শনিবার, ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় দেশে দেশে ঈদ উৎসব মলিন

তানভীর আহমেদ

করোনায় দেশে দেশে ঈদ উৎসব মলিন

মহামারী করোনাভাইরাসে কাবু গোটা বিশ্ব। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে কারফিউ, লকডাউন দেওয়া হয়েছে ঈদের দিনেও। বহু দেশে ঈদের জামাত না করার অনুরোধ ও ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহন ও যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই ফিরতে পারেননি পরিবারের কাছে। বন্ধু ও আত্মীয়ের বাসায় বেড়ানো যাবে না। বন্ধ রয়েছে দেশে দেশে শপিং মল, পর্যটন কেন্দ্র। ঈদ উৎসবের এমন চিত্র অভাবনীয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এবারের ঈদ উৎসবের এমন চিত্র। ঘরে বসেই ইবাদত, ঘরোয়া আয়োজনে উৎসবের প্রস্তুতি দেশে দেশে-

 

 

ঈদের দিন কারফিউ সৌদিতে

করোনা ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। সেখানে ঈদের দিন ২৪ ঘণ্টা কারফিউ থাকবে। ২৩ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত চলা ঈদ উৎসবের দিনগুলোতে চলবে এই কারফিউ। ঈদ উৎসব করতে গিয়ে যেন করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে না যায় সে কারণে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো খোলা রয়েছে সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য। দিনের বেলা কারফিউ না থাকায় এখন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্বাভাবিক চলাফেরায় কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। পবিত্র মক্কা নগরী ছাড়া দেশটির অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দারা এই সুবিধা পাবে। মক্কাকে ২৪ ঘণ্টার কঠোর কারফিউয়ের  আওতায় রাখা হয়েছে। ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। দেশটির গ্রান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শাইখ বলেন, মসজিদে ঈদের জামাত হবে না।

ঘরেই নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অঞ্চলগুলোর জন্য জারি রাখা হয়েছে বিধিনিষেধ। সেটা ঈদের দিনও থাকবে। এখন জরুরি ওষুধ ও খাদ্য ক্রয়ে দিনের বেলা বাইরে যেতে পারছে সবাই। তবে ঈদের দিন সেটাও পারবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. মোহাম্মদ আল-আব্দ আল-আলী সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে মানুষজন একত্র হলে তাতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করার পরই ২৪ ঘণ্টা কারফিউর ঘোষণা আসে। সৌদির ঈদের সংস্কৃতি বেশ আনন্দঘন। অন্যান্য বছর ঈদে তিন দিন সরকারি ছুটি থাকে। তাদের একটি প্রচলিত রীতি হলো পুরুষরা তাদের ছেলেমেয়ে, স্ত্রী নিয়ে বাবার বাসায় ঈদ পালন করেন। এবার এসব কিছুই করা হবে না। ঈদ উপলক্ষে খাবার ও উপহার দেওয়া, গরিবদের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ঈদে আত্মীয়-প্রতিবেশীরা এবার কেউ বেড়াতে আসতে পারবে না। অন্যান্য বছর অনেকেই বাইরে বিভিন্ন পার্কে বেড়াতে যায় ও একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে- এবার সেসব কিছুই হবে না।

 

