ডোনাল্ড ট্রাম্প
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানা সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় থাকেন বিশ্বমিডিয়ায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম রাষ্ট্রপতি। তিনি রাজনীতিতে আসার অনেক আগে থেকেই একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং লেখক হিসেবে আলোচিত। দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এবং ট্রাম্প এন্টারটেইনমেন্ট রিসোর্টের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। এই ব্যবসায়ী নিউইয়র্ক শহরের বাসিন্দা প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ফ্রেড ট্রাম্পের ছেলে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসাকে নিজের কর্মজীবন হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার পিতার যথেষ্ট অনুপ্রেরণা ছিল। ট্রাম্প পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন হোয়ারটন স্কুলে অধ্যয়নের সময় তার পিতার ‘এলিজাবেথ ট্রাম্প অ্যান্ড সান’ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। পরে ১৯৬৮ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি তার পিতার প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন। ১৯৭১ সালে ট্রাম্প তার পিতার প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে ‘দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’ করেন। বিশ্বের অন্যতম আলোচিত এই ব্যক্তি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এবং মিডিয়া তারকাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। ট্রাম্প ২০১৫ সালের ১৬ জুন রিপাবলিকান পার্টির অধীনে ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তার মনোনয়ন প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। প্রথম থেকে জনমত সমীক্ষায় পিছিয়ে থেকেও শেষে বাজিমাত করেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী। ডেমোক্র্যাট ভক্তদের স্বপ্ন ভেঙে দিলেন ট্রাম্প। হিলারি ক্লিনটনকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে হারিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম রাষ্ট্রপতি হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিতর্কিত নানা কর্মকান্ড কখনো তাকে পিছু ছাড়ে না। অনেকটা নিজের ইচ্ছামতো স্বাধীনভাবেই কর্মকান্ড পরিচালনা করেন এই পাগলাটে প্রেসিডেন্ট।
লুই চে হু
২১.৬ বিলিয়ন ডলারের মালিক ৮২ বছর বয়স্ক লুই চে হু। তিনি ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন বেশিদিন হয়নি। ২০১১ সালে তিনি প্রথম ক্যাসিনো ব্যবসা খোলেন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্যালাক্সি ম্যাকাও বিশ্বের অনতম সেরা ক্যাসিনো। চীনারা জুয়া খেলতে পছন্দ করে তার হোটেলটি তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। গ্যালাক্সি ম্যাকাওতে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, ডিজাইনার শপ, পারলার, স্পা এবং আকর্ষণীয় লেকভিউ। চীনা ধনকুবের তো বটেই, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনকুবের, খেলোয়াড়, সেলিব্রেটিদের সমাগমে সারা বছরই মুখরিত থাকে এই হোটেল ক্যাসিনো। ২৫ হাজার বর্গফুটের ক্যাসিনোটি ওয়াইন হোটেলের প্রধান আকর্ষণ। এতে রয়েছে ২২০০টি বেডরুম, ৫০টি রেস্টুরেন্ট, ৪৫০টি গেমিং টেবিল, ওয়েভ পুল এবং কৃত্রিম সমুদ্রসৈকত। পৃথিবীর বুকে স্বর্গ বানানোর চেষ্টা করেছেন লুই।
জেমস প্যাকার
ক্রাউন লিমিটেডের মালিক জেমস প্যাকার ৪.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। ক্যাসিনো ব্যবসায় হাতে খড়ি করেন যুবক বয়স থেকেই। পৈতৃক সূত্রে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন। এরপরই তিনি বিশ্বব্যাপী এক জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। তিনি নিজ দেশের বাইরেও অনেক ক্যাসিনো পরিচালনা করে আসছেন। তার তত্ত্বাবধানে আছে যুক্তরাজ্যের এস্পিনালস ক্যাসিনো, পেনসিলভেনিয়া ও নেভাদারায় ক্যানারি ক্যাসিনো, নিউজার্সির বেটফায়ার অনলাইন ক্যাসিনো, শ্রীলঙ্কার ক্রাউন ক্যাসিনো ইত্যাদি। এ ছাড়া রয়েছে ম্যাকাওভিত্তিক গেমিং গ্রুপ, মেলকোতে ক্রাউন। সারা বিশ্বে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করেছেন এই ক্যাসিনো কিং। সেই সঙ্গে জুয়ার ব্যবসা করে কামাচ্ছেন দুই হাত ভরে। সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী জেমস প্যাকার এখন অস্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ ক্যাসিনো গ্রুপের ডিরেক্টর।
জন পাউলসন
জন পাউলসনকে বলা হয় ইনভেস্টমেন্ট গড। পৃথিবীর অন্যতম সেরা ক্যাসিনো এমজিএম এর মালিক জন পাউলসন। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৭.৮ বিলিয়ন ডলার। তার প্রতিষ্টিত এই ক্যাসিনোর রয়েছে ১০টি ভিন্ন শাখা। লাস ভেগাসে রয়েছে সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো এই গ্রুপের। ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ বর্গফুটের বিশাল এলাকাজুড়ে নির্মিত এমজিএম ক্যাসিনোর গেমিং জোন। এটিই সিন সিটির সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো ফ্লোর। এখানে প্রতিদিন ১৩৯টি টেবিলে পোকারসহ বিভিন্ন রকমের জুয়ার আসর বসে। আরও রয়েছে ভিডিও জুজু, প্রোগ্রেসিভ স্লট ও মাল্টি গেম মেশিনসহ জুয়া খেলার নানা উপকরণ। সারা পৃথিবী থেকে ধনকুবেররা আসেন এই ক্যাসিনোতে। এখানে ১ ডলার থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। আবার কেউ কেউ ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত প্লে আউট করে থাকে। ৬০টি প্লাজমা টেলিভিশনে মাঠের খেলাধুলা নিয়েও চলে জুয়া খেলা। এসব খেলার মধ্যে জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় ফুটবল, সকার, মার্শাল আর্ট, বক্সিং ইত্যাদি। জুয়া খেলার পাশাপাশি এখানে জুয়াড়িরা চমৎকার সব খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।
শেলডন গ্যারি অ্যাডেলসন
১৯৩৩ সালে ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে জন্মগ্রহণ করেন শেলডন গ্যারি অ্যাডেলসন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাসিনো মুঘল এবং লাস ভেগাস, ম্যাকাও এবং সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন হোটেলের মালিক শেলডন অ্যাডেলসন ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক। জুয়ার সম্রাট বলা হয় তাকে। ২০১৩ সালের এক হিসাব বলছে অ্যাডেলসন প্রতিদিন গড়ে আয় করেন ৪১ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটিই সত্যি। আর স্বাভাবিকভাবেই তিনি ২০১৪ সালে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায়। বর্তমানে পাঁচ সন্তানের জনক ৮৬ বছর বয়স্ক অ্যাডেলসন থাকেন লাস ভেগাসে। অথচ প্রথম জীবনে শেলডন অনেক কষ্ট করেছেন। সাধারণ পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। তার বাবা ছিলেন ট্যাক্সি চালক আর মা ক্যাটারিনের দোকান চালাতেন।
১২ বছর বয়সে ২০০ মার্কিন ডলার নিয়ে দৈনিক পত্রিকার ব্যবসা শুরু করেন। সিটি কলেজ অফ নিউইয়র্কের ড্রপ-আউট এই ছাত্র একটার পর একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিজেকে জড়িয়েছেন। প্রায় অর্ধশত ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসা করেছেন। কোনোটাতেই থিতু হতে পারেননি প্রথম জীবনে। ১৯৮৮ সালে স্যান্ডস ক্যাসিনো খোলেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। মার্কিন রাজনীতিতে রয়েছে তার একটা শক্ত অবস্থান। ক্যাসিনো ডেভেলপার শেলডন অ্যাডেলসন ২০১২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেন রিপাবলিকান প্রার্থীকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য। বর্তমানে তিনি তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান লাস ভেগাস স্যান্ডাসের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।