বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ভয়ঙ্কর জাহাজ দুর্ঘটনা

সাইফ ইমন

ভয়ঙ্কর জাহাজ দুর্ঘটনা

প্রায় তিন মিলিয়ন জাহাজ সাগরে নানা সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হারিয়ে গেছে বা ডুবে গেছে। সমুদ্রের ঢেউয়ে বা প্রচ- ঝড়ের মধ্যে দিক হারিয়ে কিংবা ডুবু পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে এসব জাহাজ যাত্রীসহ নানা সময়ে তলিয়ে যায় সাগরের বুকে। এসব জাহাজের কাহিনি নিয়ে নানা সময়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র। টাইটানিকের কথা সবাই জানে। কিন্তু টাইটানিক ছাড়াও অনেক জাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আলোচিত হয়েছে। এ রকম কিছু জাহাজ নিয়ে আজকের রকমারি...

এসেক্স

টাইটানিক বিপর্যয়ের প্রায় ১০০ বছর আগে প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে দুর্ঘটনায় ডুবে গিয়েছিল ‘এসেক্স’ নামের একটি জাহাজ। হলিউডে এ নিয়ে একটি চলচ্চিত্রও রয়েছে। রন হাওয়ার্ড পরিচালিত চলচ্চিত্রটির নাম ‘ইন দ্য হার্ট অব দ্য সি’। অনেকেই হয়তো চলচ্চিত্রটি দেখে থাকবেন। মূল কাহিনি এসেক্সের অন্তর্ধান নিয়ে। জাহাজটি কেন ডুবেছিল তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা হয়েছিল ১৮২০ সালের দিকে। তারপর সেই কাহিনি একদিন লোকমুখে ঘুরতে ঘুরতে হারিয়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে একটি উপন্যাসও রয়েছে। মার্কিন ঔপন্যাসিক হারম্যান মেলভিলের ‘মবি ডিক’ উপন্যাসের উপজীব্য বিষয় ছিল এটি। এসেক্স ছিল তিমি শিকারের জাহাজ। তিমি শিকারিদের জগতে ‘লাকি’ বলে সুনামও ছিল জাহাজটির। শেষ যাত্রায় জাহাজটির ক্যাপ্টেন ছিলেন জর্জ পোলার্ড। তার সুনাম ছিল অনেক। পুরো ঘটনার সাক্ষী ছিল ১৪ বছরের এক কেবিন বয়। তার নাম টমাস নিকারসন। ম্যাসাচুসেটসের নানটাকেট বন্দর থেকে ১৮১৯ সালের ১২ আগস্ট এসেক্স শেষ যাত্রা শুরু করে। দক্ষিণ আমেরিকার তিমি অধ্যুষিত সমুদ্রে গিয়ে তিমি শিকার ও তিমির তেল সংগ্রহ ছিল এর উদ্দেশ্য। ১৮২০-এর জানুয়ারিতে এসেক্স কেপ হর্নে পৌঁছে। হঠাৎ জাহাজিদের মধ্যে অশুভ চিহ্ন দেখার গুজব রটে। যা রহস্যের জন্ম দেয়। এটি নিয়ে অবশ্য ইতিহাসবিদদের দ্বিমত রয়েছে।

ইউএসএস

এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সমুদ্রে ডুবে গেছে প্রায় তিন মিলিয়ন জাহাজ! হাজার বছরের এই জাহাজডুবির ইতিহাস মানুষের মুখে মুখে ঘুরে-ফিরে জন্ম দেয় নানান রূপকথায়। এমনই এক জাহাজ ইউএসএস। যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে ইউএসএস সাইক্লপস নামক জাহাজটি দুর্ঘটনায় পড়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায়। অতিরিক্ত ম্যাঙ্গানিজ আকরিক ভর্তি জাহাজটি ১৯১৮ সালের ৪ মার্চ বার্বাডোজ দ্বীপ থেকে যাত্রা শুরুর পর এর একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় এবং ৩০৯ জন ক্রুসহ নিখোঁজ হয়। যদিও এর কোনো শক্ত প্রমাণ নেই। তবু পরবর্তীতে অনেক কাহিনি শোনা যায়। কেউ বলেন, ঝড় দায়ী আবার কেউ বলেন, সমুদ্রে ডুবে গেছে। আবার কেউ এ ক্ষতির জন্য শত্রুপক্ষকে দায়ী করেন। উপরন্তু, সাইক্লপসের মতো আরও দুটি ছোট জাহাজ প্রোটিউস এবং নেরেউস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয়। সাইক্লপসের মতো এ জাহাজ দুটিও অতিরিক্ত আকরিকে ভর্তি ছিল। এখনো রহস্যই হয়ে আছে ইউএসএস দুর্ঘটনা।

ফ্লোর ডি লা মার

এই জাহাজটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৫১১ সালে সুমাত্রার উত্তর তীরের সাগরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হারিয়ে যায় ফ্লোর ডি লা মার নামের জাহাজটি। পর্তুগিজরা যখন বাণিজ্যের অনুমতি চেয়ে মালয়েশিয়ার রাজার কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়, তখন তারা লুটতরাজ শুরু করে। তারা তিন দিনে ৬০ টন সোনা, রাজার পারিবারিক সোনার সিংহাসন ও মূল্যবান মণিমুক্তা খচিত রাজকীয় তাজ, রাজভান্ডারের সোনার মোহর, ২০০ বাক্স হীরা, মণিমুক্তা, পান্না ইত্যাদি লুট করে। তারা এসব মূল্যবান ধনরত্ন ফ্লোর ডি লা মার জাহাজে বোঝাই করে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু মানুষের অভিশাপ লেগেছিল তিন বিলিয়ন ডলারের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ট্রেজারে।

তাই আর গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি জাহাজটি। অভিশাপেই জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চিরতরে হারিয়ে যায়। আজো জাহাজটির সব ধনসম্পদ অজ্ঞাত কোনো জায়গায় আছে বলে অনেকের ধারণা। অনেকেই এর সন্ধানে ডুব দিয়েছেন নানা সময়ে কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি জাহাজটির কোনো অংশ।

দেশে যত

নৌ-দুর্ঘটনা

সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা; মাত্র নয় সেকেন্ডেই ডুবে যায় মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ। ময়ূর-২ নামের বড় একটি লঞ্চ চলন্ত মর্নিং বার্ডের পেছন দিক দিয়ে উপরে উঠে যায়। নিমিষেই পানিতে তলিয়ে যায় মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এম এল মর্নিং বার্ড। ময়ূর-২ এর মাস্টার এবং সহকারী চালকের গাফিলতির কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার দিন তলিয়ে যাওয়া লঞ্চ থেকে ৩২ জনের লাশ এবং পরদিন উদ্ধার হয় আরও দুজনসহ মোট ৩৪ জনের লাশ। করোনাকালের এমন সময় দেশের মানুষ দেখল বুড়িগঙ্গায় লাশের ভেলা। যদিও দেশের ইতিহাসে এমন লঞ্চ দুর্ঘটনা প্রথম নয়, এর আগেও কালে কালে ঘটে গেছে এমন অসংখ্য মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনা। যেসব দুর্ঘটনা আজো কাঁদায় স্বজনহারাদের। ১৯৮৬ সালে অ্যাটলাস স্টার নামের একটি লঞ্চ তলিয়ে যায় পানির নিচে। তখনকার সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় প্রায় ২০০ জন। দুর্যোগময় আবহাওয়া আর ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে ডুবে যায় লঞ্চটি। ২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঈদুল আজহার রাত, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ষাটনল এলাকায় মেঘনা নদীতে ‘এমভি জলকপোত’ ও ‘এমভি রাজহংসী’ নামের দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাণ হারায় রাজহংসীর প্রায় ১৬২ জন যাত্রী। এর ঠিক দুই বছর পর ২০০২ সালের ৩ মে দেশের মানুষ দেখে আরেকটি ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনা। একইভাবে চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ষাটনল এলাকায় মেঘনায় ডুবে যায় সালাহউদ্দিন-২ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ। ওই দুর্ঘটনায় ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার ৩৬৩ যাত্রী মারা যান। মাত্র এক বছর পর লালমোহনগামী ‘এমভি নাসরিন-১’ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া এলাকায় পানির স্রোতের কারণে লঞ্চের তলা ফেটে যায়। এতে প্রায় দুই হাজারের বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় ৬৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। অতিরিক্ত যাত্রী এবং মাল বোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হয়। পরের বছর ২০০৪ সালের মে মাসে আনন্দ বাজারে ‘এমভি লাইটিং সান’ লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৮১ জন এবং ও ‘এমভি দিগন্ত’ ডুবির ঘটনায় শতাধিক যাত্রীর মৃত্যু ঘটে। একই বছর ভৈরবের মেঘনায় এম এল মজলিসপুর ডুবে ৯০ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৬ সালে মেঘনা সেতুর কাছে ‘এম এল শাহ পরাণ’ লঞ্চ দুর্ঘটনায় ১৯ জন এবং ২০১১ সালে চাঁদপুরের বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় মেঘনা নদীতে দুটি লঞ্চের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় এমভি কোকো-৩ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। ২০১৪ সালে মুন্সীগঞ্জের কাছে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪ ডুবে ২২ জন প্রাণ হারান। একই বছরের আগস্টে পদ্মায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের লঞ্চ। ওই দুর্ঘটনায় ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৭ সালে বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় বালুবাহী একটি কার্গোর ধাক্কায় এমভি গ্রীনলাইন-২ লঞ্চের তলা ফেটে ডুবে যায়। একই বছরে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ওয়াপদা চেয়ারম্যান ঘাটের টার্মিনালে তীব্র স্রোতে ডুবে যায় তিনটি লঞ্চ। ২০১৯ সালের জুনে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে এমভি রিয়াদ নামের লঞ্চের তলা ফেটে অর্ধেক পানিতে ডুবে যায়।

দ্য হানলে

এই রণতরীটির নাম এইচ এন হানলে। ইতিহাসে জাহাজটি বেশ উন্নত এক রণতরী হিসেবে পরিচিত। তবুও এটি তিন তিনবার ডুবে যাওয়ার সম্মুখীন হয়। এটিই কেন বারবার ডুবে যায় এ নিয়ে নানান আলোচনার জন্ম দেয়। ১৮৬৩ সালে প্রথম পানিতে নামে হানলে। মিত্রপক্ষ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নের অবরোধ ভাঙার চেষ্টায় লিপ্ত শার্লেস্টন হারবার পর্যন্ত কতজন যে জাহাজটির সওয়ার হয়েছেন, তার হিসাব নেই। প্রথমবার তো এক জলাবদ্ধ জায়গায় অদৃশ্য কিছু শেকড়-বাকড় রণতরীটিকে টেনে নেয় পানির নিচে। সেবার পাঁচজন কর্মী মারা যান। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় হানলেকে। কয়েক মাস পর আট ক্রুসহ ফের বিপদের সম্মুখীন হয় জাহাজটি। আবারও খুঁজে বের করে ১৮৬৪ সালে জাহাজটিকে কাজে নিযুক্ত করা হয়। এবার ইউএসএস হোসাটোনিককে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করে দ্য হানলে। এই দুর্ঘটনা অবশ্য হানলের নাবিকদের জন্যই আত্মঘাতী হিসেবে প্রতীয়মাণ হয়। ধ্বংসাবশেষ শিকারিরা প্রায় ২২ বছর আগে খুঁজে বের করে হানলেকে। এর ভিতরে ছিল আটজন নাবিকের কঙ্কাল। কিন্তু কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটে, কেউ জানে না।

সান জোস

স্পেনিশ রণতরী সান জোস। জাহাজটি সে সময়ের উন্নত রণতরীগুলোর একটি। কিন্তু অবাক তথ্য হলো- প্রায় ৩০৭ বছর নিখোঁজ ছিল জাহাজটি। নিখোঁজের সময় জাহাজে ছিল অঢেল গুপ্তধন, যা অষ্টাদশ শতাব্দীতে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতো। ১৭০৮ সালে জাহাজটি স্পেন থেকে আমেরিকায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে চারটি ইংরেজ জাহাজের সৈন্যদল আক্রমণ চালায়। সেই যুদ্ধে প্রাণ হারান প্রায় ৬০০ নাবিক। দুর্দান্ত সব সমরাস্ত্র আর দক্ষ নাবিক থাকা সত্ত্বেও সান জোস সমুদ্রে হারিয়ে যায়। টিকে থাকতে পারেনি। কেউ কেউ বলেন, সম্ভবত জাহাজটির পাউডার রুমে আগুন ধরেছিল। অনেকে আবার মনে করেন, ইংরেজদের গোলাবারুদের সামনে টিকতেই পারেনি স্পেনিশরা। সে যাই হোক না কেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্ধার করা হয় জাহাজটি। তবে জাহাজটির গুপ্তধন আর মালিকানা নিয়ে বাধে বিরোধ। কলম্বিয়া সরকার জাহাজটি উদ্ধার করতে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপের ঘোষণা দিয়েছিল। অপরদিকে স্পেনিশ সরকারও ভাগ ছাড়তে নারাজ। আবার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও জাহাজটি নিজেদের দাবি করে।

ব্রিটিশ সুপার ড্রেডনট

ব্রিটিশ সুপার ড্রেডনট এইচএমএস অডেসিয়াস ছিল প্রথম ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ যেটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হারিয়ে যায়। সে সময় এ ধরনের যুদ্ধজাহাজগুলো ছিল সবচেয়ে বড় এবং ব্যয়বহুল। বিশাল আকারের কামান, শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং অসাধারণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা-সবই ছিল এই জাহাজে। ফলে এ ধরনের জাহাজ নৌবাহিনীতে থাকা মানেই শত্রুশিবিরে ত্রাস সৃষ্টি করা। যুদ্ধের সময় এই যুদ্ধজাহাজটি ছোট একটি ভুলের কারণে শত্রুপক্ষের মাইনের আঘাতে বিস্ফোরিত হয়েছিল। ফলে ডুবে যেতে থাকে এটি। ডুবে যাওয়ার আগে জাহাজটি থেকে কর্মকর্তারা বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এমন ব্যয়বহুল আধুনিক যুদ্ধজাহাজ ডুবে যাওয়ায় সে সময় ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। ডুবে যাওয়ার আগে এটি সাগরে দাপিয়ে বেড়িয়েছে ঠিকই। ধ্বংস করতে সাহায্য করেছে শত্রু পক্ষের বহু নৌ-ঘাঁটি। পাশের ছবিটিতে জাহাজটির অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছে।

সালেম এক্সপ্রেস

১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মধ্য রাতে মিসরের সাফাগা থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে যাওয়ার পথে লোহিত সাগরে সালেম এক্সপ্রেস নামক ফেরি ডুবে যায়। বলা হয়ে থাকে লোহিত সাগরের প্রবাল প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল সালেম এক্সপ্রেস। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৬৯০ জন যাত্রী ছিল ওই ফেরিটিতে এবং ধারণা করা হয় কমপক্ষে ৪৭০ জনের মতো মারা গিয়েছিলেন ওই দুর্ঘটনায়।

মেরি সেলেস্ট

‘মেরি সেলেস্ট’ এক রহস্যময় নাম। জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়েনি পড়েছিল কিন্তু তারপর ঘটে রহস্যময় ঘটনা। কেউ জানে না-যা আজো পৃথিবীতে অন্যতম রহস্যময় ঘটনা হিসেবে উল্লেখযোগ্য। ওই জাহাজটির প্রথম নাম ছিল ‘আমাজন’। ১৮৬০ সালের শেষ দিকে নোভা স্কোশিয়ার ‘বে অব ফান্দি’র পাড়ে স্পেন্সার দ্বীপে জাহাজটি তৈরি হয়। নাম রাখা হয় ‘মেরি সেলেস্ট’। ১৮৭২ সালের ৭ নভেম্বর ক্যাপ্টেন বেঞ্জামিন ব্রিগস তার স্ত্রী, সন্তান এবং সাতজন নাবিককে নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে জেনোয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। মাঝপথে প্রবল ঝড় এবং ভয়ঙ্কর ঢেউয়ের মুখোমুখি হতে হয় মেরিকে। এত বিপদে পড়েও কোনোরকম ক্ষতি হয়নি মেরির। ১৮৭২ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্তুগালের তট থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরে আজর দ্বীপের কাছে ব্রিটিশ জাহাজ ‘দ্য গ্রাসিয়া’ দেখতে পায় মেরিকে। ফাঁকা জাহাজ দেখে সন্দেহ হয় গ্রাসিয়ার নাবিকদের। দেখা যায়, জাহাজটিতে ছয় মাসের খাবার থেকে শুরু করে নাবিকদের জামাকাপড় সবই সঠিক অবস্থায় রয়েছে। নেই শুধু কোনো মানুষের চিহ্ন। আশ্চর্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিল একটি লাইফ বোটও।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর