রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভয়ঙ্কর রোগ নিয়েও অনুপ্রেরণীয় তারকা

তানিয়া তুষ্টি

ভয়ঙ্কর রোগ নিয়েও অনুপ্রেরণীয় তারকা

তারকারা সব সময়ই পরিচিত হন তাদের চাকচিক্য ও গ্ল্যামার দিয়ে। কিন্তু প্রায়ই এই চাকচিক্য তাদের প্রতিদিনকার বাস্তব জীবন থেকে পালিয়ে যায়। তারাও কঠিন রোগে জর্জরিত হন। কিন্তু জীবনের পথ চলা থেমে থাকে না। কঠিন রোগকে জয় করে আবার হাসেন জয়ের হাসি। আর এই অর্জন পরিণত হয় ভক্তদের অনুপ্রেরণায়।

 

কিম কার্দাশিয়ান [সোরিয়াসিস]

মার্কিন রিয়েলিটি টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, অভিনেত্রী, সমাজকর্মী, ব্যবসায়ী এবং দাপুটে মডেল হিসেবে পরিচিত কিম কার্দাশিয়ান। টেলিভিশন রিয়েলিটি ব্যক্তির মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত। নিজের ব্যতিক্রমী নিতম্বের সৌন্দর্যের জন্য ভক্তদের কাছে তিনি আলাদাভাবে উপস্থাপিত হন। এ ছাড়া কিছুদিন পরপর কারণে-অকারণে পৌঁছে যান আলোচনার শীর্ষে। তারকা হয়ে ওঠার শুরুর দিকের কিছু বিতর্কিত ইতিহাসও যেন কিমের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু তাতে কী, কিমের রাখা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অবদান ও শোবিজ অঙ্গনে নিজের নৈপুণ্যতা তারকার তকমা বাড়িয়ে চলে একই ধারায়। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই সেলিব্রেটির জন্ম ও বেড়ে ওঠা লসঅ্যাঞ্জেলসে। এক বন্ধুর সহায়তায় মিডিয়ার নজরে আসা। কিন্তু ২০০৩ সালে সাবেক সঙ্গী রে জে-এর সঙ্গে রেকর্ড করা যৌনকর্মের ভিডিও ২০০৭ সালে ফাঁস হলে আরও আলোচনায় আসেন। এর পরের বছরেই তিনি এবং তার পরিবার রিয়েলিটি শো ‘কিপিং আপ উইথ দ্য কার্দাশিয়ানস’ করতে থাকেন। শো এর সাফল্যের পর তিনি আসেন কোর্টনি অ্যান্ড কিম টেইক নিউইয়র্ক এবং কোর্টনি অ্যান্ড কিম টেইক মায়ামিতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজের পরিচয়ে মোবাইল গেম, মেকআপ পণ্য এবং ২০১৫ সালে ছবির বই সেলফিস ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছেন। কিমকে তার কর্মজীবনে সফলই বলা চলে। কিন্তু প্রতিনিয়ত তাকে

সোরিয়াসিস নামক ত্বকের একটি প্রদাহজনিত রোগের সঙ্গে আপস করে চলতে হয়। এটি একটি জটিল রোগ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনো বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এই রোগে মানুষের ত্বকের কোষ স্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়। সরাসরি সূর্যের আলো ও শুষ্ক ত্বক এই রোগীর জন্য ক্ষতিকারক। তারপরও ত্বকের অস্বস্তিদায়ক পীড়া খুব সাবধানে ঢেকে নিজের কাজ করে চলেছেন গ্ল্যামার-কন্যা কিম কার্দাশিয়ান।

 

শ্যানেন ডোহার্টি [ক্রোহেন রোগ]

শ্যানেন মারিয়া ডোহার্টি একজন আমেরিকান অভিনেত্রী, প্রযোজক, লেখক এবং টেলিভিশন পরিচালক। তিনি ম্যাগি ম্যালিনের গার্লস জাস্ট উইট টু হু ফ্যান, হিথারের হিথর ডুক, বেভারলি হিলসের ব্রেন্ডা ওয়ালশ এবং চার্মেড প্রু হিলিভেলের জন্য দারুণভাবে পরিচিত। কর্মক্ষেত্রে তার প্রভাব বজায় থাকলেও ১৯৯৯ সালে আক্রান্ত হন ক্রোহেন রোগে। এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যা অন্ত্রে প্রদাহের সৃষ্টি করে। তীব্র পেটে চাপ এবং ডায়রিয়া দেখা দেয়। প্রতিকারহীন এই রোগ আলসার, ফাটল এবং ফিজার তৈরি করে। আক্রান্ত রোগীর সবসময় বমি বমি ভাব হয়। এ ছাড়াও ক্রোহেন রোগের আলাদা একটি জটিলতা হলো ফিস্টুলা। এতকিছু সামলে উঠতে না উঠতেই ২০১৫ সালে তার ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়ে। ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি চলে। কিন্তু তিনি হেরে যাওয়ার পাত্র নন, বরং রোগই তার কাছে হার মানে। ২০১৭ সালে নিজেকে জটিলতামুক্ত ঘোষণা করেন। প্রমাণ করেন কীভাবে রোগকে জয় করতে হয়।

 

ডেভিড বেকহ্যাম [ওসিডি]

ইংলিশ ফুটবলার ডেভিড বেকহ্যাম বিশ্বের অন্যতম বিত্তবান ক্রীড়াবিদ। তার বিশ্ব পরিচিতির অন্যতম কারণ জাদুকরী ফ্রি কিক এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু নিজস্ব জীবন। তিনি আমেরিকান গায়িকা ভিক্টোরিয়াকে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে বেভার্লি হিলস, ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করেন। তিনি দুবার ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ২০০৪ সালে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত পেশাদার খেলোয়াড়। এ ছাড়াও ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে তিনি গুগলে খেলাধুলা সম্পর্কিত সর্বাধিক অনুসন্ধানকৃত ব্যক্তিত্ব। ২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বেকহ্যাম মোট ৫৮টি প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ইংল্যান্ড ফুটবল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি অধিনায়ক থেকে পদত্যাগ করেন। তার এত এত অর্জন জটিল রোগ অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) এবং বহিঃস্থ সিনড্রোমকে সঙ্গে নিয়েই করতে হয়েছে। অথচ এই রোগ যাদের শরীরে বাসা বাঁধে তারা মারাত্মকভাবে অস্থিরতায় ভোগেন। এ ছাড়াও তাদের পুরো দেহে অধিকাংশ সময় একটি যন্ত্রণা খেলে যায়।

 

পামেলা অ্যান্ডারসন [হেপাটাইটিস সি]

হলিউডের ‘বেওয়াচ’ খ্যাত অভিনেত্রী পামেলা অ্যান্ডারসন। যৌনতা ও স্বল্পবসনার কারণে তিনি হলিউডে প্রায়ই বিতর্কের ঝড় তোলেন। আবার নিখুঁত অভিনয়শৈলীর গুণে তিনি সর্বদা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। অভিনয় করেছেন অ্যাকশন, কমেডিসহ বিভিন্ন ধরনের মুভিতে। অথচ এই রগরগে দাপুটে তারকা বহুকাল ধরেই হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তারপর নিয়মিত চিকিৎসা নিয়েছেন। অবশেষে এই রোগ থেকে মুক্তি মিলেছে তার।  ২০০২ সালে পামেলার দেহে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস ধরা পড়ে। ২০০১ সালে সাবেক স্বামী রকস্টার টমি লির ব্যবহারকৃত ট্যাটু আঁকানোর সুচ ব্যবহারের মাধ্যমে এই ভাইরাস আসে তার দেহে। তাকে লিভার বায়োপসিতে ভুগতে হয়েছিল। তাই প্রতি বছরই চেকআপ করাতে হতো। এর কোনো স্থায়ী নিরাময় নেই। তবুও সচেতনতা ও নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখা সম্ভব। অসচেতনতায় এর ক্ষতিকর প্রভাব বাড়তে থাকে। পামেলা পৃথিবীর সব হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্তদের রোগমুক্তি কামনা করেন। এমনকি জনগণের মাঝে হেপাটাইটিস রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন হলিউড অভিনেত্রী পামেলা অ্যান্ডারসন। পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভক্তদের এ বিষয়ে সচেতন করা ও উৎসাহ দেওয়াটাকে একটি দায়িত্ব মনে করেন। তাই ভক্তদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত শরীর পরীক্ষা করার ভিতর লজ্জার কোনো কিছু নেই। এ বিষয়টি নিয়ে বিব্রত হওয়ারও কিছু নেই।’

 

সালমান খান [ট্রাইজেমিনাল নিউরোলজিয়া]

বজরঙ্গি ভাইজান খ্যাত সালমান খানের বলিউড দাপটের কথা সবাই জানে। নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে লাখ-কোটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই সালমানও নার্ভের রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরোলজিয়া’। এসব রোগী এমন তীব্র যন্ত্রণায় আক্রান্ত হন যে হিতাহিত ভুলে যান। যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তাদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা পর্যন্ত দেখা দেয়। রোগটি মাথাচাড়া দিলে ব্যথা কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কখনো দেখা যায় কিছুক্ষণ পর পর যন্ত্রণা হতে থাকে। সাধারণত গাল, দাঁত, মাড়ি, চোখ কিংবা অনেক সময় কপালের দিকে এই ব্যথা ছড়িয়ে যায়। এ ধরনের রোগীর শরীরে তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে। আর তাই অত্যধিক ওজন তোলা এবং অ্যাকশন দৃশ্য করায় ডাক্তারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অভিনেতা সালমানের জন্য।

 

মনীষা কৈরালা [ওভারিয়ান ক্যানসার]

ক্যানসারের মতো কঠিন অসুখ জয় করে ফিরেছেন মনীষা কৈরালা। ওভারিয়ান ক্যানসার ধরা পড়ার পর ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করেন মনীষা। ২০১২-এর ডিসেম্বরে অস্ত্রোপচার হয় তার। কেমোথেরাপিও করান অভিনেত্রী। প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে মনীষা বর্তমানে সম্পূর্ণ ক্যানসারমুক্ত। তার এভাবে ওভারিয়ান ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ফেরার কথা সবারই জানা। সুস্থ হওয়ার পর এই অভিনেত্রী ক্যানসারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ‘ওয়াকস ফর লাইফ’ নামক একটি ইভেন্টে অংশ নেন। হাঁটার এই ইভেন্টটির উদ্দেশ্য হলো যারা ইতিমধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত তাদের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখা এবং তাদের জন্য ফান্ড সংগ্রহ করা। শুধু তাই নয়, যারা এই রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন, তাদের মানসিকভাবে সহযোগিতা করা।

 

আরও যারা আছেন

অমিতাভ বচ্চন [নিউরোমাসকুলার ডিজিজ]

১৯৮২ সালে কুলি ছবির চিত্রগ্রহণের সময় একটি মারামারির দৃশ্যে সহ-অভিনেতার সঙ্গে অভিনয়ের সময় বচ্চন তার অন্ত্রে মারাত্মক আঘাত পান। বচ্চন ছবিটিতে কোনো স্টান্টম্যান ছাড়া নিজেই বিপজ্জনক দৃশ্যগুলোতে অভিনয় করছিলেন। একটি দৃশ্যে তাকে টেবিলের ওপর পড়ে তারপর মাটিতে পড়ে যেতে হয়। কিন্তু তখন টেবিলের কোণ তার শরীরের নিম্নাংশে লেগে প্লিহা ফুটো হয়ে যায়। এর ফলে খুব রক্তপাত হয়। অস্ত্রোপচারে প্লিহা কেটে বাদ দেওয়া হয়। অনেকেই হয়তো জানেন না বলিউডের শাহেনশাহর নিউরোমাসকুলার ডিজিজ ছিল, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় ‘মেসথেনিয়া গ্রাভিস’ বলা হয়। এই রোগে সাধারণত চোখ ও মুখের মাসলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে কথা বলারও শক্তি থাকে না। যদিও অমিতাভ এখন পুরোপুরি সুস্থ।

শাহরুখ খান [৮ অপারেশন ও অবসাদ]

শাহরুখ খানকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এসআরকে হিসেবে ডাকা হয়। একজন বিখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং মানবপ্রেমিক হিসেবে কিং খানের নাম ছড়াতে কম কষ্ট হয়নি। কিন্তু কাজের সুবাদে মিলেছে নানা রকম শারীরিক জটিলতা। এ পর্যন্ত ৮ বার তার কাঁধে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এ ছাড়াও তার তীব্র অবসাদগ্রস্ততা আছে। এ অবস্থায় কোনো মানুষ নিরবচ্ছিন্নতার সঙ্গে জীবন কাটাতে ব্যর্থ হয়। যদিও সব বাধা পেরিয়ে এখন সুস্থভাবে কাজ করছেন কিং খান। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে বেশকিছু টেলিভিশন সিরিয়ালে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দিওয়ানা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি অসংখ্য বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

হানি সিং [দীর্ঘ অবসাদ]

রক গান শুনতে কে না ভালোবাসে! তাছাড়া তরুণ বয়সের ধর্মই তো হৈহুল্লোড় করা। তাদের সব দাবি মিটিয়ে সেরা গানের তালিকায় রাজত্ব করছেন হানি সিং। কোনো পার্টি এখন হানি সিংয়ের গান ছাড়া জমে না। তবে জানেন কি, হানি সিং দীর্ঘদিন অবসাদে ভুগেছেন? অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, গান-বাজনা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ চিকিৎসা সহযোগিতা নিয়ে ফের কামব্যাক করেছেন শিল্পী। হানি সিংয়ের আসল নাম হিরদেশ সিং। একাধারে একজন ভারতীয় র‌্যাপ গায়ক, আর্টিস্ট, মিউজিক প্রডিউসার ও অভিনয়শিল্পী হিসেবে বেশ জনপ্রিয় তিনি। গানের জগতে পা রাখার পরপরই হিরদেশ সিং থেকে তার নাম হানি সিং হয়ে গেছে। তবে তরুণদের মাঝে তিনি অবশ্য, ‘ইয়ো ইয়ো হানি সিং’ নামে বেশি পরিচিত। তিনি পাঞ্জাবের হসিরায়পুরে জন্ম নেন।

ইরফান খান [জন্ডিস]

বলিউডে যে কজনের অভিনয় একটু আলাদা চোখে দেখা হয় তাদের মধ্যে ইরফান খান অন্যতম। বেছে বেছে নিজের পছন্দ মতো ছবিতে অভিনয় করেন এই তারকা। এ কারণে সাফল্যও কম পাননি জীবনে। সেই ইরফান খান জানালেন, অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনি যেমন আলাদা রাখতে চান নিজেকে, তেমনই ভিন্ন ধরনের এক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে রোগটিকে বিরল বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জন্ডিসে আক্রান্ত তিনি। তবে ইরফানের টুইট অনুযায়ী বিষয়টি আরও জটিল বলেই ধারণা করা হচ্ছে। নিজের এমন রোগ নিয়েও তিনি সম্পূর্ণ আশাহীন নন। কিছুদিন বিরতি দিয়ে নিজেকে সুস্থ করবেন। তারপর বলিউডের অন্যতম প্রতাপশালী নায়িকা দীপিকার সঙ্গে অভিনয় করবেন বলে জানিয়েছেন।

যুবরাজ সিং [স্টেজ-১ ক্যানসার]

ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ও ফার্স্ট বোলার যুবরাজ সিং। ২০০০ সালে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলে যোগদান করেন। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে তিনি অংশগ্রহণ করেন। এই খেলায় যুবরাজ সিং প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কার অর্জন করেন। কিন্তু টুর্নামেন্ট চলাকালে তার রক্তবমি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও মাথা ঘামার সমস্যা দেখা দেয়। টুর্নামেন্টের শেষে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি বাম ফুসফুসে স্টেজ-১ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে একটি টিউমারও ধরা পড়ে। মূলত এই টিউমারই ক্যানসারের জীবাণু বহন করছিল। এরপর তাকে যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তিনি ২০১২ সালে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে টি-২০ ম্যাচে আবারও নিজেকে দাপুটে খেলোয়াড় হিসেবে আবিষ্কার করেন।

হৃত্বিক রোশন [মস্তিষ্কে ক্ষত]

বলিউড অভিনেতা হৃত্বিক রোশন সর্বাধিক জনপ্রিয় ভারতীয় সেলিব্রেটিদের মধ্যে অন্যতম। চলচ্চিত্র পরিচালক রাকেশ রোশনের পুত্র হৃত্বিক বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং এক দক্ষ নৃত্যশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ভারতের সর্বাধিক পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতাদের অন্যতম। ছয়টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার জয় করেছেন হৃত্বিক। ২০১১ সালে জাস্ট ড্যান্স  অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি প্রথম টেলিভিশনে উপস্থিত হন। এই অনুষ্ঠানের বিচারক হিসেবে তিনিই হয়ে ওঠেন হাজারো ভক্তের পছন্দের চলচ্চিত্র তারকা। অভিনয়ের পাশাপাশি হৃত্বিক একাধিক দাতব্য কাজের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন। কৃশ তারকা খ্যাত এই অভিনেতা ২০১৭ সালে মস্তিষ্কের একটি জটিল চিকিৎসা সম্পন্ন করেছেন। এত বড় একটি অসুস্থতাকে জয় করে আবার ফিরেছেন নিজের কাজে।

সর্বশেষ খবর