আত্মীয়ের বাসায় যাওয়া হবে না ইন্দোনেশিয়ায়

করোনায় ঈদ উৎসবে নাগরিকদের নানা বিধিনিষেধে ঘরে আটকে থাকতে হবে ইন্দোনেশিয়ায়। ইন্দোনেশিয়ায় ঈদুল ফিতরকে ‘লেবারান’ বলা হয়। রমজানের শেষ দিনে সন্ধ্যা হতে না হতেই ঢোল বাজানো, নাচ, গান, নামাজ আর বয়ানের ভিতর দিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় ঈদ উৎসব শুরু হয়ে যায়। এবার সে চিত্র দেখা যাবে না। অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা বিস্তার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শহর জাকার্তায়। করোনার কারণে এই শহর থেকে মানুষের বের হতে ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে জাকার্তা থেকে বিভিন্ন প্রদেশে ১০ লাখ মানুষ তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। অন্যান্য সময় ৬০ লাখ পর্যন্ত মানুষ এ শহর ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে যায়। এখনো দেশের ভিতরে বিমান চলাচল করছে। প্রতিদিনই ৪ হাজার মানুষ ছুটছে পরিবারের কাছে। তবে শহর ছেড়ে বের হতে হলেই করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। রাস্তায় রাস্তায় রয়েছে চেকপয়েন্ট। চলাচলে বিধিনিষেধ, লকডাউন শিথিল করায় মানুষ বের হতে পারছে। ঘরেই নামাজ পড়ার ফতোয়া দেওয়া হয়েছে দেশটিতে। তাই ঈদের দিন ঘরের বাইরে মানুষের আনাগোনা কম থাকবে। ইন্দোনেশিয়ায় চালের গুঁড়ার পিঠা ‘কেতুপাত’ বানানো হয় যা দেশজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়। এবার সে পিঠা আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠানো হবে না বলেই মনে হয়। ঈদের দিনে বিগত বছরের কৃতকর্মের জন্য আত্মীয় বা বন্ধুর কাছে ক্ষমা চাওয়াটা ইন্দোনেশিয়ার ঈদ উদযাপনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। অনেক সময় এ ক্ষমার আবেদনসহ ঘরে ঘরে ঘুরে বেড়ানোর পালা শেষ হতে কয়েক দিন লেগে যায়। করোনার কারণে এবার ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। ঈদের দিনসহ ঈদের পরও লকডাউনে থাকতে হবে।

 

মিসরের রাস্তায় মিলবে না কোলাহল

মিসরে এবারের ঈদ হবে ঘরবন্দী থেকেই। ঈদের দিনও সেখানে থাকবে কারফিউ। বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই কারফিউ থাকবে সেখানে। তাই কারও বাসায় বেড়ানোর রীতিতে এবার ব্যতিক্রম দেখা যাবে। ঈদের দিন সকালের নামাজ দিয়ে উৎসব শুরু হয় সেখানে। কিন্তু করোনার কারণে জীবন রক্ষার অনুশাসন মানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিসর কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘরে নামাজ পড়ুন। ঈদের দিন বন্ধ থাকবে রাস্তার পাশে বাহারি দোকান। ক্যাফে রেস্টুরেন্টও বন্ধ। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হবে না এবার। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে পার্ক, সিনেমা, থিয়েটার কিংবা সমুদ্রতটে ভ্রমণ করতে পছন্দ করে অধিকাংশ মিসরীয়। এ বছর এসব পর্যটন স্পটে কেউ ভিড় করতে পারবে না। তবে ঘরেই ঈদ উৎসবের আয়োজন থাকবে সেখানে। ঈদের বিশেষ খাবার হিসেবে মিসরে ‘কাহক’ নামের এক ধরনের বিশেষ কুকি বা পিঠা বেশ জনপ্রিয়। সেই দশম শতাব্দীতে মিসর রাজপ্রাসাদ থেকে আবির্ভাব হয়েছে এই বিশেষ পিঠার, যার ভিতর খেজুরভর্তা, বাদাম বা টার্কিশ ডিলাইটের পুর দেওয়া হয়। এমনই আরেকটি মিষ্টি জাতীয় পদের নাম ‘কাতায়েফ’, যা মিসরজুড়ে জনপ্রিয়। এই খাবারগুলো তৈরি করে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উৎসব হবে সেখানে। ঈদের প্রথম দিনটি সবাই আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করে। এ বছর কারও বাসায় কেউ যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা থাকায় এই ব্যতিক্রম। শিশুরা বড়দের কাছ থেকে নতুন জামা এবং ঈদ সালামি পেয়ে থাকে সেখানে। শিশুদের জন্য মোটরসাইকেল ভাড়া করে শহর ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য এ বছর দেখা যাবে না। মিসরের মানুষ সবাই মিলে একসঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করে বলে তাদের রাস্তাগুলো এ সময়ে মানুষের ভিড় লেগে যায়। করোনার কারণে এবার সবাই ঘরবন্দী থেকে অন্যরকম এক ঈদ করবেন মিসরে।

 

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে হবে না ঈদের জামাত

পশ্চিমা দেশগুলোতে যেসব শহরে মুসলিম কমিউনিটি বড় সেখানে ঈদ উৎসবের চিত্রটাও বর্ণিল। অন্যান্য বছর মুসলমানরা একত্রিত হয়ে নামাজ আদায়ের পর শুভেচ্ছা বিনিময় করে, কুশল বিনিময়, ছোটদের উপহার ও বকশিশ প্রদান করে। করোনার কারণে এখন বেশিরভাগ দেশেই চলছে লকডাউন। ঘরের বাইরে চলাচলে নিষেধ বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আইনের কঠোরতা। তাই ঈদে যার যার ঘরে থেকেই উৎসব পালনের প্রস্তুতি। ব্রিটেনে ঘরেই ঈদ উৎসব করার অনুরোধ করা হয়েছে। মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন বলেছে, আপনারা ঘরে থাকুন। ভিডিও কলে স্বজন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। সেখানে নয় সপ্তাহ ধরে মসজিদ বন্ধ। ময়দানে ঈদের নামাজ পড়া হবে না সেখানে। ব্রিটেনের লিডসের মক্কা মসজিদের সিনিয়র ইমাম কারি মুহাম্মদ আসিম বলেছেন, ব্রিটিশ মুসলিম ইতিহাসে এবার প্রথম ঈদের নামাজ পড়া হবে না। এটা অকল্পনীয়। সারা মাস মানুষ এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে। এবার সেখানে প্রিয়জনকে ঈদ উপহার পাঠিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করার অনুরোধ জানানো হয়। একই দৃশ্য যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানে এবার ইসলামিক সেন্টার, খোলা মাঠ, কনভেনশন হলে নামাজ আদায় করা যাবে না। অন্যান্য বছর নিউইয়র্কের জর্জ এবং ব্রাউন কনভেনশন সেন্টার টেক্সাসের ডাউনটাউন, হিউস্টোন বিভিন্ন ইসলামিক সংস্থার অর্থায়নে ঈদ উৎসব পালন হলেও এবার তা হচ্ছে অন্য মাত্রায়। করোনায় আক্রান্তদের সাহায্য ও উপহার পৌঁছে ঈদ উৎসবের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঈদে অনেকে পরিবার-বন্ধুবান্ধব নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যান- এবার সব ধরনের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জার্মানিতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। তবে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে সামাজিক দূরত্ব মানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ঈদের নামাজ পড়া যাবে না মসজিদে। সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিম জার্মানি, জুমার নামাজ, ঈদের নামাজ মসজিদে না পড়ার ঘোষণা দিয়েছে।

 

দুবাই ও কাতারে লকডাউন জর্ডানে কারফিউ

করোনার কারণে ঈদের চিত্র বদলে গেছে দুবাইয়ে। দুবাই মসজিদ, প্রার্থনার জায়গা বন্ধ রাখা হয়েছে। সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে ঈদেও। এ সময় বাইরে বের হলে বা সামাজিক দূরত্ব না মানলে করা হবে জরিমানা। কেউ ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না প্রয়োজন ছাড়া। তাই পরিবারের কাছে যেতে পারেননি অনেকে। ব্যাংক নোট দিয়ে করোনা ছড়াতে পারে, তাই সেখানে শিশুদের ঈদ সালামি না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ঈদের নামাজের আগে সেখানে টিভিতে ১০ মিনিট ঈদ তাকবির প্রচার করা হবে। জর্ডানে ঈদের দিন থাকবে কারফিউ। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ চলবে। বন্ধু করে দেওয়া হয়েছে যান চলাচল। ঈদের দিন কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। করোনার কারণে কাতারে ৩০ মে পর্যন্ত সব ব্যবসা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। খাবার, ফার্মেসি, রেস্টুরেন্ট ডেলিভারি সার্ভিস ছাড়া সব ধরনের দোকান বন্ধ। ফ্যাক্টরি, কনস্ট্রাকশন, ইঞ্জিনিয়ার সাইট বন্ধ। খেলাধুলা নিষেধ। ঈদে কারও বাসায় গেলে মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব।

 

পাকিস্তানে উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি

মার্চের পর থেকেই করোনায় কাঁপতে শুরু করে পাকিস্তান। ৪০ হাজার আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরও দেশটিতে ঈদের আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ব্যাপারেও কঠোরতা নেই। মাস্ক না পরে মানুষ বাইরে যেতে পারছেন। খুলে দেওয়া হয়েছে শপিংমল। মানুষও ঈদ কেনাকাটায় ভিড় করছেন দোকানে। ঈদকে সামনে রেখে পাকিস্তানের শিথিল আচরণ নিয়ে সমালোচনা হলেও দেশটির মানুষের মধ্যে ঈদের উৎসব আয়োজনে প্রস্তুতি দেখা গেছে। দেশে কোনো মহামারী নেই, সুপ্রিম কোর্টের এমন মন্তব্যের পর পাকিস্তানে ঈদ পালনের আয়োজন বাড়তে শুরু করে। সকালে ঈদের নামাজ দিয়ে সেখানে ঈদের দিনটি শুরু হয়। নতুন পোশাক পরে সামর্থ্যবানরা। শিশুদের কিনে দেওয়া হয় খেলনা। আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর রীতি রয়েছে সেখানে। করা হয় আপ্যায়নের ব্যবস্থা। কয়েকদিন আগেই ২২ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত দেশটির সব দোকান, মার্কেট, রিটেইল শপ ঈদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

 

হাজার বছরের ঐতিহ্যের ব্যতিক্রম  তুরস্কে

তুরস্কে ঈদের সময় কড়াকড়ি করা হবে লকডাউন। করোনার কারণে ঈদেন দিন যেন কেউ বাইরে বের হতে না পারে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। রাস্তায় গণপরিবহন, গাড়ি চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ঈদের দিন কেউ যেতে পারবে না পার্ক, সমুদ্রসৈকতে। রেস্টুরেন্ট ও গাড়ি বন্ধ রাখায় সবাই সেখানে ঘরবন্দী। এবার তাই ঈদ উৎসবে বর্ণিল চিত্র থাকছে না তুরস্কে। সকালে সবাই নতুন জামা পরে নামাজ আদায় করার চিত্র মিলবে না। ঘরেই নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়রা একে অন্যের বাড়িতে না বেড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। তুরস্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হলো বিশেষ কায়দায় প্রবীণদের শ্রদ্ধা জানানো। এক্ষেত্রে তরুণরা প্রবীণদের ডান হাতে চুমুু দিয়ে তা নিজের কপালে ছুঁইয়ে দেন। এবার করোনা সতর্কতায় এই রীতি দেখা যাবে না।

 

বিধি মেনে ঈদ উৎসব মালয়েশিয়ায়

করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে থাকা দেশগুলোর একটি মালয়েশিয়া। ক্লাস্টার আকারে সেখানে করোনার বিস্তার হলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে তারা। এ কারণে অন্য দেশের তুলনায় ঈদ কিছুটা বর্ণিল হতে পারে দেশটিতে। লকডাউন শিথিল করা হয়েছে ঈদকে সামনে রেখে। ছোট ছোট দলে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও আংশিক লকডাউন আছে। এসব অঞ্চলে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের দিন বাইরে বের হতে পারবেন। ছোটরা ঈদ সেলামি নিয়ে ঈদের দিনটি শুরু করবে সেখানে। এ ছাড়া বন্ধুদের নিয়ে ছোট ঘরোয়া অনুষ্ঠানের রীতিও আছে সেখানে। রাতে গানের আয়োজন এবার হয়তো হবে না। রাস্তাঘাটে মশাল, আতশবাজি করা হচ্ছে না। ঘরে ঐতিহ্যবাহী খাবার রেন্দাং, কেতুপাট, লেমাং রান্না করে গৃহিণীরা ঈদ উৎসবে আমেজ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। খাবার রান্না করে প্রতিবেশী এমনকি অমুসলিমদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানোর প্রচলন থাকলে এবার সেটি হচ্ছে না। খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে করোনার কারণে। এ ছাড়ার সন্ধ্যার পর বাইরে বাজি উৎসবে এবার সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব না মানলে জরিমানা গুনতে হবে সেখানে।

 

দান করে ঈদ উৎসব  ইরানে

অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে ইরানে। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর ইরানে করোনা শুরুর দিকে বড় সংক্রমণ হয় দেশটিতে। কঠোর লকডাউনে সব বন্ধ রাখা হয়েছিল। লকডাউন শিথিল করায় ঈদকে সামনে রেখে দেশটিতে ব্যবসা ও কর্মজীবীদের বাইরে বের হতে দেখা যায়। খুলে দেওয়া হয়েছে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এমন অঞ্চলগুলো। এবারের ঈদে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা রয়েছে। কেউ যেন এবার বাইরে ঘুরতে না যান সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার রীতিতেও এবার ভাটা পড়তে পারে।

কেউ বাইরে ঘুরতে যেতে পারবেন না। ইরানে ঈদের দিন দান করাকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। দান করে ঈদ উৎসব          করবে ইরান। এদিনে প্রায় প্রতিটি মুসলিম পরিবার গরিবদের মধ্যে খাবার ও গরু বা ভেড়ার গোস্ত বিলিয়ে থাকে সচ্ছলরা। এবারও তা করা হবে।

সর্বশেষ খবর