এখন অসুস্থ এবং একটি নার্সিং হোমে আছেন। তবে এর আগে ১০৭ বছরের জাপানি যমজ জুটি কিন নারিতা ও গিন কেনি রেকর্ড গড়েছিলেন। তারা মারা যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি বয়সের যমজ হিসেবে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। এই যমজ জুটি ব্যক্তি জীবনে সবচেয়ে দীর্ঘ দাম্পত্যেরও অধিকারী ছিলেন।

 

৯৪ বছরে প্রথম বাবা [ রামজিত রাঘব ]

ভারত ১৯৬০ সালের পর থেকে নাগরিকদের জন্মসনদ দান শুরু করে। এজন্য বয়স্ক মানুষদের আসল বয়স নির্ধারণ করা খুবই জটিল হয়ে যায়। তাই রামজিত রাঘব নামের বয়স্ক মানুষটির মুখের কথা যদি সঠিক হয় তাহলে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক সন্তান জন্মদানকারী বাবা। তিনি প্রথমবারের মতো বাবা হন তার ৯৪ বছর বয়সে। রামজিতের যখন ৯৬ বছর বয়স তখন তাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু গিনেস বুকে সবচেয়ে বেশি বয়সের বাবা হিসেবে যে ব্যক্তিটির নাম আছে তিনি অস্ট্রেলিয়ান লেস কোলি। তিনি সব ধরনের প্রমাণ সাপেক্ষে বেশি বয়সের বাবা হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। ৯২ বছর বয়সে এই ব্যক্তি বাবা হন। নতুন জন্ম নেওয়া সন্তানটি লেস কোলির নবম সন্তান, কিন্তু যে মায়ের গর্ভে জন্ম নেয় তার প্রথম সন্তান। লেসের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক হয় একটি ডেটিং এজেন্সির মাধ্যমে। বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বাবার ছেলেটি যখন আট বছরে পৌঁছায় তখন বাবা লেস কোলি ১০০ বছর বয়সে মারা যান।

 

১০০-তে ১৫০০ মিটার সাঁতার [মিয়েকো]

মনের জোর থাকলে বয়স যে কোনো ব্যাপার না, এর প্রমাণ দিলেন ১০০ বছরের জাপানিজ নারী সাঁতারু মিয়েকো নাগায়োকা। তিনি এই বয়সে ১৫০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার শেষ করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ৮০ বছর বয়সে তিনি সাঁতার শেখা শুরু করেছিলেন। জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এহিমেতে অনুষ্ঠিত এক প্রতিযোগিতায় ১০০-১০৪ বছর বয়সী ক্যাটাগরিতে নাগায়োকা একাই প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। পুলের আয়তন অবশ্য কম ছিল। এই প্রতিযোগিতা শেষ করতে তিনি সময় নিয়েছেন ১ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। সাঁতার শেষ করে স্থানীয় গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘আমি যদি বেঁচে থাকি তবে ১০৫ বছর বয়স পর্যন্ত সাঁতার চালিয়ে যেতে চাই।’ এত বয়স্ক কাউকে এখন পর্যন্ত সাঁতার প্রতিযোগিতায় আসতে দেখা যায়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে তিনি হয়তো গিনেস বুকে নাম ওঠাতে পারবেন। এই সাঁতারু ৯৯ বছর বয়সে অলিম্পিক-সাইজের পুলে ১৫০০ মিটার দূরত্বের সাঁতার শেষ করে নিজেকে সক্রিয় সাঁতারু হিসেবে প্রমাণ করেন।

 

১০৩-এ বিয়ে [জর্জ ও ডোরিন]

জর্জ ও ডোরিন কিরবি এক সুতোয় বাঁধা পড়লেন ২০১৫ সালের নভেম্বরে। ঘটনাটি খুব স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটিও পরিণত হলো আন্তর্জাতিক খবরে। এর পেছনে কারণ হলো, জর্জ ১০৩ বছর বয়সে ও ডোরিন ৯১ বছর বয়সে বিয়ে করেন। তাদের দুজনের মোট বয়স ১৯৪। বিশ্ব রেকর্ডে এত বয়স্ক মানুষের বিয়ের ঘটনা আগে ঘটেনি। এই বয়সে বিয়ে করায় গিনেস বুকে সবচেয়ে বয়স্ক নববিবাহিত দম্পতির খাতায় তাদের নাম ওঠে। জর্জ হয়তো সবচেয়ে বেশি বয়সের বর হিসেবেও নিজের নামটি রেকর্ডবুকে তুলতে পারতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, প্রথম বিবাহবার্ষিকীর আগেই তিনি মারা যান। কিন্তু জীবিত থেকে ডোরিন এটা জেনে খুশি ছিলেন যে, তারা পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি ছিলেন। যে রেকর্ডের কাছে আর কেউ যেতে পারেননি। এই দম্পতি বিয়ের আগে ২৭ বছর একসঙ্গে সময় কাটিয়েছে। তবে বেশি বয়সে বিয়ে করে অপর এক দম্পতি দীর্ঘ দাম্পত্যের রেকর্ড গড়ে ফেলে। পিটার ব্যারেট (৮২) ও ন্যান্সি ইভান্স (৮৩) বিয়ে করে কাটিয়ে ফেলেছেন দুই বছর।

 

৬৭-তে প্রথম সন্তান [মারিয়া ডেল]

পৃথিবীর কোনো বয়োবৃদ্ধ নারী যদি নতুন একটি প্রাণ উপহার দেন তখন সেটা অবাক করা বিষয়ই বটে। একই সঙ্গে গড়ে তোলেন বিশ্ব রেকর্ড। গিনেস বুক অব রেকর্ডে সবচেয়ে বেশি বয়সে সন্তান জন্ম দেওয়ায় নাম উঠেছে মারিয়া ডেল কারমেন বউসাদা লারার। তিনি ৬৭ বছর বয়সের মাত্র এক সপ্তাহ আগেই সিজার করে যমজ দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এই বয়সে সিঙ্গেল মারিয়া ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে বাচ্চা নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছুদিন পরেই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। সন্তান জন্মদানের ২-৩ বছর পরই ২০০৬ সালে তিনি মারা যান। অন্যদিকে জীবিত আরেক মা দালিন্দার কৈর বয়স্ক সন্তান জন্মদানকারী হিসেবে পরিচিতি পান। তবে জন্মনিবন্ধন কার্ড না থাকায় দালিন্দারের সঠিক বয়স নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে যে ক্লিনিকের মাধ্যমে ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন চিকিৎসা নিয়েছেন তারা বলছেন দালিন্দারের বয়স ৭২। এখন প্রশ্ন হলো, এই দুই নারীই বিশেষ চিকিৎসার মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যের ডন ব্রোক ৫৯ বছর বয়সে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর