বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিলাসী বিমান বিমানে বিলাসিতা

বিলাসী বিমান বিমানে বিলাসিতা

দ্রুত ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আধুনিক মাধ্যম হলো বিমান বা উড়োজাহাজ। সব বিমান কিন্তু একরকম হয় না। কিছু কিছু বিমান যেমন একেবারে সাধারণ আবার কিছু যেন উড়ন্ত হোটেল। সেগুলো বাইরে থেকে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি ভিতরেও জাঁকজমকপূর্ণ। এসব বিমানে ব্যবহার করা হয় বিমান বা উড়োজাহাজের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং বিলাসী বিমান বা উড়োজাহাজগুলো এবং এদের বিলাসী যাত্রা নিয়ে আজকের রকমারি। লিখেছেন— সাইফ ইমন

 

সবচেয়ে বিলাসবহুল

চীন তার নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল ফ্লাইট এজি ৬০০। এটি স্থল এবং পানিতে অবস্থানসহ নামতে ও উড়তে পারবে। নিজস্ব অর্থায়ন ও মালিকানায় পরিচালিত ‘এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্প অব চায়না’ এ বিমানটি তৈরি করেছে। এটি তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানটির সময়  লেগেছে প্রায় আট বছর। তাই এই বিলাসবহুল বিমানকে বলা হচ্ছে উভচর বিমান। উন্নত প্রযুক্তি ও মানের দিক থেকে এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিলাসবহুল বিমান। গুয়াংডং প্রদেশের জুহাই বিমানবন্দরে এই বিমানের প্রথম উড্ডয়নের সরাসরি সম্প্রচার করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। ফ্লাইটটি এক ঘণ্টা উড্ডয়ন করে বিমানবন্দরে ফেরত আসে। বিমানটির আয়তন বিশাল। এর সবচেয়ে অত্যাধুনিক আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। আবার সামুদ্রিক উদ্ধারের ক্ষেত্রে এই বিমান বিশেষভাবে উপযোগী। এজি ৬০০ ফ্লাইটের প্রধান ডিজাইনার হুয়াং লিংগাসি। তার ভাষ্য অনুযায়ী এই ফ্লাইট এক জ্বালানিতেই হায়নান প্রদেশ থেকে জেমস সোয়াল প্রদেশের মধ্যে একবার যাওয়া-আসা করতে পারবে। এই বিমান ১২ মেট্রিক টন পানি বহন করতে পারে। যাতে করে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড দমনে কার্যকর অবদান রাখতে পারে। বিমানটি সমুদ্রে অবতরণ-উড্ডয়নে সক্ষম।

 

অনন্য ট্রাম্পের বিমান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিমান পৃথিবীর বিলাসবহুল বিমানগুলোর মধ্যে একটি। রোলস রয়েস ইঞ্জিন দ্বারা চালিত ‘ট্রাম্প ফোর্স ওয়ান’ নামের বিমানটির সিটবেল্টগুলো ২৪ ক্যারেট গোল্ড প্লেটেড। বিমানের সিটগুলো প্রয়োজন হলে বিছানায় রূপান্তরিত করা যায়। এর বাথরুম মার্বেল পাথরের তৈরি। শয়নকক্ষের বিছানায় ব্যবহৃত পিলোগুলো ট্রাম্পের পারিবারিক মনোগ্রাম খচিত। বিমানের রয়েছে আলাদা ভিডিও লাউঞ্জ। সেই ভিডিও লাউঞ্জে ৫৭ ইঞ্চি পর্দার টিভি রয়েছে।

তিনি নিজের ব্যক্তিগত বিলাসবহুল বিমানে করেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ান। ২৮০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিমানটি ৪৩ জন যাত্রী বহন করতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১১ সালে এই বোয়িং বিমানটি কেনেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই বিমানের অন্দরসজ্জায় বিলাসবহুল আধুনিক সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ঘণ্টায় ৫০০ মাইলের বেশি গতিতে চলা এই বিমানটি ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার কাজেও ব্যবহার করেছিলেন। এই বিমানের বাইরের আবরণে বিশাল অক্ষরে ট্রাম্পের নাম লেখা আছে। যে কেউ দূর থেকে দেখেই বুঝে নিতে পারেন যে, এই বিমানটি বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তির। এই বিমানের ভিতরে রয়েছে ট্রাম্পের জন্য ব্যক্তিগত বিলাসবহুল স্যুট।

 

আকাশেই বাড়ি

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস যুক্ত করেছে বিলাসবহুল এয়ারবাস এ৩৮০। এই বিমানকে বাড়ি বললে মোটেই ভুল হবে না। আসন রয়েছে ৪৭১টি। এর মধ্যে স্যুট আছে ছয়টি। আর ৭৮টি বিজনেস, ৪৪টি প্রিমিয়াম ইকোনমি ও ৩৪৩টি ইকোনমি ক্লাস বা শ্রেণির আসন রয়েছে। স্যুটগুলোতে যাত্রীরা আকাশ ভ্রমণে বিলাসবহুল হোটেলের মতো অভিজ্ঞতা পাবেন বলে জানিয়েছে বিমান সংস্থাটি। দ্বিতল এই বিমানটির সবচেয়ে দামি ও বিলাসবহুল হলো এর আসনগুলো। এই আসন এত বড় আরামদায়ক যেন পরপর দুটি আসন জোড়া লাগালে এমনই একটি বিলাসবহুল কেবিন সমান জায়গা তৈরি হয়। এ যেন দম্পতিদের জন্য ভালো ব্যবস্থা! স্যুটগুলোতে বিছানার পাশাপাশি থাকছে বিশেষ ডাইনিং সুবিধা। সেখানে বসে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যাত্রীরা আয়েশ করে পড়তে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন পাশে থাকা ল্যাপটপ। কিংবা দেয়ালের টিভিতে দেখা যাবে চলচ্চিত্র। যেন মিনি থিয়েটার। যেখানে ছোট্ট একটি ডেস্কও মিলবে। যদি লেখালেখির ইচ্ছা করে বিমানের জানালা দিয়ে মেঘের বাড়ি দেখতে দেখতে হাতে তুলে নিতে পারেন কলম। এদিকে ফুলদানির তাজা ফুল আপনাকে দিবে নিজের বাসার আমেজ। রয়েছে বসার ঘরও, এমনকি পোশাক রাখার ব্যবস্থা।

 

৭৬ ডলারেই বিলাসিতা

মাত্র ৭৬ ডলার খরচ করেই আপনি পেতে পারেন বিমানে ৭ হাজার ডলারের সমমানের বিলাসবহুল যাত্রার সুযোগ। বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম একে ‘ফিলিং ওভার দ্য মুন’ বলে আখ্যায়িত করেছে! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটি সত্যি। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে তাইপের ব্যবসায়ী স্যাম হুয়াং সঙ্গে। স্যাম হুয়াং মাত্র ৭৬ ডলার ব্যয় করে উপভোগ করেছেন ৭ হাজার ডলারের প্রথম শ্রেণির বিমান সেবা। শুধু তাই নয়, জাপানে একটি ফাইভ স্টার হোটেলে থেকেছেন প্রায় বিনা খরচে! যদি আপনি কানটাস ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ারের সদস্য হন আপনিও পেতে পারেন এই সেবা। কানটাস হচ্ছে জনপ্রিয় ট্রাভেল এজেন্সি। তাদের বিভিন্ন সেবা ব্যবহারে ভোক্তারা পেয়ে থাকেন পয়েন্ট। সেই পয়েন্ট খরচ করেই বিমান, হোটেল এবং অন্যান্য খরচ কভার করা যবে। এই বিলাসী ফ্লাইটের ত্রিশ মিনিট আগে যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় কেবিনে। কেবিনটি স্প্যানিশ এবং বেজ চামড়া দিয়ে আবৃত। বিমানে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে পাবেন ওয়েলকাম ড্রিংস। এরপর বিমানের ক্রুরা করবে আপনার খাতিরদারি। ফ্লাইটের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, যে ধরনের খাবার খেতে আগ্রহী সেই ধরনের খাবার প্রস্তুত করে দিবে বিমানের শেফ। গরম গরম সেই খাবার খেতে খেতে নিমেষেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে।

 

রয়েছে মিনি বার

বিলাসবহুল এয়ারওয়েজ ‘ইতিহাদ’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা। এই এয়ারওয়েজের রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল ট্রিপের ব্যবস্থা। এর ফার্স্ট ক্লাস স্যুটে আপনি পাবেন ২৩ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভি, মিনি বার, কনভারটেবল ৮ ফুট ছয় ইঞ্চি বিছানা যা ম্যাসাজ চেয়ার হিসেবে কাজ করে। এতে থাকবে ল্যাপির জন্য কানেক্টিভিটি পোর্টসহ অন্যান্য সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ২০০৩ সালের জুলাইয়ে আরব আমিরাত সরকার আবুধাবিভিত্তিক এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে। এরপর নভেম্বরে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। আরবি ‘ইতিহাদ’ শব্দের অর্থ ঐক্য। ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ৫৫টি দেশের ৮৫টি গন্তব্যে প্রতি সপ্তাহে ১৩০০-এরও অধিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর সংগ্রহে রয়েছে ৬৭টি এয়ারবাস এবং বোয়িং বিমান। ২০১১ সালে ইতিহাদ ৮.৩ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করেছিল, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এতে ইতিহাদ ৪.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় এবং ১৪ মিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ অর্জন করে। কৌশলগত পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০১১ সালে ইতিহাদ তার ১৪ মিলিয়ন ডলারের পূর্ণ বার্ষিক নিট লাভ প্রকাশ করে। যাত্রী পরিবহন ছাড়াও ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ইতিহাদ হলিডেজ এবং ইতিহাদ কার্গো পরিচালনা করে। 

 

উড়ন্ত হানিমুন কেবিন

মাটি থেকে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় উঠবে আবার সেটি হবে বিলাসবহুল। এই প্রতিযোগিতায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে এশিয়ার বিমান পরিবহন সংস্থা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। তাদের এয়ারবাস এ৩৮০-এর সুপার জাম্বো জেট বহরের নতুন কেবিন ডিজাইনে দেখা যাচ্ছে ডাবল বেড, সুইভেল চেয়ার আর ওয়ারড্রোবের আয়োজন। নতুন কেবিন নকশায় এয়ারবাস এ৩৮০-তে সুপরিসর ছয়টি স্যুট থাকছে। সেখানে থাকবে ৩২ ইঞ্চি ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি, ভ্যানিটি কাউন্টার। আরামদায়ক আসবাবগুলো থাকবে চামড়ায় সজ্জিত। শুধু কি তাই? বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণরত জুটিদের জন্য মাঝের ডিভাইডার গুটিয়ে পুরোপুরি শোয়ার ব্যবস্থা আছে। এটিকে হানিমুন কেবিনও বলা যায়। এ ছাড়াও প্রথম শ্রেণির স্যুটে আগের চেয়ে কম খরচে যাত্রা করতে পারবে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস তাদের বহরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ এয়ারবাস এ৩৮০ চালু করেছিল এক দশক আগে। কিন্তু বিলাসের আয়োজনে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুবাইয়ের এমিরেটস আর আবুধাবির ইতিহাদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের নতুন এই কেবিন নকশা প্রতিযোগিতায় তাদের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন এভিয়েশন বিষয়ক বিশ্ববোদ্ধারা। 

 

 

 

 

 

 

লম্বায় ৬৫০ ফুট

 

দরিদ্র ও দুর্যোগকবলিত মানুষকে সাহায্য করতে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল এক বিলাসবহুল উড়োজাহাজ। ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে এই বিমান। এর উদ্যোক্তার নাম সের্গেই ব্রিন। নাম শুনে নিশ্চয়ই চিনতে পারছেন তিনি গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা। মানবিক এই ব্যক্তি ১০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করছেন এই বিমান তৈরির জন্য। ‘এয়ার ইয়ট’ নাম রেখেছেন বিমানটির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার রিসার্চ সেন্টারে এ উড়োজাহাজ তৈরির কাজ চলছে। বিশাল এই উড়োজাহাজে সের্গেই ব্রিন, তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরাও ভ্রমণ করবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মানবিক জনহীতকর প্রকল্পে বিশ্বজুড়ে এটি ব্যবহার করা হবে। তবে এটি নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, গরিবের জন্য উড়োজাহাজ বলা হচ্ছে এটিকে, আবার একে বলা হচ্ছে বিলাসবহুল যান। গুগল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে গরিব-অসহায় মানুষ বিলাসবহুল উড়োজাহাজে ভ্রমণ করতে পারবে না এমন কোনো কথা নেই। আবার তাদের জন্য বিলাসবহুল ভ্রমণের ব্যবস্থা করাই উচিত বলে মন্তব্য করেন অনেকে। ব্লুমবার্গের  দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিন বছর আগে এ উড়োজাহাজ তৈরির প্রকল্প নেন সের্গেই ব্রিন। উড়োজাহাজটি ৬৫০ ফুট লম্বা হবে। এই  উড়োজাহাজে থাকবে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার। আরও থাকবে সব রকমের বিলাসী উপকরণ। 

 

 

 

 

আলিশান পাঁচতারা হোটেল

হংকংয়ের একটি প্রতিষ্ঠান প্রচলিত বিমানযাত্রার ধারণা থেকে পুরোপুরি বের করে আনতে যাচ্ছে যাত্রীদের। আকাশপথে বিলাসী ভ্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল উড়োজাহাজ তৈরির প্রতিষ্ঠান কেসট্রেল এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট আড়াই বছর ধরে একটি বিশেষ বিলাসবহুল বিমান তৈরির পেছনে কাজ করে যাচ্ছে হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির জন্য। এই উড়োজাহাজের ভিতর ঢোকার পর আপনার মনে হবে পাঁচতারা আলিশান হোটেলে প্রবেশ করেছেন। সাধারণত একটি বিমানে ৩৫৫ জন যাত্রী ভ্রমণ করেন। সেখানে এই উড়োজাহাজ যাত্রী নেবে খুব বেশি হলে ৪০ জন। ছয় হাজার ৫০০ বর্গফুট কেবল ৪০ জন অতিথির জন্যই বরাদ্দ। আকাশের বুকে চরম বিলাসিতার অপর নাম যেন এই বোয়িং ৭৮৭। বিলাসবহুল যানটিতে আছে সুপরিসর লিভিংরুম। ঠিক আপনার বাসার কক্ষের মতোই। রয়েছে আধুনিক গোসলখানা। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তিতে সেখানেই গোসল সেরে হতে পারবেন একদম ফ্রেশ। আরামের সর্বোচ্চ আয়োজন আছে শয়নকক্ষে। নরম গদির বিছানা থেকে শুরু করে সেখানে রয়েছে রেফ্রিজারেটর, কফি তৈরির মেশিন, নিজস্ব বাথরুম। এমনভাবে রাখা হয়েছে সব, যে কেউ চাইলেই কেবল নিজের শয়নকক্ষে আয়েশ করে যাত্রার পুরোটা সময় পার করে দিতে পারেন। আবার চলচ্চিত্র দেখতে মন চাইলে রয়েছে চলচ্চিত্র দেখার উপযোগী বিশাল স্ক্রিন। সুবিশাল ডাইনিংরুম ও কনফারেন্স রুম সজ্জিত হয়েছে আধুনিক পাঁচতারা হোটেলের মতো করেই। কেবিন ক্রুদের জন্য আছে আলাদা বিশ্রামের জায়গা। এই বিমানের আসবাবপত্র বিশেষভাবে তৈরি। যেমন কফি টেবিলগুলো চাইলে ছয়জনের ডাইনিং টেবিলে পরিণত করা যায়। বসে আরাম করতে চাইলে রয়েছে সোফা আবার একটু বিছানায় পিঠ ঠেকাতে চাইলে সোফাগুলো খুলে নিলেই হবে। সেগুলো হয়ে যাবে বিছানা। খারাপ আবহাওয়ায় দুলে উঠে যেন দুর্ঘটনা না ঘটে এবং সে জন্য আসবাব ডিজাইন করা হয়েছে বিশেষভাবে। আসবাবে ধাক্কা লেগে যাত্রীদের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আসবাব ডিজাইন করা হয়েছে।  তবে এত আনন্দের ভ্রমণে শোয়ার ঘরে থেকে সময় নষ্ট করবে এমন মানুষ খুব কমই আছে। বরং এক গ্লাস পানীয় হাতে গল্পে মেতে উঠতে পারেন, সেরে নিতে পারেন উষ্ণ জলে গোসল। কেউ যদি দিনের দাফতরিক কাজকর্ম যাত্রাপথে সেরে ফেলতে চান, সে ব্যবস্থাও থাকছে। অফিসের কিংবা ব্যবসায়িক গুরুত্বপূর্ণ জরুরি মিটিংটা বিমানের যাত্রাপথেই শেষ করে ফেলতে পারেন কনফারেন্স কক্ষে বসে। এসব কাজে যেন আপনার মনোযোগে কোনো অসুবিধা না হয় সে জন্য বিমানের ভিতরে শব্দ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে নামিয়ে আনা হয়েছে ৪৮ ডেসিবলে। কেবিনের ভিতরের বাতাস জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য রয়েছে বিশেষ কোয়রেন্টাইন ব্যবস্থা। হংকংয়ের প্রতিষ্ঠানটি এই বিমান সেবার ব্যবস্থা করছে শৌখিন ধনকুবের আর বহুজাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের কথা মাথায় রেখেই। তবে কেউ যদি শয়নকক্ষ ভাড়া না করতে চান তাদের জন্য রয়েছে সাধারণ বিমানের বিজনেস ক্লাসের হাতেগোনা কয়েকটা আসন।

সর্বশেষ খবর