বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

অন্যরকম হুমায়ূন

রণক ইকরাম

অন্যরকম হুমায়ূন
খণ্ড খণ্ড নীলের প্রলেপ ডিঙিয়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরে কোত্থেকে যেন এগিয়ে আসে হিমু। আবেগ তাকে ছোঁয় না কখনোই। সব আবেগের ঊর্ধ্বে সে। মনের আনন্দে যখন যেটা ইচ্ছা করে, সেটাই করে বেড়ায়। নিয়ম-অনিয়মের ধার ধারে না। নিজের মতো নিজের পৃথিবী সাজানোই তার কাজ। এরপরও সেদিন ঔদাসীন্য গ্রাস করেছিল হিমুকে। নেমে পড়েছিল রাস্তায়। তবে গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার শবযাত্রায় শামিল হতে পথে নামেনি সে। তবে কেন নেমেছে? তখন উত্তরের যুক্তি খুঁজতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন মিসির আলী।

১৯ জুলাই ২০১২। অন্য ৮-১০টি দিনের মতোই সাধারণ একটি দিন ছিল। আচমকা সংবাদ এলো গৃহত্যাগী জ্যোৎস্না আজš§ অভিমানে ছেড়েছেন চেনা আঙিনা। পাড়ি জমিয়েছেন অচেনা দিগন্তে। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ। আকাশে তখন সীমাহীন শূন্যতা। চারদিকে হাহাকার ধ্বনি। নীল নীল বেদনার ধূলি জমে নিশ্চুপ ক্লান্তিহীন। নিন্দুকের মুখেও তখন অতৃপ্তির আহ্লাদ। বর্ণচোরা অনুভূতির আবাদে বইয়ের পাতা থেকে একে একে বেরিয়ে আসে কল্পনার চরিত্ররা। খণ্ড খণ্ড নীলের প্রলেপ ডিঙিয়ে হলুদ পাঞ্জাবি পরে কোত্থেকে যেন এগিয়ে আসে হিমু। আবেগ তাকে ছোঁয় না কখনোই। সব আবেগের ঊর্ধ্বে সে। মনের আনন্দে যখন যেটা ইচ্ছা করে, সেটাই করে বেড়ায়। নিয়ম-অনিয়মের ধার ধারে না। নিজের মতো নিজের পৃথিবী সাজানোই তার কাজ। এরপরও সেদিন ঔদাসীন্য গ্রাস করেছিল হিমুকে। নেমে পড়েছিল রাস্তায়। তবে গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার শবযাত্রায় শামিল হতে পথে নামেনি সে। তবে কেন নেমেছে? তখন উত্তরের যুক্তি খুঁজতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন মিসির আলী। কোনো কিছুই তাকে বিব্রত করে না। ঘটনা যত অদ্ভুতই হোক সেটাকে স্বাভাবিক মনে করে এগিয়ে চলাই তার কাজ। কিন্তু এখন বেশ বিব্রত সে। আচমকা দাঁতে চাপা পড়ে ঠোঁট কেটে গেলে যেমন লাগে ঠিক তেমন লাগছে তার। মাথার ভিতর কোনো লজিকই কাজ করছে না। চারদিককার সুনসান নীরবতা কাটিয়ে হাই পাওয়ারের চশমা চোখে হাজির শুভ্র। এমন দিনে ঘরে বসে থাকতে পারেনি সেও। এত রাতে বাইরে বেরোনোর মানুষ সে নয়। এরপরও তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কেউ। ততক্ষণে রূপাও ছাদ থেকে নেমে দৌড়ে আসছে এদিকেই। সবার দৃষ্টি একজনের দিকেই। তিনি সবার মুরব্বি। তিনি অযৌক্তিক কিছু বলেন না, ভাবেন না। মিসির আলী ভেবেই চলেছেন তার মতো সবারই কি একই জিজ্ঞাসা? গল্পের সব চরিত্রই কি একই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে? আজ সবাইকে কেমন যেন অন্যরকম লাগছে। হিমুকে আজ হলুদ পাঞ্জাবিতে ঠিক মানাচ্ছে না। শুভ্র সাধারণত ওর হাই পাওয়ারের চশমাটা চোখ থেকে সরায় না। আজ বারবারই খুলছে আর পরছে। অন্যদিকে রূপার কথার জ্বালায় কারোরই টিকতে পারার কথা নয়। সেও নিশ্চুপ। গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার শেষ যাত্রার কথা মিসির আলীও জানে। কিন্তু তার মধ্যে কোনো ভাবান্তর নেই। কারণ সে জানে মৃত্যু অমোঘ সত্য। একে এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। সবার মনের অবস্থা ভেবে মুখ খুললেন তিনি। বললেন, গৃহত্যাগী জ্যোৎস্না চলে গেছে, এ জন্য আমাদের সবার মন খারাপ, সেটা আমি জানি। কিন্তু তার আজীবন থাকার কথা ছিল না। এটাও সত্যি। তিনি চলে গেছেন ঠিক। কিন্তু হিমু তোমাকে তো নিয়ে যাননি। কই রূপা তোমাকে নিয়ে গেছে? শুভ্র তুমিও তো ঠায় দাঁড়িয়ে। তোমাদের কারও তো বয়স বাড়েনি। বাড়েনি আমার বয়সও। এরপরও কীসের অস্তিত্ব সংকটে সন্ত্রস্ত তোমরা? তিনি আসলে আমাদের ছেড়ে যাননি। তিনি আমাদের মাঝেই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। এই যে হিমু, তুমি যখন হলুদ পাঞ্জাবি পরে জ্যোৎস্না দেখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা পাকাবে, তখন তিনি আড়ালে দাঁড়িয়ে হাসবেন। রূপা, তুমি যখন হিমুর জন্য অপেক্ষা করবে, তখন দেখবে ঠিক তিনি তোমার পাশে সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়ে। আর শুভ্র চশমাটা খুলে চোখ বন্ধ করে একবার অনুভব কর তো কী দেখতে পাও? তিনি কি আছেন? না, অবশ্যই আছেন তিনি আমাদেরই মাঝে বেঁচে থাকবেন আজ, কাল, পরশু। যুগ থেকে যুগান্তর কাল থেকে কালান্তর। কলম জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন ছয় বছর হয়ে গেছে। কিন্তু সত্যি কি চলে যেতে পেরেছেন তিনি? মোটেও না। তিনি কেবল তাঁর শরীর ত্যাগ করেছেন। মানুষের অমরত্ব তার বয়সে নয়, কর্মে। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর শরীর ত্যাগ করেছেন বটে, কিন্তু রেখে গেছেন তাঁর অবারিত কর্ম। তাঁর উপন্যাস, গল্প, নাটক, চলচ্চিত্র কিংবা গানগুলো তাঁর সঙ্গে যায়নি। তাঁর সৃষ্টির বিশালত্বের কাছে আগেই হার মেনেছে ব্যক্তি হুমায়ূনের দোষ-ত্রুটি। বাংলা সাহিত্যে রস, আনন্দ আর উপভোগের যে আধুনিক ধারা, তার পথিকৃৎ হুমায়ূন আহমেদ। তিনি সংসার ত্যাগ করে আকাশচারী হয়েছেন। কিন্তু তার সৃষ্টি বেঁচে থাকবে আজীবন। সাহিত্যের নতুন যে ধারা তিনি তৈরি করে দিয়ে গেছেন সেই পথে হাঁটছে বা হাঁটার চেষ্টা করবে তারই অনুজ সাহিত্যিকরা। কখনো সেই সব সাহিত্যের কলম ধরে আবার কখনো তাঁর নিজের চরিত্রগুলোর মাঝে হেঁটে বেড়াবেন হুমায়ূন আহমেদ। আজকের পাঠকের কাছে যে হিমু-মিসির আলী চিরচেনা, আগামী দিনের পাঠকের কাছে একই চরিত্র ধরা দেবে নতুন বিস্ময়ে। জোছনা ও জননীর গল্পে আজকের প্রজš§ মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে। একই বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ছবি আঁকবে আগামী প্রজš§। শ্যামল ছায়া উপন্যাস বা চলচ্চিত্র আরেক প্রজন্মের কাছে নতুন হয়ে ধরা দেবে। এভাবেই হুমায়ূন আহমেদ টিকে থাকবেন ততদিন যতদিন বাংলা সাহিত্য টিকে থাকবে। এ আলো কখনো নেভার নয়।

 

এক নজরে

জন্ম : ১৯৪৮, ১৩ নভেম্বর, নেত্রকোনা জেলার কুতুবপুর গ্রামে।

বাবা : ফয়জুর রহমান আহমেদ

মা : আয়েশা ফয়েজ

শিক্ষা : মাধ্যমিক, বগুড়া জিলা স্কুল, ১৯৬৫। উচ্চ মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ, ১৯৬৭। স্নাতক (সম্মান) রসায়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭০। স্নাতকোত্তর (রসায়ন) ১৯৭২। পিএইচডি, নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি, ১৯৮২।

পেশা : অধ্যাপনা, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর। তারপর পুরোপুরি মনোযোগ দেন লেখালেখি ও চলচ্চিত্র নির্মাণে।

উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : নন্দিত নরকে, লীলাবতী, কবি, শঙ্খনীল কারাগার, মন্দ্রসপ্তক, দূরে কোথায়, সৌরভ, নী, ফেরা, কৃষ্ণপক্ষ, সাজঘর, বাসর, গৌরীপুর জংশন, নৃপতি, অমানুষ, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, দারুচিনি দ্বীপ, শুভ্র, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, বৃষ্টি ও মেঘমালা, মেঘ বলেছে যাব যাব, জোছনা ও জননীর গল্প প্রভৃতি।

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র : আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত।

পুরস্কার : একুশে পদক (১৯৯৪), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮)।

মৃত্যু : ১৯ জুলাই, ২০১২।

 

 

জীবনের শেষ সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন

২৫ মে ২০১২। নুহাশ পল্লী। তখন ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সে সময় তাঁর সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনের। জীবনের নানা গল্প তিনি শুনিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ এখানে-

 

আমি মোটেও আলাদা নই

নিজের ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তার পরও তিনি নিজেকে সাধারণ ভাবতেন। এত লিখেও কখনো ক্লান্ত হননি। নিজের কর্মে আনন্দ খুঁজে পেতেন। পেয়েছেন তৃপ্তিও। তার ভাষায়- জনপ্রিয়তা বা লেখালেখি নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই। আমি খুশি যে, আমি লিখতে পারছি। এতেও খুশি যে, কারও কারও কাছে সেটি ভালো লাগছে। সাধারণ মানুষ হয়তো লেখার চেষ্টা করেনি বা করলেও আমার মতো উপভোগ করতে পারেনি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমি অনেক বড় কিছু আর আরেকজন ‘সাধারণ’। উই অল আর হিউম্যান বিং। আমাদের সবার মধ্যেই চিন্তাশক্তি, ক্রিয়েটিভিটি, আনন্দ-বেদনা অনুভূতি আছে। আমি সেসব মানুষের তুলনায় মোটেও আলাদা নই। কখনো সেটা দাবিও করি না। আর লেখালেখির কাজটি আমার কাছে কখনোই ক্লান্তিকর মনে হয়নি। আমার কাছে এটি খুবই আনন্দময় কাজ। আর সেই আনন্দ থেকেই লিখে যাচ্ছি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে তৃপ্তির ব্যাপারটা। ওই যে বললাম আমার আনন্দ। আসলে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ যারা কোনো কিছুতেই তৃপ্ত নয়। কিন্তু আমি খুব অল্পতেই তৃপ্ত। অতৃপ্তি ব্যাপারটা আমার মধ্যে নেই। আর যখন যে কাজটা করি সেটাতেই আমি সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত হই। আমি যে ছবিটা বানালাম আমার কাছে মনে হয় এটাই আমার সেরা কাজ। সেরা বইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটা নতুন কাজ আমার কাছে শ্রেষ্ঠ মনে হয়। আমার অতৃপ্তি নেই। মেবি আমি ক্রিয়েটিভ লোক না। কারণ শুনেছি ক্রিয়েটিভ লোকদের তৃপ্তি থাকতে হয় না, অতৃপ্তি থাকতে হয়।

 

লোকজন আগ্রহ নিয়ে আমার বই পড়ছে, এটাই আমার জীবনের পরম প্রাপ্তি

আমি একজন লেখক। নিজেকে আমি ‘ফিকশন রাইটার’ বলতেই পছন্দ করি। ফিল্মমেকিং অন্যরকম একটা বিষয়। নিজেকে কখনোই ফিল্মমেকার বলি না। ছোটবেলা থেকে ছবি দেখার ব্যাপারে খুব আগ্রহ ছিল। লেখালেখি, ছবি দেখা পুরোটাই পেয়েছি বাবার কাছ থেকে। কোনো বাবা এমন রসিক আর সংস্কৃতিমনা হতে পারেন- সেটা আমার বাবাকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হতো। তো যা বলছিলাম, ছোটবেলা থেকেই ছবি দেখতাম। বড় হওয়ার পর মনে হতো এত সুন্দর ছবি দেখি অথচ আমাদের এখানে ভালো ছবি বানানো হচ্ছে না। আরেকটা আক্ষেপ ছিল। সেটি হলো- আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবির অভাব। নিজে মুক্তিযুদ্ধ না করলেও পতাকার জন্য বাবাকে হারিয়েছি। তাই একটা দায়বোধ ছিল। ভাবতাম এতবড় একটা মুক্তিযুদ্ধ হলো অথচ সেটা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো ছবি নেই। এই আফসোস থেকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটা ছবি বানালাম ‘আগুনের পরশমণি’। এ ছবিটি নির্মাণ করতে সব খরচ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তারপর থেকে চালিয়ে যাচ্ছি ছবি বানানো। এর বাইরে যখন যেটা ইচ্ছা করে সেটাই করার চেষ্টা করি। আমি আসলে আনন্দের জন্য বাঁচি।

আর আমাকে কলম জাদুকর বললে বাড়িয়ে বলা হবে। বাংলা সাহিত্যে অনেক বড় বড় জাদুকর তৈরি হয়েছে। আমাকে বাংলা সাহিত্যের একজন দীন সেবক বলা যেতে পারে। সেবা করে যাচ্ছি। সেবা করার যে সুযোগটা পেয়েছি এতেই আমি খুশি। লোকজন আগ্রহ নিয়ে আমার বই পড়ছে, এটাই আমার জীবনের পরম প্রাপ্তি। আর কতটুকু দিতে পেরেছি না পেরেছি সেটি ভাববে সমালোচকরা, সমাজবিদরা। আমার কাজ হচ্ছে, শুধু লেখালেখি করা।

 

একটা কচ্ছপ কেন সাড়ে তিন বছর বাঁচে, মানুষ কেন বাঁচে না

জীবনের শেষ উপলব্ধি মানে রিয়েলাইজেশনটা-শেষ রিয়েলাইজেশন হচ্ছে ‘জীবন অনেক, অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার’। তারাশঙ্করের কবির মতো মাঝেমধ্যে আমার বলার ইচ্ছা করে, জীবন এত ছোট ক্যানে? ওই যে একটু আগে বললাম, একটা কচ্ছপ কেন সাড়ে তিন শ বছর বাঁচে, মানুষ কেন বাঁচে না। জীবনটা আমার খুব ছোট মনে হয়। তোমাদের মনে হয় না? নাকি এখনো টের পাও নাই? টের পাইবা... (সংক্ষেপিত)

 

অজানা কথা

♦ হুমায়ূন আহমেদ সবসময় ফুলহাতা শার্ট পরে ঘুমুতে যেতেন।

♦ ঘুমানোর পোশাক হিসেবে হুমায়ূনের পছন্দ ছিল নতুন শার্ট। নতুন শার্ট না থাকলে লন্ড্রি থেকে ইস্ত্রি করা পাটভাঙা শার্ট পরে ঘুমানো ছিল তাঁর অভ্যাস।

♦ হুমায়ূন আহমেদ সারা জীবনে মোট দুটো গালি ব্যবহার করতেন। প্রথমটি হলো- ফাজিল, দ্বিতীয়টি হলো- ফাজিলের ফাজিল।

♦ মুদ্রাদোষ হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত বাক্যটি ছিল, ‘লজিক কী বলে?’

 

মুহসীন হলের যে কক্ষে বসে লেখেন নন্দিত নরকে

হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ১৯৬৮ সালে। ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে ফজলুর রহমান হলে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে থাকা শুরু করেন। কারণ ছিল ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত মুহসীন হলে তখন লাগানো হয়েছে লিফট। একদিকে নবনির্মিত হল এবং অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম লিফট তাঁকে দারুণভাবে আকর্ষণ করেছিল। তাঁর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনের পুরোটাই এখানে অতিবাহিত করেন। মুহসীন হলের ৫৬৪ নম্বর কক্ষে বসেই তিনি তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ লিখেছিলেন। তবে ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭২-এ হুমায়ূনের লেখক বন্ধু আহমদ ছফার উদ্যোগে উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়। তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘শঙ্খনীল কারাগার’ এর সঙ্গেও মুহসীন হলের স্মৃতি জড়িত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর