বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বসেরা জাদুঘর

জাদুঘর মানেই ইতিহাসখ্যাত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের সংগ্রহশালা। অন্যভাবে বলা যায়, পৃথিবীর বুকে মানুষের জয়যাত্রার আগে থেকে আজ পর্যন্ত সব ইতিহাসের প্রতিচ্ছবিই হলো জাদুঘর। জাদুঘরে প্রবেশ করলে আপনি হারিয়ে যাবেন অন্য এক সময়ে। সভ্যতার ইতিহাস আপনি খুব ভালো করে জানতে পারবেন এখানে। পৃথিবীর কিছু বিখ্যাত জাদুঘর নিয়ে আজকের রকমারি—

সাইফ ইমন

বিশ্বসেরা জাদুঘর

তোপকাপি জাদুঘর [তুরস্ক]

ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী তোপকাপি জাদুঘর। এখানে রয়েছে দর্শনীয় নানা উপকরণ। যা উসমানীয় শাসনামলের নানা নান্দনিক নিদর্শন বহন করছে। এক সময় উসমানীয় সুলতানদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এটা ইস্তাম্বুলের প্রশাসনিক ও শিক্ষা বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দু। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে মুসলমানদের জন্য পবিত্র স্মরণচিহ্ন। যেমন- হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আলখাল্লা এবং তরবারি। তোপকাপি প্রাসাদ সত্যিকার অর্থে উসমানীয় শাসনামলের দোর্দণ্ড প্রতাপের প্রতিচ্ছবি। উসমানীয় সুলতানদের ব্যবহৃত নানা স্মৃতিচিহ্ন এখানে এখনো রয়েছে নিদর্শন হিসেবে। গোটা ইস্তাম্বুলের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা হয় এই জাদুঘরটি। এই রাজকীয় প্রাসাদটি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত। উসমানীয় সাম্রাজ্যের শাহেনশাহ দ্বিতীয় মুহাম্মাদ পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় এই প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করান। প্রায় ৪০০ বছর ধরে এটি উসমানীয় সুলতানদের বাসস্থান হিসেবে বিদ্যমান থাকে। এই প্রাসাদটি বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে ঐতিহাসিক এলাকা হিসেবে ইউনেস্কো ঘোষণা করেছে। এ ছাড়াও এখানে টাঁকশাল, হাসপাতাল ইত্যাদি রয়েছে।

 

ল্যুভর মিউজিয়াম [ফ্রান্স]

পৃথিবীর বিখ্যাত সব জাদুঘরের তালিকায় ওপরের সারিতেই থাকবে ল্যুভর মিউজিয়ামটি। এক সময় ল্যুভর ফ্রান্সের রাজপ্রাসাদ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এই জাদুঘরটির সামনে কাচের তৈরি পিরামিড বসিয়ে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়াম, যাতে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর ও মহামূল্যবান অনেক চিত্রকলা এবং ভাস্কর্য। প্যারিসের সিন নদীর তীরে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা আজকের সমকালে এক মহাকালের ধারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে। প্যারিস শহরটা গড়ে উঠেছে সিন নদীর তীর ঘেঁষে। অনেকটা উত্তর-দক্ষিণে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত এই নদীর তীরেই গড়ে উঠেছে ল্যুভর। ১২০০ সালে নির্মিত যে ভবনকে ঘিরে এটি প্রথমে গড়ে ওঠে তা ছিল ফরাসি সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপের রাজকীয় দুর্গ ও প্রাসাদ। শিল্প সংগ্রহশালা হিসেবে ল্যুভরের সার্বিক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হতে সময় লাগে মোট ২০০ বছর। ল্যুভর হচ্ছে নানা ভবনের এক বিশাল সমাহার। ১৫৪৬ সালে এর পশ্চিমদিকের ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় সম্রাট প্রথম ফ্রান্সিসের নির্দেশে। শুরুতে এতে কেবল বিভিন্ন রাজকীয় দ্রব্যসামগ্রী প্রদর্শনের জন্য রাখা হতো। সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের আমলে এই জাদুঘরের সামগ্রিক নির্মাণকাজ শেষ হয়। বিশ্বখ্যাত শিল্প ও ভাস্কর্য কর্ম রয়েছে এখানে।

 

গিমে মিউজিয়াম [ফ্রান্স]

ল্যুভর মিউজিয়ামের মতো আরেকটি সমৃদ্ধ জাদুঘরের নাম বলতে গেলেই সবার আগে চলে আসে গিমে মিউজিয়ামের নাম। গিমে জাদুঘর তৈরির পেছনে ছিলেন ফ্রান্সের বিশিষ্ট শিল্পপতি এমিল গিমে। তারই নামানুসারে এই জাদুঘরের নাম করা হয়েছে গিমে জাদুঘর। তার একক অবদানেরই এক রূপ এই জাদুঘর। তিনি ১৮৭৬ সালে জাপান, চীন, ভারতবর্ষ, মিসর, গ্রিস ভ্রমণ করেছিলেন।

তার ছিল প্রত্নসামগ্রী সংগ্রহ করার শখ। ফলে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সময় তিনি বিপুল পরিমাণ প্রত্নসামগ্রী সংগ্রহ করেছিলেন। যা তিনি পরবর্তীতে পুরোটাই নিজ দেশে নিয়ে এসেছিলেন। আর এই বিশাল সংগ্রহশালাটি জনসম্মুখে প্রদর্শনের জন্য ১৮৭৯ সালে ফ্রান্সের নিজ শহরে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন। পরে প্যারিসে বর্তমান গিমে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে সব সংগ্রহই এখানে স্থানান্তর করেন। প্রতিষ্ঠার প্রায় এক দশক পেরিয়ে যাওয়ার পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে শুরু হয় গিমে জাদুঘরের নতুন যাত্রা। এ জাদুঘরটি বিশেষভাবে পূর্ব ও দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রত্নসামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়েছে।

 

উফিজি গ্যালারি [ইতালি]

উফিজি গ্যালারি অবস্থিত ইতালির ফ্লোরেন্সে। এই জাদুঘরজুড়ে ছড়িয়ে আছে নানারকম দর্শনীয় বস্তু। এটিকেই বলা হয় রেনেসাঁ যুগের প্রথম চিত্রকর্মের সংগ্রহশালা। এ ছাড়া জাদুঘরে প্রবেশের শুরু থেকেই দেখা যায় বিখ্যাত সব ভাস্কর্য। পাথরের ওপর খোদাই করা সব মূর্তি আপনাকে অভিভূত করবে। যেন একেকটা মূর্তি একেকটা ইতিহাসের কথা বলছে। জাদুঘরটির দেয়ালের পরতে পরতেও স্থান পেয়েছে এসব মূর্তি। আপনি নিশ্চিত হারিয়ে যাবেন অজানা-অচেনা কোনো সময়ে। মনে হবে যেন পাথরের জীবন্ত সব মূর্তি চেয়ে আছে দর্শনার্থীদের দিকে। জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশের শুরুতেই চোখে পড়বে বিখ্যাত ভাস্কর বোত্তিসেল্লির ‘বার্থ অব ভেনাস’ এবং ‘প্রিমাভেরা’সহ নয়নাভিরাম সব ভাস্কর্য। সেখানে  গেলে আপনি আরও দেখতে পাবেন বিখ্যাত চিত্রকর মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতো কালজয়ী সব চিত্রশিল্পীর আঁকা বিখ্যাত সব ছবি। ১৫৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত ১৩ হাজার মিটার আয়তনের এই মিউজিয়ামে ১.৯ মিলিয়ন মানুষ প্রতিবছর বেড়াতে আসে।

 

মাদাম তুসো জাদুঘর [যুক্তরাজ্য]

বিখ্যাত জাদুঘরগুলোর কথা বলা হবে আর সেখানে মাদাম তুসো জাদুঘরের নাম আসবে না এমনটা হতেই পারে না। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত এই জাদুঘরে খ্যাতিমানদের মোমের মূর্তি তৈরি করে রাখা হয়। এই জাদুঘর ধারণ করে সময়কে। ধারণ করে মানুষকে। আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই জাদুঘর, কারণ এর সময়োপযোগিতা। সেই এরিস্টটল থেকে শুরু করে অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান কিংবা স্টিফেন হকিং— কে নেই এই মাদাম তুসো জাদুঘরে। এ কারণেই এই জাদুঘরটি বিখ্যাত হয়েছে পৃথিবীজুড়ে। তবে এর শুরুটা একটা ইতিহাস। ফরাসি বিপ্লবের সময় মাদাম তুসো নিজেই এই সংগ্রহের সূচনা করেন। কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তার কাটা মাথাটি দিয়ে মোমের প্রতিকৃতি তৈরি করতেন তুসো। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত নমুনাটি হচ্ছে প্রথম ফরাসি রাজার কাটা মাথার প্রতিকৃতি। এরপরই শুরু হয় মাদাম তুসো জাদুঘরের পথচলা। এই জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা মাদাম তুসোর আসল নাম ‘আনা মারিয়া গ্রোশোলজ’।

 

মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম [যুক্তরাষ্ট্র]

এই জাদুঘরটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ওয়েস্টার্ন হেমিসফেয়ারে অবস্থিত। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭০ সালে। এখানে এলে আপনি আধুনিকতা এবং ঐতিহ্যের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ পাবেন। কারণ আধুনিককাল এবং প্রাচীনকাল মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি দর্শনীয় বস্তু রয়েছে এই জাদুঘরে। এখানে আপনি ইসলামী সভ্যতার বিভিন্ন চিত্রকর্ম যেমন পাবেন তেমনি পাবেন ইউরোপিয়ান অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ আরও অনেক কিছু। ইতিহাসভিত্তিক অস্ত্র এবং বর্মের সব চিত্রকর্ম আপনাকে ভাবিয়ে তুলবে পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে। আর এ কারণেই এই মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম পেয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি। এই মিউজিয়াম শুধু নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর ইতিহাস তুলে ধরেছে তা নয়, বরং সারা পৃথিবীর এক সংক্ষিপ্ত ঐতিহাসিক রূপ আপনি দেখতে পাবেন এখানে। বিখ্যাত জার্মান পেইন্টার আলব্রেস্ট দুরের খোদাই করা অ্যাডাম এবং ইভের মূর্তির জন্যও এই জাদুঘরটি বিখ্যাত। এশিয়া, গ্রিক, ইউরোপিয়ান, মিসরীয়, ইসলামিকসহ বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য শিল্পকলা রয়েছে জাদুঘরটির সংগ্রহে। সুন্দর ঝরনা, সিঁড়ি আর লম্বা জানালা— সব মিলিয়ে রাজপ্রাসাদের সঙ্গে তুলনা করা যায় জাদুঘরটিকে।

 

ভ্যাটিকান জাদুঘর [ভ্যাটিকান]

মূলত ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের জন্য এই জাদুঘরটি বানানো হয়। তবে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। ভ্যাটিকান সিটিতে এই জাদুঘরটি অবস্থিত। এই জাদুঘরে যে একবার প্রবেশ করেছেন সেই বলেছেন কেউ এখানে এসে সিসটাইন চ্যাপল এবং র‍্যাফেলের সংগ্রহশালাটি যেন মিস না করে! আসলে এরকম প্রায় ২২ ধরনের আলাদা আলাদা সংগ্রহশালা নিয়েই এই ভ্যাটিকান জাদুঘরটি। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা থেকে শুরু করে মিসরীয় চিত্রকর্ম সবই প্রায় রয়েছে। এই জাদুঘরটিও কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা গোষ্ঠীর ইতিহাস ধারণ করেনি। বরং এটি ধারণ করছে সমাজ ও সংস্কৃৃতির এক অপূর্ব ঐতিহাসিক নিদর্শন। বিভিন্ন মানচিত্র এবং আধুনিককালের ধর্মীয় অনেক চিত্রও সংগ্রহশালায় আছে। দীর্ঘ ৯ মাইলজুড়ে রোমান ক্যাথলিক চার্চের ভ্যাটিকান সংগ্রহশালা নিয়ে এই মিউজিয়াম। বছরে প্রায় ৪০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থী ওই মিউজিয়ামে যান। ওই মিউজিয়ামেও লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, রাফায়েল এবং মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর মতো বিখ্যাত চিত্রকরদের আঁকা ছবিও আছে। দ্য ভ্যাটিকান মিউজিয়াম ১৫০৬ সালে ভ্যাটিকান সিটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

ব্রিটিশ মিউজিয়াম [যুক্তরাজ্য]

হাজার বছরের ইতিহাস সংবলিত নানা নিদর্শন সংরক্ষিত আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। ৭৫ হাজার বর্গমাইলের এই মিউজিয়ামে ৮ মিলিয়ন ঐতিহাসিক বস্তু রয়েছে। প্রতি বছর এখানে ৫.৯৩ মিলিয়ন মানুষ ভ্রমণ করতে আসে। এর বর্তমান পরিচালক নেইল ম্যাক গ্রেগর। লন্ডনের এই বিখ্যাত জাদুঘরটি মানব সভ্যতা ও ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন। সংগ্রহের সেই তালিকায় পৃথিবীর পুরো ইতিহাসটাই যেন লুকিয়ে আছে। এটি প্রাচীন জাদুঘরগুলোর একটি। জাদুঘরটি ১৭৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত নানা চিত্রকর্মের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে এটি বর্তমানের অন্যতম সেরা মিউজিয়াম। পদার্থবিজ্ঞানী স্যার হ্যান্স স্লোয়েনের সংগৃহীত জিনিসপত্রের ওপর ভিত্তি করেই জাদুঘরটি শুরুতে গড়ে ওঠে। তিনি প্রায় ৭১ হাজারেরও বেশি বস্তু প্রদান করেছিলেন। বর্তমানে পুরো জাদুঘরটির সংগ্রহশালা ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে। তবে এর মধ্যে মাত্র ৪০ লাখ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। প্রতি বছর গড়ে ৬০ লাখ দর্শনার্থী এই জাদুঘরটি দেখতে যান। মিসরীয় সভ্যতারও বিশাল অংশ রয়েছে এখানে। এক কথায় সেখানে গেলে আপনি হারিয়ে যাবেন ইতিহাসের পাতায়।

 

ইজিপশিয়ান জাদুঘর [মিসর]

মিসরের বিখ্যাত সম্রাট তুতেনখামেনের সমাধিসহ বিখ্যাতদের সব সমাধি রয়েছে ইজিপশিয়ান জাদুঘরে। ইজিপশিয়ান জাদুঘরের নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটি মিসরে অবস্থিত। নীল নদের তীরে প্রাচীন মিসরীয়রাই পৃথিবীর সভ্যতার সূচনা করেছিল। সেই সব প্রাচীন সভ্যতার অনেক নিদর্শন আছে এই জাদুঘরে। বিখ্যাত সব ভাস্কর্যও রয়েছে এখানে। সিংহ দৈত্যের ভাস্কর্যও আকর্ষণীয় বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে। মিসরীয় সভ্যতা অনেক পুরনো আর অনেক বেশি সমৃদ্ধ। ফলে এই জাদুঘরটিও অনেক বেশি বিখ্যাত পৃথিবীজুড়ে। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৫৩ সালে। আরও রয়েছে বিখ্যাত সব ভাস্কর্য। যার মধ্যে স্ফিংস দৈত্যের ভাস্কর্য সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। আকর্ষণীয় বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসরীয় সভ্যতার হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের অনেক কিছুই এই মিসরীয় সভ্যতা থেকে সংগ্রহ করা। তারপরও এই জাদুঘরে যা অবশিষ্ট আছে তার সংখ্যাটা বিশাল। শুনলে অবাক হবেন যে, প্রায় ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি ঐতিহাসিক সভ্যতার প্রত্নসামগ্রী রয়েছে এই জাদুঘরে।

 

হার্মিটেজ মিউজিয়াম [রাশিয়া]

এটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ও প্রাচীন জাদুঘর। শুরুতে এরমিতাজ ভবন ছিল সেন্ট পিটারসবুর্গের মিখাইলভ প্রাসাদে। পরবর্তীতে সরকারি অর্থায়নে সেন্ট পিটারসবুর্গের শ্রেষ্ঠ তিনটি প্রাসাদ বরাদ্দ করা হয়। বিশ্বের জনপ্রিয় জাদুঘরগুলোর তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে জাদুঘরটি।

১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট পিটারসবুর্গের তৎকালীন রানী দ্বিতীয় ক্যাথরিনের নির্দেশে জাদুঘরটির নির্মাণ শুরু হয়। ১৮৫২ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শিশকিন, লেভিতান, আইভাজোতুস্কি, কুইনজি, রোপিনসহ আরও অনেক বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে এখানে।

প্রতি বছর দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এ বিখ্যাত জাদুঘরটি দেখতে আসেন। জাদুঘরটির তিন মিলিয়ন আইটেমের সামান্য কিছুই প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। ছয়তলা বিশাল ভবনটিতে উইন্টার ভবন, ছোট আশ্রম, নিউ আশ্রম, প্রাচীন আশ্রম ও হার্মিটেজ নামের ভবনটি সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মানুষ এই জাদুঘরটি প্রদর্শনে আসেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর