মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

লকডাউনে যত শাস্তি

তানভীর আহমেদ

লকডাউনে যত শাস্তি

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশে দেশে কঠোর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে নাগরিকদের। চলছে লকডাউন, কারফিউ। প্রয়োজন ছাড়া ঘর ছেড়ে বেরোলেই সেনা-পুলিশের কাছে জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই লকডাউনে কঠোর হচ্ছে বেশিরভাগ দেশের সরকার। বড় অঙ্কের জেল-জরিমানার বিধান রেখে আইন পাস করা হয়েছে। নাগরিকদের সচেতনতার পাশাপাশি দন্ড কার্যকরের নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।

গুলির নির্দেশ ফিলিপাইনে

লকডাউনের নির্দেশ না মানলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির  প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রেসিডেন্ট দুতার্তে বলেন, ‘সবাই সহযোগিতা করুন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের সরকারি নির্দেশ মেনে চলুন। পুলিশ এবং মিলিটারিকে বলছি, তারা যদি কোনো সমস্যা করে এবং এমন কিছু করে যাতে আপনাদের জীবন হুমকিতে পড়বে তাহলে তাদের গুলি করে হত্যা করুন।’ সেখানে মাসব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু অনেকেই লকডাউন না মেনে রাস্তায় বের হচ্ছেন। জনসমাগম করছেন। সামাজিক দূরত্ব সেভাবে বজায় রাখছেন না। লকডাউনের মধ্যেই ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার কুয়েজন সিটির বস্তির অধিবাসীরা খাদ্যের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করে। এ ঘটনার পরই লকডাউন ভেঙে বাড়ির বাইরে কাউকে দেখলেই গুলির নির্দেশ দেন দুর্তাতে।

ভারতে জেল-জরিমানা

যারা লকডাউন অমান্য করবে কিংবা সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেবে; তাদের এক থেকে দুই বছরের জেলে পাঠাতে রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সঙ্গে লকডাউন মানাতে আরও কঠোর হতেও নির্দেশ দেয়। সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব কঠোর নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। আইন অনুযায়ী লকডাউন ভাঙার কারণ হিসেবে মিথ্যা দাবি করলে দুই বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা হতে পারে। লকডাউন বলবতে বাধা দেওয়ার শাস্তি দুই বছর পর্যন্ত জেল। যারা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর আক্রমণ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা করলে এক বছরের জেল হতে পারে। যদি এর ফলে কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয় তাহলে জেল হবে দুই বছরের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে লকডাউনে কঠোরতা দেখানোর কথা বলেন।

অস্ট্রেলিয়ায় তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি

করোনাকে ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। পুরো দেশ লকডাউনে না গেলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটি। কোয়ারেন্টাইনে থাকার চর্চা এখন থেকেই শুরু করেছে দেশটি। করোনা রোগী শনাক্ত পরীক্ষাতেও তারা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। ১ লাখ ৮৪ হাজার নাগরিকের করোনা পরীক্ষা করে ফেলেছে তারা। ঝুঁকির মধ্যে থাকায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনায় কঠোর হয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আইন না মানলে পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত অভিবাসন মন্ত্রী অ্যালান টাজ। পর্যটকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা মানতেই এই হুঁশিয়ারি। অ্যালান টাজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘দেশের আইন না মানলে পর্যটকদের জরিমানা হবে। ভিসার শর্ত না মানলে এবং তার প্রমাণ পেলে আপনাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়া আসার ক্ষেত্রে আপনার নামের পেছনে একটা দাগ থাকবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ বিদেশি পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রাশিয়ায় সাত বছরের জেল

রাশিয়াতে পাস হয়েছে নতুন আইন। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এই আইন এরই মধ্যে আলোচনার ঝড় তুলেছে। রাশিয়াতে কোয়ারেন্টাইন নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন হলে ওই আইনে সাত বছরের কারাদ-েরও বিধান রয়েছে।

রেকর্ড সময়ের মধ্যে এই কঠোর আইন এবং সেটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। সব ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। জীবিকানির্বাহ ও পারিবারিক প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো। মস্কোর নাগরিকদের ঘরের ১০০ মিটারের বাইরে বের না হতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্মার্ট পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে নগর কর্মকর্তারা এই বিধিনিষেধ নিয়ন্ত্রণ করছেন। রাশিয়ায় করোনার ধীর গতির বিস্তার চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। এ কারণেই তড়িঘড়ি করে সংসদে এই আইন পাস ও সংশোধনী আনা হয়। অন্যদিকে ভুয়া খবর ছড়ালেও নেওয়া হবে কঠিন ব্যবস্থা। নতুন আইনে বলা হয়, বাড়িতে অবস্থানরত সুস্থ ব্যক্তিরা বাড়ি থেকে বের হয়ে আদেশ লঙ্ঘন করলে বড়সড় জরিমানা দিতে হবে। করোনা নিয়ে ভুয়া খবর ছড়ালে পাঁচ বছর কারাদ- হবে।

পানামায় লকডাউনে নারী-পুরুষ আলাদা

পানামায় চলছে কঠোর কোয়ারেন্টাইন। সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে দেশটিতে। প্রতিদিন রাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলছে কারফিউ। জরুরি প্রয়োজন ও খাবার কিনতে বেরোনো ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও উদ্বেগজনকহারে লোকজন ঘরের বাইরে যেতে থাকায় নারী ও পুরুষের জন্য সপ্তাহের দিনগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়নে পানামায় নারী-পুরুষকে আলাদা চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নিয়মে শুধু নারীরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে সোম, বুধ ও শুক্রবার ঘরের বাইরে যেতে পারবেন। আর পানামার পুরুষরা ঘর থেকে বেরোতে পারবেন মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার। পানামা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ওই দিনগুলোতেও নারী ও পুরুষরা বেরিয়ে কেনাকাটার জন্য মাত্র দুই ঘণ্টা সময় পাবেন।

ইতালিতে জরিমানা, সর্বোচ্চ ২১ বছর জেল

চীনের বাইরে করোনাভাইরাসকে ঠেকাতে সবার আগে পদক্ষেপ নিয়েছিল ইতালি। তারাই প্রথম চীনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে। এয়ারপোর্টে বসায় থার্মাল স্ক্যানার। কিন্তু দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শণাক্ত হওয়ার পর তাদের চিকিৎসা দিয়েই গা ছাড়া ভাব নিয়েছিল তারা। ছিল না কঠোর কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ। যে কারণে আগে থেকেই দেশে ঢুকে পড়া করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্য। তখনই টনক নড়ে ইতালির। লকডাউন করে চেষ্টা করা হয় করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর। ৯ মার্চ পুরো দেশ রেডজোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা দেওয়া হয়। গৃহবন্দী হয়ে পড়ে নাগরিকরা। ইতালি পর্যটন নগরী। মানুষের কোলাহল থেমে গেল একদিনেই। ইতালি এখন ভুতুড়ে নগরী। সারা দেশে ফার্মেসি, খাবার ও জরুরি পণ্যের দোকান ছাড়া সব কিছু বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জাদুঘর, থিয়েটার, সিনেমাহল, স্টেডিয়াম, কনসার্টসহ জনসমাগমের স্থান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গণপরিবহন নেই বললেই চলে। লকডাউনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ইতালির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাস্তায় নেমেছে সেনা। সব শহরের প্রবেশদ্বারে সেনারা বসিয়েছে চেকপোস্ট। কেউ এক শহর ছেড়ে অন্য শহরে যেতে পারছে না। সেনা সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন রাস্তায় বের হওয়া প্রত্যেককে। রাস্তায় মাইকিং করে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ জানানো হচ্ছে। এরপরও যারা অকারণে বাইরে বেরোচ্ছেন তাদের জরিমানা গুনতে হচ্ছে, পড়তে হচ্ছে শাস্তির মুখেও। রেড জোনের আইন কেউ অমান্য করলে ২০৬ ইউরো জরিমানার বিধান করা হয়েছে। অন্যথায় ৩ মাস থেকে ২১ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাইকিং করে বাইরে যেতে নিষেধ করছে। করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দেশটিতে। তবে আশার কথা হচ্ছে, পুরো দেশে লকডাউন করার তিন সপ্তাহ পর সেখানে নতুন সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। পুরো ইতালিতে লকডাউন দেওয়ার পর সেটির কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে। সংক্রমণের হার কমে গেছে এবং আগের চেয়ে কম লোক হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক বলছেন যে, সামাজিক দূরত্বের পদক্ষেপের কারণে মার্চ পর্যন্ত ৩৮ হাজার মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে ইতালি।

নাইজেরিয়ায় গুলি

আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিশ^জুড়ে উদ্বেগ দেখা যায়। উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর থাকার পরও ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স করোনাভাইরাসের আক্রমণে পুরোপুরি ল-ভ- হয়ে পড়েছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র এখন মৃত্যুপুরী। নাইজেরিয়াতে করোনা সংক্রমণের পরই রাজধানী লকডাউন করে ফেলে। কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা বারবার প্রচার করা হচ্ছে। জনসমাগম নিষিদ্ধ। কঠোর অবস্থানে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছেন দেশটির সেনা সদস্যরা। তবু অনেকেই আইন ভেঙে রাস্তায় প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন। এরই মধ্যে এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সেখানে। করোনা আতঙ্কের মাঝে কোয়ারেন্টিন পালনে জনগণকে বাধ্য করতে মরিয়া দেশটি।

জার্মানিতে সর্বোচ্চ জরিমানা

কঠোর কোয়ারেন্টাইন পালন করছে জার্মানি। নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নিজের পরিবারের বাইরে খুব প্রয়োজন না হলে অন্য নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ না করার। কাজের জায়গা, বাজার করতে, জরুরি কাজ বা চিকিৎসকদের কাছে যাওয়া ছাড়া বাইরে সবার চলাফেরা নিষেধ করা হয়েছে। দুজনের বেশি মানুষ একসঙ্গে চলাচল করতে পারবে না। রেস্টুরেন্ট, দোকান ও বাড়িতে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। সব ধরনের অবকাশযাপন ও অন্য দেশে অবকাশভ্রমণ আপাতত বন্ধ রয়েছে। জার্মানির গুরুতর পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জনস্বার্থে প্রকাশ্য বা বাড়িতে বা অন্য কোনো স্থানে একসঙ্গে জমায়েত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হচ্ছে। জার্মানিতে জারি করা এসব বিধি ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা না মানলে কোনো কোনো রাজ্য ২৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে।

অস্ট্রিয়া ৩৬০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা

অস্ট্রিয়ায় চলছে কঠোর লকডাউন। ৯০ লাখ মানুষের দেশটিতে লকডাউন থাকবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। পাঁচজনের বেশি একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। সব  রেস্টুরেন্ট, বার বন্ধ। কেউ নিষেধাজ্ঞা না মানলে ৩৬০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।

সৌদিতে কারফিউ না মানলে বড় শাস্তি

সৌদিতে করোনাকে ঠেকাতে লকডাউন, কারফিউ জারি রয়েছে। কারফিউ না মানলে জরিমানাসহ কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। সৌদিতে কারফিউর সময়ে ঘরের বাইরে বের হলে প্রথমবার ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। পুনরায় আইন ভঙ্গ করলে জরিমানার পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। এর পরও যদি কেউ আইন অমান্য করে তা হলে অনূর্ধ্ব ২০ দিনের কারাদ- দেওয়া হবে। এ ছাড়া আইন অমান্যের অপরাধে বিদেশি কর্মীদের ডিপোর্ট (দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে) করা হবে। দেশটিতে ২১ দিনের কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে রোজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে পর দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর