রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
Forbes এর দৃষ্টিতে

শীর্ষ আয়ের তারকা ২০২০

শীর্ষ আয়ের তারকা ২০২০

চলতি বছর বিশ্বসেরা তারকারা করোনার কারণে কাজ করতে পারেননি আগের মতো। তবুও তারা এখনো তাদের কর্মে উজ্জ্বল। সেই উজ্জ্বলতা বেড়েছে তাদের বাড়তি পারিশ্রমিকের কারণে। বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন দামি তারকাদের তালিকা প্রকাশ করেছে। গত বছরের ১ জুন থেকে চলতি বছরের ১ জুন পর্যন্ত এ সমীক্ষা চালানো হয়। সেই তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ‘দ্য রক’ খ্যাত ডোয়াইন জনসন। ফোর্বস ম্যাগাজিন গত বছরও তাকে হলিউডের দ্বিতীয় সেরা আয়ের অভিনেতা হিসেবে ঘোষণা করেছিল...

 

ডোয়াইন জনসন

ডোয়াইন ডগলাস জনসনের চেয়ে তিনি দ্য রক নামে অধিক পরিচিত। রেসলিং জীবন থেকেই তুমুল জনপ্রিয় একজন তারকা। অভিনয়ে এসেও তিনি দারুণ সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি পরিচালক রওসন মার্শাল থার্বারের ‘রেড নোটিস’-এ অভিনয়ের জন্য নিয়েছেন ২২ মিলিয়ন ডলার বা ১৮৬ কোটি টাকার বেশি।   তিনি একজন মার্কিন-কানাডীয় অভিনেতা, প্রযোজক এবং পেশাদার কুস্তিগির। ধনী অভিনেতা হিসেবে পরিচিত সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন। তিনি এতটাই জনপ্রিয় যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। জনসন ইউনিভার্সিটি অব মিয়ামিতে আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন, এ ছাড়া ১৯৯১ সালে মিয়ামি হারিকেন্স ফুটবল টিমের হয়ে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। তিনি দ্য মোস্ট ইলেকট্রিফায়িং ম্যান অব স্পোর্টস এন্টারটেইনমেন্ট ইন হিস্ট্রি বলে খ্যাত। জনসনের আত্মজীবনী দ্য রক সেইস ২০০০ সালে প্রকাশিত হয়। যা প্রকাশের শুরুতেই নিউইয়র্ক টাইমস বেস্ট সেলার হয়।

 

রায়ান রেনল্ডস

পুরো নাম রায়ান রোডনি রেনল্ডস। তিনি একজন কানাডিয়ান চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা। তিনি রয়েছেন তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে। অসম্ভব জনপ্রিয় এ অভিনেতা অসংখ্য দর্শকপ্রিয় চরিত্রে কাজ করেছেন। তিনি আমেরিকান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি প্রযোজিত কৌতুক ধারাবাহিক টু গাইজ অ্যান্ড আ গার্লে মাইকেল বার্গেন, ওয়াইটিভি প্রযোজিত কানাডিয়ান টিন সোপ অপেরা হিলসাইডে বিলি সিম্পসন, ব্লেড : ট্রিনিটি চলচ্চিত্রে মার্ভেল কমিকস চরিত্র হ্যানিবল কিং এবং এক্স-মেন অরিজিনস : উলভারিন চলচ্চিত্রে ডেডপুল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাত। সম্প্রতি তিনি ডেডপুল (২০১৬) চলচ্চিত্রে ডেডপুল চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি অভিনয় করেছেন সার্ভিং ইন সাইলেন্স : দ্য মার্গারেথ ক্যামারমেয়ার স্টোরি, ন্যাশনাল ল্যাম্পুনস ভ্যান উইল্ডার, ফিন্ডারস ফি, জাস্ট ফ্রেন্ডস, ডেফিনিটলি, মেবি, দ্য প্রোপোসাল, দ্য অ্যামিটিভিল হরর, দ্য চেঞ্জ-আপ, স্মোকিং এসেস, অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড, বেরিড, সেফ হাউস ও ক্রিমিনাল চলচ্চিত্রে।

 

লিন ম্যানুয়েল

লিন ম্যানুয়েল মিরান্ডা বহুমাত্রিক প্রতিভাধর একজন মানুষ। একাধারে তিনি একজন সংগীতশিল্পী। নিজেই গান লেখেন, সুর করেন। র‌্যাপার হিসেবেও জনপ্রিয়। এত কিছুর পরও অভিনয়ে সমানভাবে সফল। তিনি পুলিৎজার পুরস্কারও অর্জন করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। তিনবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। গত বছরের ১ জুন থেকে চলতি বছরের ১ জুন পর্যন্ত তার আয়ের পরিমাণ ৪৫.৫ মিলিয়ন ডলার। ফলে তিনি শীর্ষ আয় করা তালিকায় রয়েছেন সপ্তম অবস্থানে। তিনি সম্প্রতি একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম নিয়েও কাজ করছেন। যা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। এটি ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।  

 

মার্ক ওয়ালবার্গ

পুরো নাম মার্ক রবার্ট মাইকেল ওয়ালবার্গ। অভিনয় জীবনের প্রথমে মার্কি মার্ক নামে পরিচিত ছিলেন। মার্কি মার্ক অ্যান্ড দ্য ফাংকি বাঞ্চ নামক ব্যান্ড দলের সঙ্গে র‌্যাপ শিল্পী হিসেবে যোগ দেওয়ার মাধ্যমেই ১৯৯১ সালে তার কর্মজীবন শুরু। বর্তমানে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা তারকা। একাগ্রতা এবং পরিশ্রম যে মানুষকে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে তার অন্যতম উদাহরণ মার্ক ওয়ালবার্গ। একাডেমি পুরস্কার মনোনীত এবং বাফটা পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা, প্রযোজক এবং র‌্যাপার। তিনি দ্য ডিপার্টেড ছবিতে সার্জেন্ট শন ডিগনাম চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন। গায়ক থেকে অভিনয়ে এসে তিনি দুর্দান্ত সব চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। দ্য ডিপার্টেড, ফাইটার, টেড, আদার গাইজ, ইতালিয়ান জব-এর মতো বিশ্বখ্যাত দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। শুরুর জীবনে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছিল। তিনি মনে করেন মন থেকে চাইলে যে কোনো সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।

 

বেন অ্যাফ্লেক

তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন পিবিএসের শিক্ষামূলক দ্য ভয়েজ অব দ্য মিমি টিভি সিরিজের মাধ্যমে। পুরো নাম বেনজামিন গিজা অ্যাফ্লেক বোল্ডট। তবে বেন অ্যাফ্লেক নামে তিনি বেশি জনপ্রিয়। ধনী অভিনেতা হিসেবে পরিচিত সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতাদের মধ্যে শীর্ষ তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। একজন আমেরিকান অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে তিনি সমানভাবে সফল। অ্যাফ্লেক ২০০৫ সালে জেনিফার গার্নারকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। ২০১৫ সালে তারা আলাদা হয়ে যান এবং ২০১৮ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বেন অ্যাফ্লেক তার শৈশবজুড়ে পেশাগতভাবে অভিনয় করতেন। ছোটবেলা থেকেই অর্থ উপার্জন করতেন এ অভিনেতা-পরিচালক। সাত বছর বয়সে আবির্ভূত হন ডার্কসাইড অব দ্য স্ট্রিট (১৯৮১) নামের একটি চলচ্চিত্রে। তার সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল পিবিএস শিশুদের সিরিজের দ্য ভয়েজ অব দ্য মিমি (১৯৮৪) এবং দ্য সেকেন্ড ভয়েজ অব দ্য মিমি (১৯৮৮)।

 

উইল স্মিথ

ইউলর্ড ক্রিস্টোফার উইল স্মিথ রয়েছেন তালিকার ৮ম অবস্থানে। তার জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। তিনি হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা, প্রযোজক। স্মিথ একাধারে টেলিভিশন, সিনেমা এবং সংগীতে সাফল্য পেয়েছেন। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে নিউজউইক প্রকাশিত জরিপ মতে, তিনি হলিউডের সবচেয়ে ক্ষমতাধর অভিনেতা। ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি তিনি টেলিভিশন থেকে চলচ্চিত্রে নাম লেখান। চলচ্চিত্রে তার পদার্পণ অনেকটা এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। তিনিই একমাত্র অভিনেতা যার আটটি সিনেমা নিজ দেশের বক্স অফিসে ১০০ মিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। ১০টি সিনেমায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।

 

ভিন ডাইসেল

ভিন ডাইসেল একজন আমেরিকান অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি অভিনয় শুরু করেন স্টিভ স্পিয়েলবার্গের সেভিং প্রাইভেট রায়ান (১৯৯৮)-এর মাধ্যমে। তিনি ‘রিডিক’ ভূমিকায় ‘দ্য চরনিকল অব রিডিক ট্রিলজি’ এবং ‘ডমিনিক টরেটো’ ভূমিকায় ‘দ্য ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের জন্য বিখ্যাত। উভয় সিরিজে তিনি প্রযোজকও ছিলেন। অভিনয়ের সাফল্যের সঙ্গে তিনি আয়ও করেন প্রচুর। ভিন ডাইসেল দ্য ফেট অব দ্য ফিউরিয়াস চলচ্চিত্রের জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক নেন। ডাইসেল এক্সএক্সএক্স এবং সিডনি লুমেটের ফাইন্ড মি গাল্টির জন্য তারকা খ্যাতি অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি দ্য আয়রন জায়ান্ট এবং গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তিনি স্ট্রেইস ছবিতে পরিচালক, লেখক, প্রযোজক এবং অভিনেতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। বহুমাত্রিক এ তারকা জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন; যা খুবই বিরল। ব্যবসায়িকভাবেও সফল এ শিল্পী। তার রয়েছে দুটি রেবর্ডিং স্টুডিও।

 

অক্ষয় কুমার

অক্ষয় কুমার ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। তার প্রকৃত নাম রাজিব হরি ওম ভাটিয়া। ২৯ বছরের অধিক অভিনয় জীবনে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আজ সাফল্যের চূড়ায় বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার। পার করছেন ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ সময়। কয়েক বছর ধরে তার বেশির ভাগ সিনেমাই সফল। তার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘গুড নিউজ’ প্রবেশ করেছে ২০০ কোটির ক্লাবে। এমন স্বর্ণালি সময়ে আরও একটি খবর জানা গেল আয়ের সম্পর্কে। বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা এখন অক্ষয় কুমার। জানা গেছে, নতুন একটি সিনেমার জন্য ১২০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন। এবার ফোর্বসের তালিকায়ও উঠে এসেছেন এ ভারতীয়। অর্জন করেছেন রুস্তম (২০১৬) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া অজনবী (২০০১) ও গরম মসলা (২০০৫) চলচ্চিত্রের জন্য দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত হন। 

 

জ্যাকি চ্যান

চীনের এ সফল চলচ্চিত্র তারকা ‘রাশ আওয়ার’-এর মতো আলোচিত হলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এক সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা ছিলেন জ্যাকি চ্যান। সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতার তালিকায় তিনি এখন ১০ম স্থানে রয়েছেন। পুরো জীবনে তিনি টাকা দুই হাতে উড়িয়েছেন। একবার ৫ লাখ ডলার দিয়ে নিজের স্টান্ড টিমের জন্য ব্যয়বহুল ঘড়ি কিনেছিলেন তিনি। সেই ঘটনা সম্পর্কে জ্যাকি চ্যান লিখেছেন, ‘একবার ঘড়ির দোকানে গিয়ে বলি আমাকে সবচেয়ে দামি ১০টি ঘড়ি দেখাও। তাদের জিজ্ঞেস করি, এগুলোই সবচেয়ে বেশি দামি? সবচেয়ে বেশি হীরা কি এতেই আছে। আমি ৭টা ঘড়ি নিচ্ছি।’ এই হলো জ্যাকি চ্যান, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর