সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

জেলখাটা তারকারা

আবদুল কাদের

জেলখাটা তারকারা

খ্যাতির শিখরে থেকেও অনেক তারকা কাটান এলোমেলো জীবন। পর্দায় নানা চরিত্র এবং সেলিব্রেটি হলেও বাস্তব  জীবনেও এরা রীতিমতো জেলখাটা আসামি। নাম লিখিয়েছেন অপরাধের খাতায়।

 

ও জি সিম্পন

ওরেন্থাল জেমস ছিলেন বাফেলো বিলস ও সান ফ্রান্সিসকো ৪৯-এর জনপ্রিয় বেসবল খেলোয়াড়। তার অসংখ্য রেকর্ড ও সাফল্য থাকলেও তিনি এখন জেলখাটা আসামি। ১৯৯৫ সালে তার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৭ সালে গোল্ডম্যান ও ব্রাউন মিথ্যা হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় গোল্ডম্যানের পরিবারকে ৩ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। ২০০৭ সালে সিম্পনসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ক্রীড়া স্মারক চুরির অভিযোগ ওঠে। তিনি তা স্বীকার করে নেন, কিন্তু বন্দুক দেখিয়ে নেননি বলেই জানান। মারণাস্ত্র ব্যবহার, অপহরণ, ডাকাতির মামলায় আবারও তাকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাকে ৩৩ বছরের কারাদন্ড দেন।

 

মার্থা স্টিওয়ার্ট

মার্থা স্টিওয়ার্ট একাধারে একজন লেখক, টিভি ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ী। ২০০৪ সালে তার বিরুদ্ধে ইমক্লোন স্টক ট্রেডিং মামলার অভিযোগ ওঠে। তখন মার্থা পাঁচ মাস ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার অ্যাল্ডারসন কারাগারে ছিলেন। এজেন্সির কাজে বাধা দেওয়ায় ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। জেলের ভিতরে মার্থা মেঝে ও দেয়াল পরিষ্কার করে সময় পার করেন। কারাগার ঘুরে ঘুরে এবং রাতের শারীরিক কসরতের ক্লাস করেও সময় পার করতেন। এমনকি তিনি তখন বাগানও করেছিলেন। মার্থা একজন ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও তার শখই হলো ইনডোর প্লান্ট এবং বাগান তৈরি, ফুল বাছাই, ছবি আঁকাসহ সিরামিকের পিস এবং ক্রিসমাস তৈরি করা।

 

ড্যানি ত্রেজো

সম্ভবত অপরাধমূলক জীবনব্যবস্থার কারণেই ড্যানি ত্রেজোকে হলিউডে ভয়ঙ্কর খলনায়ক হিসেবেই চেনে। স্পাই কিডস, ওয়ানস আপন এ টাইম ইন মেক্সিকো ও মাচিতি মুভিগুলো দেখলে আরও ভালো চেনা যাবে। ত্রেজোকে ক্যালিফোর্নিয়া কারাগারের বাসিন্দাই বলা চলে। অনেকবার জেল খেটেছেন তিনি। ১৯৬০ সালে ত্রেজো মাদক পাচার এবং অস্ত্র ডাকাতির মামলায় জড়িয়ে পড়েন। আদালত তাকে ১১ বছর কারাদন্ড দেন। কারাগারে ১১ বছর কাটান এবং জেলে থাকাকালীন ত্রেজো বক্সিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হন।

 

লিন্ডসে লোহান

তিনি হলিউডের হিট অভিনেত্রী। জড়িত নানা স্ক্যান্ডালের সঙ্গে। মাদকাসক্তের জন্য ২০১০ সালে ৯০ দিনের জেল-জরিমানার আদেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে তা কমিয়ে ১৪ দিন ধার্য করা হয়। জেল থেকে মুক্তির পরই আদালত লোহানকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে            পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। এর বাইরেও কম দামি জিনিসপত্র চুরির রেকর্ডও রয়েছে তার নামে। লোহান নিজে কতবার জেলে গেছেন তার হিসাব নিজেই নাকি ভুলে যান! এমন বক্তব্যের কারণেই তিনি অনেক বিতর্কের মুখে পড়েন।

 

টম সিজমর

টম সিজমর শুধু অভিনেতাই নন, প্রযোজক হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে আমেরিকায়। ১৯ শতকের পেসেঞ্জার ৫, ট্র– রোমান্স এবং হিট মুভিগুলোর মূল আকর্ষণে ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে বান্ধবী হেইডি ফ্লিসকে আক্রমণের কারণে তাকে জেলে যেতে হয়। ওই অপরাধে সিজমরকে ছয় মাসের কারাবাস করতে হয়েছিল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সিজমর ড্রাগে জড়িয়ে পড়েন। ড্রাগ পরীক্ষায় ব্যর্থ এবং পরীক্ষাকালীন ঝামেলা করায় ২০০৭ সালে তাকে ১৬ মাসের জন্য আবারও জেলে যেতে হয়েছিল। যদিও এখন তিনি জেলের বাইরে আছেন।

 

ফক্সি ব্রাউন

র‌্যাপার হিসেবেই ফক্সি ব্রাউনের খ্যাতি। শুধু র‌্যাপিংয়ে নন, ফক্সি তার সময়ের আবেদনময়ী সুন্দরীদের একজন। ২০০৬ সালে তিনি দুটি নেইল-স্যালনে হামলা করেছিলেন। সে অভিযোগে তাকে নয় মাস জেলও খাটতে হয়েছিল। ফক্সি কারাগারে বিলাসী হালে ছিলেন। কারাগারের ভিতরে গুকি স্নিকার ও ফেন্ডি স্কার্ফ পরা, যে কোনো সময় টিভি ও ফোন ব্যবহার, গার্ডদের দিয়ে খাবার অর্ডার, এমনকি একটি ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন ফক্সি।

 

সঞ্জয় দত্ত

বলিউডের দাপুটে অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ব্যক্তি জীবনেও প্রভাব ও প্রতিপত্তির কমতি রাখেননি বলা চলে। তবে তা অধিকাংশ সময় প্রকাশ পেয়েছে অন্ধকার জগতের ডন হিসেবে। শেষবারের মতো ২০১৬ সালে ৪২ মাস জেল খেটে তিনি মুক্তি পেলেন। এর আগে ২০০৭ সালে বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে কারাভোগ করতে হয় তাকে। বলিউড এ ডনের কারাভোগের ইতিহাস শুরু আরও আগের। ১৯৯৩ সালে অস্ত্র মামলা, ১৯৯৪ সালে একই মামলায় জামিনে থেকেও গ্রেফতার ও ২০০৬ সালে অস্ত্র মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়।

 

মনিকা বেদি

২০ বছর ধরে বলিউড কাঁপানো আবেদনময়ী অভিনেত্রী মনিকা বেদি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আন্ডারওয়ার্ল্ডের গ্যাংস্টার আবু সেলিমের সঙ্গে অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন বলিউড তারকা মনিকা বেদি। ফলাফল নাম-যশ সবই খোয়ান। ২০০২ সালে অবৈধভাবে পর্তুগালে অনুপ্রবেশের কারণে পর্তুগাল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। ২০০৬ সালে জাল পাসপোর্টের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মনিকা বেদি গায়ক গুলশান কুমার খুনের মামলায় জড়িয়ে পড়েন। জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী মোট আট বছর জেল খাটেন।

 

সালমান খান

২০০২ সালে মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যার পর ১৮ দিনের জন্য সালমানকে হাজতবাস করতে হয়েছিল। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পাঁচ বছরের কারাদন্ড হয় বলিউড নায়ক সালমান খানের। এমনকি  পরিচালকদেরও মাথায় হাত     পড়ে নায়কের এমন পরিণতিতে। ২০১৫ সালের এ রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শর্ত সাপেক্ষে জামিন পান তিনি। এর আগে ১৯৯৮ সালে রাজস্থানে  একটি শুটিংয়ে গিয়ে বিরল প্রজাতির হরিণ শিকারের অভিযোগে তার নামে করা অস্ত্র আইনের মামলা ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন। শেষে অব্যাহতি পান ২০১৭ সালে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর