শিরোনাম
শনিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বসেরা এয়ারলাইনস

তানিয়া তুষ্টি

বিশ্বসেরা এয়ারলাইনস

মানুষের মনে আজন্ম ইচ্ছা, পাখির মতো আকাশের বুকে শূন্যে পাখা মেলার। সেই ইচ্ছা থেকে বিমানের আবিষ্কার। কিন্তু আধুনিকতার এই যুগে দূরের পথ দ্রুত পাড়ি দিতে ভরসা বিমানই। আর মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গোটা বিশ্বে যাত্রীসেবা দিতে রয়েছে অসংখ্য এয়ারলাইনস। একেক এয়ারলাইনের সেবার মান একেক রকম হয়। তার আবার রয়েছে মানের বিচার। এদিক থেকে বিশ্বসেরার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশকিছু বিমান। 

 

কাতার এয়ারলাইনস

দোহাভিত্তিক এয়ারলাইনস কাতার এয়ারলাইনস। গ্রাহকদের কাছ থেকে ফ্লাইট বিনোদন এবং আরামদায়ক সিটের জন্য সবার কাছে সমাদৃত। এমনকি বিশ্বের দ্বিতীয় বিনোদননির্ভর এয়ারলাইনস এবং বিজনেস ক্লাসের নিশ্চয়তা দেয়। এই এয়ারলাইন কমপক্ষে ১৫০টি গন্তব্যে যায়। এ ছাড়াও তাদের পরিসেবা বাড়ানোর জন্য নিজেদের তালিকায় সর্বাধুনিক বিমানের সংযোজন ঘটাচ্ছে। কাতার এয়ারলাইনস তাদের সেবার মানের জন্য মধ্যপ্রাচ্য থেকে বেস্ট এয়ারলাইনস, ওয়ার্ল্ড বেস্ট বিজনেস ক্লাস এবং বেস্ট ফার্স্ট ক্লাস এয়ারলাইন লাউঞ্জের পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।

 

এয়ার নিউজিল্যান্ড

বিশ্বের সবচেয়ে সেরা এয়ারলাইনস নিউজিল্যান্ডের জাতীয় এয়ারলাইনস এয়ার নিউজিল্যান্ড। এয়ারলাইনসটির কার্যালয় নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে। ১৯৬৫ সালের আগে এটির নাম ছিল তাসমান এম্পায়ার এয়ারওয়েজ লিমিটেড। সে সময় শুধু অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড রুটে যাত্রীসেবা প্রদান করত। তবে বর্তমানে এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যসহ ১৯টি দেশের ৩১টি আন্তর্জাতিক ও ২১টি অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে। এয়ার নিউজিল্যান্ডে ফ্লাইট চলাকালীন গ্রাহক অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ইতিবাচক। সিট কমফোর্ট, ফ্লাইট চলাকালীন বিনোদন, কেবিনের অবস্থা, পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশিত খাবারের মান খুবই উন্নতমানের। দীর্ঘ যাত্রার ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এয়ার নিউজিল্যান্ড এয়ারলাইনস সাধারণত বোয়িং জেট বিমানগুলো ব্যবহার করে থাকে। তবে অভ্যন্তরীণ রুট এবং স্বল্পপাল্লার যাত্রার ক্ষেত্রে তাদের এয়ারবাস বিমানের ব্যবস্থা আছে।

 

কান্তাস এয়ারওয়েজ

সেরা এয়ারলাইনসের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা কান্তাস এয়ারওয়েজ। ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত কান্তাস এয়ারওয়েজ বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন এয়ারওয়েজ। প্রথমদিকে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীসেবা দিলেও ১৯৩৫ সাল থেকে এটি আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রা পরিচালনা করে। কান্তাসের পূর্ণরূপ কুইন্সল্যান্ড অ্যান্ড নর্দার্ন টেরিটোরি এরিয়াল সার্ভিস। এর একটি ডাকনাম আছে ‘দ্য ফ্লাইং ক্যাঙ্গারু’। ২০১২ সালে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ে কান্তাস এয়ারওয়েজ ১০ বছরের জন্য এমিরেটস এয়ারলাইনসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি করার পরের বছরের রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা আয় করে কান্তাস এয়ারওয়েজ। আর বছরে বছরে উন্নতি করে। বর্তমানে তারা বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা এয়ারলাইনস হিসেবে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছে।

 

ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া

সেবার মান বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা এয়ারলাইনসের চতুর্থ স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এয়ারলাইনস এটি। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এয়ারলাইনসটি ২০০৬ সাল পর্যন্ত ভার্জিন ব্লু এয়ারলাইনস নামে পরিচিত ছিল। ২০১১ সাল থেকে ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া নামে পরিচিতি পায়। ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে। এটি বিশ্বজুড়ে ৫২টি গন্তব্যস্থলে যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে।

 

ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ

বিশ্বসেরা এয়ারলাইনসের পঞ্চম স্থানে রয়েছে পশ্চিম সাসেক্স এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক এয়ারলাইনস ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ। এটি হলো ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ লিমিটেড এবং ভার্জিন আটলান্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের বাণিজ্যিক নাম। এটি একটি ব্রিটিশ এয়ারলাইনস। এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত যুক্তরাজ্যের ক্রাউলিতে। এটি লন্ডন হিথ্রো, লন্ডন গ্যাটউইক এবং ম্যানচেস্টার থেকে উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে।

 

অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ

অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (এএনএ) সব সময়ই সেরায় অবস্থান করছে। এ ছাড়াও বিশ্বের সবচেয়ে বড় বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারসও তারা পরিচালনা করে। গ্রাহকদের কাছ থেকে এরা পরিচ্ছন্নতা, সার্ভিস এবং নিরাপত্তার জন্য বেশি প্রশংসা পেয়ে থাকে। এর স্লাইড ফরোয়ার্ড স্টাইল, আসন বিন্যাস, যাত্রীর সার্বিক গোপনীয়তা এবং অন্য সব সুযোগ-সুবিধা থাকে অটুট। বিশ্বমানের সেবা প্রদানের জন্য বিশ্বের সেরা এয়ারপোর্ট সার্ভিস এবং বেস্ট এয়ারলাইন স্টাফ সার্ভিস ইন এশিয়া পুরস্কার জিতেছে।

 

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস

বিশ্বের সবচেয়ে সেরা এয়ারলাইনসের তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম একটি এয়ারলাইনস এবং সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী বিমান।

৬টি মহাদেশের ৩২টি দেশের প্রায় ৬২টি গন্তব্যস্থলে যাত্রীসেবা প্রদান করে।

প্রতিটি ফ্লাইটে বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু খাদ্য পরিবেশনের জন্য সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের সুখ্যাতি রয়েছে। এরা যাত্রীদের নিজ নিজ দেশ বা অঞ্চলের খাবার ফ্লাইটগুলোতে পরিবেশন করে থাকে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস দ্বারা পরিচালিত সর্বমোট বিমানের সংখ্যা ১০৬টি। এই এয়ারলাইনসটি বেস্ট এয়ারলাইন ইন এশিয়া, বেস্ট বিজনেস ক্লাস এয়ারলাইন সিট এবং প্রিমিয়াম ইকোনোমি ক্যাটারিংয়ের পুরস্কারপ্রাপ্ত।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স গ্রুপের এয়ারলাইন সম্পর্কিত অধীনস্থ অনেক সাবসিডিয়ারি রয়েছে। সিআইএ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং নির্মাণ কাজ সংক্রান্ত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোম্পানিটি রোলস রয়েস-এর মতো বিখ্যাত কোম্পানিসহ ২৭টি যৌথ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

 

দুবাই এমিরেটস

বিগত ৩০ বছর ধরে দুবাই এমিরেটস বিশ্বের সেরা এয়ারলাইনসের তালিকায় নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। ১৯৮৫ সালে মাত্র দুটি পুরনো বোয়িং বিমান ও ১০ মিলিয়ন ডলার মূলধন নিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হয়। তাদের সুদক্ষ পরিচালনায় এমিরেটস আজ বিশ্বের অন্যতম প্রধান বিমান সংস্থা।

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে তার প্রাসাদতুল্য হাবের মাধ্যমে একচেটিয়াভাবে এগিয়ে আছে। এই বিমানের এয়ারবাস সংখ্যা ৩৮০টি। সুপারজাম্বো এবং বোয়িং ৭৭৭টি ওয়াইড বিডি জেট নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহরে আছে। তাদের বিমান বহরে কোনো ছোট বিমান নেই। তাদের সঙ্গে বিশ্বের ১২০টি দেশের ১০ হাজার ৭৮৫ জন কেবিন ক্রু কাজ করে। বিনোদনের জন্য ব্যবস্থা, মিউজিক, ভিডিও, এমনকি লাইভ টিভিতে স্পোর্টস সম্প্রচারের ব্যবস্থাও আছে। বিমান সংস্থাটি প্রতি সপ্তাহে শুধু দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনাল থেকে ২৪০০ ফ্লাইট পরিচালনা করে। এমিরেটস পৃথিবীর তিনটি দীর্ঘতম বিরতিহীন বাণিজ্যিক যাত্রাপথে ফ্লাইট পরিচালনা করে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য বিমান সংস্থার মধ্যে এমিরেটসই বর্তমানে সবচেয়ে বেশি মুনাফা লাভকারী বিমান সংস্থা। 

 

সবচেয়ে বড় প্যাসেঞ্জার বিমান

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্যাসেঞ্জার বিমান এ-৩৮০ সুপারজাম্বো। দৈত্যাকার এই বিহঙ্গ আকাশে প্রথম ডানা মেলে ২০০৫ সালে। ৮৫৩ জন যাত্রী ধারণক্ষম এই বিমানে রয়েছে দোতলা প্যাসেঞ্জার কেবিন। মালামাল পরিবহনের জন্য আরও একটি কেবিন থাকায় ট্রিপল ডেকার নামেও পরিচিত। মালামালসহ বিমানের ওজন দাঁড়ায় ৫৬০ টনের বেশি। ল্যান্ড করার সময়ও প্রায় তিন কি.মি. রানওয়ে নিয়ে থাকে।  এ-৩৮০ এর সবচেয়ে সস্তা ইকোনোমি ক্লাসের সিটেও প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ২৫ সেমি ফ্লাট স্ক্রিন টিভি আছে। কম্পিউটার ইউএসবি কানেকশন, পাওয়ার সকেটে বিভিন্ন ডিভাইসের চার্জ করা সম্ভব হবে। এর পাখার দৈর্ঘ্য ৭৯.৮ মিটারের চেয়ে বেশি। বিমান আকাশে থাকা অবস্থায়, প্রবল বাতাস দেখা দিলেও বিমানের পাখা ১ মিটারের বেশি ভাঁজ হতে পারে, যা বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

 

বিলাসবহুল ইতিহাদ

ফাইভ স্টার রেটিংপ্রাপ্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বিমান ইতিহাদ এয়ারওয়েজ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা এটি। বিলাসবহুল আয়োজন, অতিথিসেবা, ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ও আতিথেয়তার ক্ষেত্রে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ রয়েছে নেতৃত্বমূলক অবস্থানে। ভ্রমণসেবায় একটি এয়ারলাইনের সামগ্রিক পারফরম্যান্স, অতিথিসেবা, প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের মান, কর্মরত সদস্যদের দক্ষতা ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই ও নিরীক্ষার ভিত্তিতে স্কাইট্র্যাক্স সার্টিফাইড করে থাকে।

সেদিক থেকে ইতিহাদের কেবিনগুলোর আসনসজ্জা, নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ বিনোদন ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা, আরামদায়ক সুযোগ-সুবিধা, ক্যাটারিং, ডিউটি ফ্রি সেলস এবং রিডিং ম্যাটেরিয়ালস ইত্যাদির ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনসের থেকে ইতিহাদ এগিয়ে। এয়ারওয়েজের রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল ট্রিপের ব্যবস্থা। এর ফার্স্টক্লাস স্যুটে আপনি পাবেন ২৩ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভি, মিনি বার, কনভারটেবল ৮ ফুট ছয় ইঞ্চি বিছানা যা ম্যাসাজ চেয়ার হিসেবে কাজ করে। এতে থাকবে ল্যাপির জন্য কানেকটিভিটি পোর্টসহ অন্য সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ২০০৩ সালের জুলাইয়ে আরব আমিরাত সরকার আবুধাবিভিত্তিক এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে। ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ৫৫টি দেশের ৮৫টি গন্তব্যে পৌঁছয়। প্রতি সপ্তাহে ১৩০০-এরও অধিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। ইতিহাদের সংগ্রহে রয়েছে ৬৭টি এয়ারবাস এবং বোয়িং বিমান।

 

 

কার্গো বিমান

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্গো বিমান

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্গো বিমানের নাম অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ মিরিয়া। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বা বর্তমান রাশিয়া বিমানটি নির্মাণ করে। ১৯৮৮ সালের ২১ ডিসেম্বর অ্যান্টোনভ এএন-২২৫ মিরিয়া যাত্রা শুরু করলেও এখন পর্যন্ত তার থেকে বড় কোনো কার্গো বিমান নির্মাণ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে বড় বিমানের আসনটি দখল করে রাখায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রমাণ মেলে। এটির ন্যাটো রিপোর্টিং নেইম কোচ্ছাপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর এই এয়ারক্রাফটির মালিক ইউক্রেন। কোচ্ছাপের ডানার দৈর্ঘ্য ৮৮ মিটার বা ২৯০ ফুট। এ ছাড়া বিমানের প্রস্থ ৮৪ মিটার বা ২৭৫.৭ ফুট। এর উচ্চতা ৫৯.৫ ফুট যা একটি ৫ তলা বিল্ডিংয়ের সমান। উইং এরিয়ার জন্য জায়গার প্রয়োজন হয় ৯৭৮০ স্কয়ার ফুট। ফুয়েল ক্যাপাসিটি ৩ লাখ কেজি। বিমানটি ওড়ানোর জন্য কমপক্ষে ছয়জন ক্রু প্রয়োজন হয়। কোচ্ছাপ নির্মিত হয়েছিল বুরান স্পেস শাটল ও তার রকেট বুস্টার পরিবহনের জন্য। পরবর্তীতে অ্যান্টোনভ এয়ারলাইনস এটি বিশেষ মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করছে। বিমানটিতে রয়েছে ৩২টি চাকা।

এই চাকাগুলো টেক অফের সময় সর্বোচ্চ ৬৪০ টন ওজন নিতে পারে। তবে বিমানটিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ওজন নেওয়া হয়েছে ১৯০ টন প্রায়, যা একটি বিশ্বরেকর্ডও বটে। বিমানটি স্পেস শাটল পরিবহনের কাজেও ব্যবহৃত হয়েছে। বিমানটি সর্বোচ্চ ৮৫০ কি.মি. গতিতে উড়তে পারে। নির্মাতা সংস্থার পরিকল্পনা ছিল এ ধরনের আরেকটি বিমান তৈরি করার। তবে এ পরিকল্পনা অর্থাভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা করছে দ্বিতীয় বিমানটির নির্মাণ দ্রুত শেষ করার।

 দ্বিতীয় বিমানটি নির্মিত হলে বিমানেই ২৫০ টন ওজন তোলা যাবে বলে আশাবাদী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। সে বিমানটি নির্মাণে ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ পড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এই এয়ারক্রাফটি বছরে দুই-একবার আকাশে উড়ে। কিছুদিন আগে ইউক্রেন এই এয়ারক্রাফটির প্রযুক্তি চীনের কাছে বিক্রি করে দেয়।

 

সেরা কেবিন ক্রু

বিশ্বে এয়ারলাইন ব্যবসায় নিয়োজিত আছে অসংখ্য এয়ারলাইনস। গ্রাহকসেবা প্রদান ও আস্থা অর্জনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সফলতা আনা তাদের উদ্দেশ্য। এখানে কারও চেয়ে কারও প্রচেষ্টার কমতি থাকে না। সেবার মান বিচারে রীতিমতো এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাও হয়। তাদের প্রদত্ত সেবার গুণগত মান বিচারে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের ব্যবস্থাও আছে। তবে এয়ারলাইনে সবচেয়ে সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হলো ‘বেস্ট এয়ারলাইন কেবিন স্টাফ’ পুরস্কার। বিশ্ব এয়ারলাইনস পুরস্কারের প্রিমিয়ার বিভাগ এটি। সর্বোচ্চ মানের সেবা দিয়ে এই পুরস্কারটি অর্জন করতে হয়। পুরস্কারটি কোনো এয়ারলাইনসের কেবিন স্টাফদের অল রাউন্ড পারফরমেন্স ঘোষণা করে। এ ছাড়াও হার্ড সার্ভিস যেমন- বিমান চালনা কৌশল, দক্ষতা, মনোযোগী ভূমিকা ইত্যাদির দিক বিবেচনা করে। একই সঙ্গে কোমল সেবাদান যেমন কেবিন ক্রুদের বিজ্ঞ আচরণ, বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা এবং সর্বোপরি আতিথেয়তা গ্রাহকদের মুগ্ধ করার মতো থাকতে হয়। আধুনিক এই সার্ভিসে পাশ্চাত্যের দেশগুলোকে পেছনে ফেলে শীর্ষে অবস্থান করছে এশিয়ান একটি এয়ারলাইন। এ ছাড়াও এশিয়ার মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ এবং এমিরেটস রয়েছে শীর্ষ দশের মধ্যে। বিশ্বের সেরা বিমান কেবিন ক্রু নির্বাচিত হয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার গারুদা এয়ারলাইনস। কেবিন ক্রুদের কৌশল, মনোযোগ, কর্মক্ষমতা এবং অতিথিপরায়ণতার ওপর নির্ভর করে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সম্প্রতি সেরা ২০ এয়ারলাইনসের এই তালিকা প্রকাশ করেছে ‘স্কাইট্রাক্স ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইনস অ্যাওয়ার্ড’। তালিকায় থাকা এয়ারলাইনসগুলো হচ্ছে—

১. গারুদা এয়ারলাইনস

২. জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (এএনএ)

৩. তাইওয়ানের ইভা এয়ার

৪. থাই এয়ারওয়েজ

৫. সিঙ্গাপুর এয়ারওয়েজ

৬. কাতার এয়ারওয়েজ

৭. এশিয়ান এয়ারলাইনস

৮. জাপান এয়ারলাইনস

৯. ক্যাথে প্যাসিফিক, হংকং

১০. হাইনান এয়ারলাইনস, চীন

১১. অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস

১২. লুফথানসা এয়ারলাইনস, জার্মানি

১৩. ওমান এয়ার

১৪. ইতিহাদ এয়ারওয়েজ

১৫. এমিরেটস এয়ারলাইনস

১৬. মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস

১৭. কেএলএম এয়ারলাইনস

১৮. ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া এয়ারলাইনস

১৯. সুইচ আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস

২০. টার্কিস এয়ারলাইনস

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর