রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউটিউব কাহিনি

ইউটিউব কাহিনি

তিন তরুণের হাতে ১৮ বছর আগে যাত্রা শুরু হয় সোশ্যাল ভিডিও নেটওয়ার্ক ইউটিউবের। মাত্র ১.৬৫ বিলিয়ন ডলার দিয়ে এটি কিনে নেয় টেক জায়ান্ট গুগল। তারপরই জনপ্রিয়তায় সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দৌড়ে সেরা হয়ে ওঠে এ অনলাইন প্ল্যাটফরম। লিখেছেন-তানভীর আহমেদ

 

প্রথম ভিডিও মাত্র ১৯ সেকেন্ডের

জাওয়াদ করিম ২০০৫ সালে ইউটিউবে প্রথম ভিডিও আপলোড করার এক মাস পরই ইউটিউব একটি পাবলিক বিটা সার্ভিস লঞ্চ করে সে বছরই নভেম্বর মাসে অফিশিয়ালি ইউটিউব লঞ্চ করে আর সেই সময়েই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি করতে যান জাওয়াদ করিম ২০০৬ সালে গুগল .৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে ইউটিউব অধিগ্রহণ করে নেয়

২০০৫ সালের ২৪ এপ্রিল। রবিবার। ২৫ বছরের এক যুবক, নাম তার জাওয়াদ করিম মাত্র ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড করেন। ভিডিওটির টাইটেল ছিল- ‘Me at the zoo’। আপলোড হওয়া প্রথম ভিডিওটিতে আহামরি এমন কিছু ছিল না। জাওয়াদ করিমের শেয়ার করা সেই ভিডিওর রেজুলিউশন ছিল বেশ খারাপ। ভিডিওতে দেখা যায়, চিড়িয়াখানার হাতির খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলছেন তিনি। স্যান দিয়েগো চিড়িয়াখানায় হাতিরা তাদের শুঁড়টি কীভাবে সামলায়। জাওয়াদ করিম বলছেন, ‘সব ঠিক আছে। আর এখন আমরা হাতিদের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। হাতিদের সম্পর্কে সব থেকে মজার বিষয়টি হলো- তাদের অনেক বড় বড় শুঁড় থাকে, যা সত্যিই আকর্ষণীয়।’ তিনি যখন এ ভিডিওটি আপলোড করেছিলেন তখন কি তার ধারণা ছিল এটি প্রযুক্তি দুনিয়ার ইতিহাসে আলাদা গুরুত্ব পাবে? এক দিন এ ভিডিও আপলোডের প্ল্যাটফরম সারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফরম হয়ে উঠবে? জাওয়াদ করিমের শেয়ার করা সেই প্রথম ভিডিও গতকাল পর্যন্ত দেখেছেন ২৭২ মিলিয়ন মানুষ। পছন্দ করেছেন ১৪ মিলিয়ন দর্শক। ভিডিওতে মন্তব্য করেছেন ১ কোটি ১১ লাখেরও বেশি মানুষ। এক ইউটিউব ব্যবহারকারী সেখানে লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের সন্তানদের কখনো এ ভিডিওটা একবার দেখাব।’ প্রথম ভিডিও আপলোডের বয়স এখন ১৮ বছর। ইউটিউব এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। এর ব্যবহারকারী ২ হাজার ৫১৪ মিলিয়নেরও বেশি।

 

সবচেয়ে বেশিবার দেখা ভিডিও

দুটি বাচ্চা ছেলেমেয়ের সহজ নাচের সঙ্গে গানের দারুণ কম্পোজিশন বেবি শার্ক গানটিকে জনপ্রিয় করে তোলে...

পৃথিবী জনসংখ্যা এখন কত জানেন? প্রায় ৮০০ কোটি। এ সংখ্যা শুনে চমকে না গেলেও ইউটিউবে সবচেয়ে বেশিবার দেখা ভিডিওর কথা শুনে বিস্মিত হতে হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার দুই শিশুর মজার, সাদামাটা নাচ-গান দেখা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি বার! কোনো নামি-দামি শিল্পীর গাওয়া গান এমনও নয়। বাচ্চাদের এ গানের শিরোনাম বেবি শার্ক। গানটির সেই গীতিকার বা সুরকারের নাম এখনো কেউ নিশ্চিত করেনি। ছয় বছর আগে এ গানটি ইউটিউবে আপলোড করা হয়। তারপর থেকে প্রতিদিনই দর্শকরা দেখছেন-শুনছেন বেবি শার্ক। গানের এ ভিডিওতে একদল লাল-নীল পুঁচকে হাঙরের দলের সঙ্গে দুই শিশুর মজার নাচ, গান, অভিনয় করতে দেখা যায়। গানটির আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই বলেছেন, আসলে এ ভিডিও গানের তালটি বেশ দ্রুত লয়ের যেটা শুনতে আরাম লাগে। তার সঙ্গে রয়েছে রং-বেরঙের শার্ক বা হাঙরদের মাতামাতি যে কাউকে আকৃষ্ট করে। ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের এ গানের মুগ্ধতা ইউটিউবের সবচেয়ে বেশিবার দেখা ভিডিও হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১ হাজার ২০০ কোটি বার দেখার মাইলফলক ছুঁয়েছে যে ভিডিওটি, সেটি আপলোড করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান পিংকফং-এর ইউটিউব চ্যানেলে। ২০১৫ সালে শুরুতে ‘বেবি শার্ক’ গানটির একটি অ্যানিমেশনভিত্তিক সংস্করণ আপলোড করেছিল পিংকফং। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই তারা নতুন করে গানটি আপলোড করে। দুটি বাচ্চা ছেলেমেয়ের সহজ নাচের ভঙ্গি কিংবা গানের কম্পোজিশন, যে কারণেই হোক, বাচ্চারা ওই সংস্করণটি ভীষণ পছন্দ করে ফেলে। দেশে দেশে ‘বেবি শার্ক’ গানটিকে বলা হয় বাচ্চাদের কান্না বন্ধ করার জনপ্রিয় উপায়! এ গানের গোড়ার খবর খুঁজেছেন অনেকে। কারও কারও ধারণা ৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের এক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প থেকে মুখে মুখে ‘বেবি শার্ক’ গানটি ছড়িয়েছিল। অনলাইনের দুনিয়ায় গানটি প্রথম পাওয়া যায় ২০০৭ সালে। ইউটিউবে জার্মান ভাষায় বেবি শার্ক গেয়ে আপলোড করেছিলেন এক নারী। যদিও ‘ক্লেইনার হাই’ শিরোনামের ভিডিওটি সে সময় খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি। ইউটিউবে এখন নানা ভাষায় ‘বেবি শার্ক’ গানটির অসংখ্য সংস্করণ পাওয়া যায়।

 

অভিনেত্রীর ভিডিও ক্লিপ অনলাইনে খুঁজে না পেয়ে এলো ইউটিউবের আইডিয়া

২০০৪ সালের ঘটনা। পেপ্যালে চাকরি করেন তরুণ জাওয়াদ করিম। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় চ্যাড হার্লি ও স্টিভ চেনের। জাওয়াদ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী। স্টিভ চেনও পড়েন কম্পিউটার সায়েন্সে। চ্যাড হার্লি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন ডিজাইন ডিপার্টমেন্টে। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তিনজনের। নতুন কী করা যায় সেসব নিয়ে ভাবছেন। এক দিন রাতের খাবারের আয়োজন করেন তিন বন্ধু। স্টিভ চেনের বাসা সান ফ্রান্সিসকোতে। সেখানে বসে খেতে খেতে আড্ডা হবে। নতুন কিছু করার পরিকল্পনা হবে। ডিনার প্লেটে খাবার তুলে আড্ডা জমে ওঠে। একপর্যায়ে জাওয়াদ করিম এমন একটি ভিডিও প্ল্যাটফরমের আইডিয়া দেন যেখানে সবাই ভিডিও আপলোড করতে পারবে। প্রয়োজনে অন্যজন দেখতে পাবে সেই ভিডিও। জাওয়াদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘২০০৪ সালে একজন অভিনেত্রীর একটি ভিডিও ক্লিপ অনলাইনে অনেক খোঁজার পরও পাননি। তখন চিন্তা করেন একটি ওয়েবসাইটের কথা। কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই যেখানে সবাই ভিডিও শেয়ার বা আপলোড করতে পারবে।’ সে সময় খুব ভালো কোনো সোশ্যাল ভিডিও নেটওয়ার্ক ছিল না। জাওয়াদের আইডিয়া শুনে পছন্দ হয় অন্য দুই বন্ধুর। আইডিয়া দুর্দান্ত এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এ ধরনের নেটওয়ার্ক বানাতে হলে চাই টাকা। সেটা মিলবে কোথা থেকে? বিনিয়োগকারী ছাড়া নিজেরা এটা করতে পারবে না। ইউটিউবের ধারণা নিয়ে তারা খুঁজতে শুরু করেন বিনিয়োগকারী। শুরুতে তেমন কেউ সাড়া দেননি। অবশেষে ‘সেকুয়া ক্যাপিটাল’ তাদের আইডিয়া পছন্দ করে। বেশ ঝুঁকি নিয়ে শুধু তিন তরুণের ওপর আস্থা রেখে ১১.৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ‘সেকুয়া ক্যাপিটাল’। ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তারা youtube.com ডোমেইনটি রেজিস্ট্রেশন করলেন। তিন প্রকৌশলী কয়েক মাসের মধ্যে এর কাজও শেষ করে ফেললেন। নভেম্বর মাসে ‘ব্রডকাস্ট ইওরসেলফ’ স্লোগানে অফিশিয়ালি উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউব।

 

ইউটিউবের সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণ

ইউটিউবের তিন প্রতিষ্ঠাতার মধ্যে একজন জাওয়াদ করিম। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান। তার বাবা একজন বাংলাদেশি। মা জার্মান নাগরিক। নিজেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন জাওয়াদ। ১৯৭১ সালে তার জন্ম পূর্ব জার্মানির মার্সবার্গে। তার বাবা বাংলাদেশের প্রবাসী বিজ্ঞানী নাইমুল করিম ও মা ক্রিস্টিনা করিম ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার বায়োকেমিস্ট্রির বিজ্ঞানী ছিলেন। জাওয়াদ করিমের ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বেড়ে ওঠা জার্মানিতে। ছোটবেলা থেকেই জাওয়াদ সৃজনশীল ছিলেন বলে তার বাবা-মা গণমাধ্যমকে জানান। বলেন, ছোটবেলা থেকেই আবিষ্কারের নেশা সবসময় তার মনের ভিতর কাজ করত। ১৯৯২ সালে সপরিবারে জাওয়াদের বাবা নাইমুল করিম আমেরিকা পাড়ি দেন। জাওয়াদ যুক্তরাষ্ট্রে এসে পড়াশোনায় মন দেন। মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে উচ্চশিক্ষা নেন। ২০০৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায়ই ইউটিউবের আইডিয়া আসে তার মাথায়।

 

কথায় কথায় কোটি কোটি টাকা বিলিয়ে দেন তিনি

মার্কিন তরুণ জেমস স্টিভেন ডোনাল্ডসন। তবে এ নামে তাকে কেউ চেনে না। তার আরেক নাম ‘মিস্টার বিস্ট’। এখন তার বয়স মাত্র ২৫ বছর। এরই মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় ইউটিউবার হয়ে উঠেছেন তিনি। ইউটিউবে ১০ কোটি গ্রাহকের মাইলফলক ছুঁয়েছেন গত বছর। ইউটিউবের ১০ কোটি সাবসক্রাইবার পাওয়া পঞ্চম চ্যানেলটি মিস্টার বিস্টের। গত বছর ইউটিউবে তার ভিডিওগুলো এক হাজার কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে। ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি আয় করা কনটেন্ট নির্মাতার তালিকায়ও সেরাদের সেরা তিনি। ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে এক বছরে ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করার রেকর্ডও তার। ‘মি. বিস্ট’ চ্যানেলে থাকা বেশির ভাগ ভিডিওর ভিউয়ের সংখ্যা মিলিয়ন এবং কিছু ভিডিওর বেলায় বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ইউটিউবের জন্য নিয়মিত প্র্যাঙ্ক ও স্টান্ট ভিডিও পোস্ট করা হয় ‘মি. বিস্ট’ চ্যানেলে। বিষয়বস্তুর বিচিত্রতা, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি পুরস্কার দেওয়ার ভিডিওগুলো দর্শকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কথায় কথায় কোটি কোটি টাকা বিলিয়ে দেওয়ার মতো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন তিনি। তার এমন ভিডিও দেখতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন।

 

ইউটিউবে ভিউ পেতে ইচ্ছা করে বিমান ধ্বংস

ইউটিউবে ভিউ বাড়াতে পাগলামির শেষ নেই মানুষের। যত বেশি ভিউ তত বেশি টাকা, তত বেশি জনপ্রিয়তা। ভাইরাল হওয়ার লোভে নানা ধরনের পাগলামির উদাহরণ রয়েছে ইউটিউবে। শুধু ইউটিউবে বেশি ভিউ বা দর্শক পাওয়ার আশায় যুক্তরাষ্ট্রের এক ইউটিউবার ইচ্ছা করে বিমান ধ্বংস করেন। ২৪ নভেম্বর ২০২১। ইউটিউবার জ্যাকব ভিউয়ের লোভে নিজের ছোট বিমান পরিকল্পিতভাবে ক্র্যাশ করিয়েছিলেন। উড়ন্ত বিমান থেকে প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিয়েছিলেন। সেটি নাটক করে ভিডিও বানিয়েছিলেন। তার বিমান নিয়ে লোম্পক সিটি বিমানবন্দর থেকে একাই উড়াতে শুরু করেন। বিমান আকাশে থাকার সময়ই তিনি বিমান থেকে লাফ দিয়ে বের হয়ে যান। এরপর প্যারাসুটে করে নেমে আসেন। এদিকে তার বিমান নিচে পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। এসবই পরিকল্পনা মতো ভিডিও করে রাখেন তিনি। ভিডিও ছেড়ে দেন ইউটিউবে। পরে জানা যায়, একটি মানিব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রয়কারী সংস্থার কাছ থেকে স্পনসরশিপ পেয়ে এ কাণ্ড করেন। বিমান ক্র্যাশের ঘটনায় তিনি মার্কিন প্রশাসনের তদন্তের মুখে পড়েন। আর তাতে বাধা দেওয়ার অপরাধে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। সান্তা বারবারা কাউন্টি বিচার বিভাগ তাকে অপরাধী ঘোষণা করে। ইউটিউবে এ ধরনের ভিডিও দিয়ে অনেকেই বিভিন্ন দেশে জেল খেটেছেন।

 

গুগলের পরই সেরা ইউটিউব

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে ইউটিউবের প্রধান কার্যালয়। এখন গুগল এটির মালিক। বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এটি। ভিডিও প্ল্যাটফরম হিসেবে ইউটিউব জনপ্রিয়তায় এক নম্বর। গুগল সার্চের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ ইউটিউবের খোঁজ করেন অনলাইনে। এখন তাদের প্রতি মাসে ২.৫ বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রতিদিন এক বিলিয়ন ঘণ্টা ইউটিউব দেখেন ব্যবহারকারী। ২০১৯ সালের এক হিসাবে দেখা যায়, প্রতি মিনিটে ৫০০ ঘণ্টা সময় দৈর্ঘ্যরে ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা হয়। কেউ কেউ বলেন, এমন কোনো বিষয় নেই যে বিষয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করা হয়নি। প্রতিদিন, প্রতি সেকেন্ডে লাখ লাখ ভিডিও ইউটিউবে তোলা হয়। ইউটিউব ক্রিয়েটররা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে এখান থেকে আয় করতে পারেন। ইউটিউব এবং নির্বাচিত নির্মাতা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।

 

সবচেয়ে বড় ভিডিও দেখতে লাগবে টানা ২৫ দিন

ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি ব্যাপ্তির ভিডিওটি একদিন কিংবা এক সপ্তাহ দেখেও শেষ হবে না লাগবে টানা ২৫ দিন ভিডিওটির শিরোনাম- ‘লংগেস্ট ইউটিউব ভিডিও ফাইভ হান্ড্রেড নাইনটি সিক্স আওয়ার্স

যদি মনে হয় ইউটিউবের সবচেয়ে দীর্ঘ ভিডিওটি দেখবেন তাহলে বেশ বেকায়দায় পড়তে হবে। কারণ এ জন্য চাই অস্বাভাবিক পর্যায়ের ধৈর্য আর একাগ্রতা। না হলে টানা প্রায় ২৫ দিন দৈর্ঘ্যরে ভিডিও দেখা সম্ভব নয়। ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি ব্যাপ্তির ভিডিওটি একদিন কিংবা এক সপ্তাহ দেখেও শেষ হবে না। লাগবে টানা ২৫ দিন। ভিডিওটির শিরোনাম, ‘লংগেস্ট ইউটিউব ভিডিও ফাইভ হান্ড্রেড নাইনটি সিক্স আওয়ার্স’। মানে ৫৯৬ ঘণ্টা ৩১ মিনিট ২০ সেকেন্ড। গুনে গুনে ২৫ দিনই লাগবে। ২৫ দিনের ব্যাপ্তি এ ভিডিওটি তৈরি করেছেন জোনাথান হেনড্রিক নামের একজন অ্যাপস ডেভেলপার। ২০১১ সালের জুলাইয়ে তিনি ভিডিওটি আপলোড করেন। মজার ব্যাপার হলো- ভিডিওটি আপ করার প্রথম সপ্তাহেই ৩৬ হাজারবার দেখা হয়। শৈল্পিক এবং আনকমন ধাঁচের ভিডিও করতে ভালোবাসেন হেনড্রিক। ইউটিউব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতেই তার মাথায় আসে এ থিম। ইউটিউবের সর্বোচ্চ ভিডিওটি তিনি তৈরি করবেন। যা হবে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। বাস্তবে হয়েছেও তাই। ভিডিওটিতে চিলির বিভিন্ন বস্তু ও দৃশ্য স্থান পেয়েছে। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর এটি আপলোড করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর