শিরোনাম
রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্বের গোপনীয় যত জায়গা

রণক ইকরাম

বিশ্বের গোপনীয় যত জায়গা

অজানাকে জানার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছে মানুষ। আর সেই গবেষণায় সাফল্যও এসেছে অনেকদূর। এরপরও পৃথিবীতে যেমন অনেক অজানা জিনিস রয়েছে, তেমনি নিয়মের বেড়াজালে মানুষও তৈরি করেছে অনেক রহস্য। পৃথিবীজুড়ে এমন কতগুলো সিক্রেট প্লেস বা গোপন স্থান রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে বাইরের পৃথিবী তেমন কিছুই জানে না। এ জায়গাগুলোয় প্রবেশাধিকার একেবারে সংরক্ষিত। কেউ চেষ্টা করলেও সেখানে যেতে পারবেন না। শুধু নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পারে এ জায়গাগুলোর ভিতর ঢুকতে। কেবল তারাই জানেন এর ভিতরে কী হয়, কীভাবে হয়। আর বাইরের মানুষজন কেবল মুখরোচক গল্পই ফাঁদে। এ রকম কয়েকটি গোপনীয় ও রহস্যময় জায়গা নিয়ে আজকের আয়োজন।

 

রাফ মেনওয়াদ হিল

বিস্ময়কর এক স্থান

এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর, রহস্যমণ্ডিত গোপন স্থান মনে করা হয়। বছরের পর বছর ধরে বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষের কাছে এ স্থানটি অপার রহস্যের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত হয়ে এসেছে। তবে জায়গাটির বিশেষত্ব সবচেয়ে বেশি পৃথিবীর বাঘা বাঘা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে। যেখানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজই এরকম রহস্য আর সন্দেহজনক বিষয় নিয়ে সেখানে খোদ তারাই বিভ্রান্ত রাফ মেনওয়াদ হিল নিয়ে। এটি সাধারণ কোনো পাহাড় নয়।

এটি ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত গোপন পাহাড়গুলোর একটি। এখানে একটি ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যেখান থেকে ব্রিটিশদের যাবতীয় গোপন গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো হয়। ধারণা করা হয়, এখানকার ব্রিটিশ সামরিক বেসের সঙ্গে বিশ্বখ্যাত গুপ্তচর নেটওয়ার্ক ‘ইখেলন গ্লোবাল স্পাই নেটওয়ার্কিং’-এর খুব ভালো যোগাযোগ রয়েছে। অনেকের ধারণা, এটি কেবল ইংল্যান্ডকেই গোয়েন্দা সাপোর্ট দিচ্ছে এমন নয়, বরং এর বন্ধুদেশ আমেরিকাকেও এখান থেকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা হয়। আমেরিকার সংশ্লিষ্টতার কারণে জায়গাটির প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে নিরাপত্তাও। এখানকার চারপাশে এত জটিল ও এত বেশি স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে যে, খুব সহজে সেটি ডিঙিয়ে বাইরে পৌঁছা সম্ভব নয়। ধারণা করা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইলেকট্রনিক মনিটরিং স্টেশনের অবস্থান এখানেই।

আর সেই মনিটরিং স্টেশন এত বেশি পাওয়ারফুল যে, এখান থেকে অনেক দেশের সব টেলিফোন এবং বেতার যোগাযোগ মনিটরিং করা সম্ভব। তবে রাফ মেনওয়াদ হিলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ যেটি, সেটি হচ্ছে- বাণিজ্যিক গুপ্তচরবৃত্তি। এখান থেকে টাকার বিনিময়ে নানা দেশের কাছে বিভিন্ন রকমের গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা হয়।

 

ক্লাব ৩৩ ডিজনিল্যান্ড

অন্যতম সেরা বিনোদন স্পট

বিশ্বের অন্যতম সেরা বিনোদন স্পট ও অ্যামিউজমেন্ট পার্ক হিসেবে ডিজনিল্যান্ডের আলাদা একটি পরিচয় রয়েছে। শুধু বিনোদনের জন্যই পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে প্রায় প্রতিদিন মানুষ ছুটে আসেন ডিজনিল্যান্ডে। মূল ডিজনিল্যান্ড সবার জন্য উš§ুক্ত হলেও এখানকার একটি স্থান খুবই গোপন। এখানে চাইলেই কেউ ঢুকতে পারেন না। পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও রহস্যময় স্থানের তালিকায় উঠে আসা একমাত্র ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের স্থান এটি। বাকিগুলোর সঙ্গে কোনো না কোনো দেশ, কোনো না কোনো গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। তবে ডিজনিল্যান্ডের নিউ অরলিন্স স্কয়ারে অবস্থিত ক্লাব ৩৩ নেহাতই একটি ব্যক্তিগত ক্লাব। আর এই ক্লাবটি ভীষণভাবে সংরক্ষিত করে রাখা হয়। এখানে প্রায় সবসময় মদ বিক্রি করা হয়। তবে কাগজেকলমে মদের কোনো উল্লেখ নেই। দাফতরিকভাবে মদের ব্যাপারটি একেবারে চেপে যাওয়া হয়েছে। এ ক্লাবের সদস্য হওয়াটাও চাট্টিখানি কথা নয়। আপনি এখনই যদি সদস্য হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে আপনাকে প্রচুর টাকা গুনতে হবে। খরচের পরিমাণ হবে ১০ থেকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। আর এখানকার বার্ষিক চাঁদা ৩২৭৫ থেকে ৬১০০ মার্কিন ডলার। আর টাকা গুনলেই যে সদস্যপদ মিলবে তাও ঠিক নয়। কারণ আজকে আবেদন করলে সবকিছু যাচাই-বাছাই শেষে যদি রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তাহলেও এখানকার সদস্য হতে প্রায় ১৪ বছর সময় লাগবে। জনসাধারণ ও অন্যদের জন্য এ জায়গাটিতে প্রবেশ নিষেধ। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখানে সুনির্দিষ্ট কাজ এবং সুনির্দিষ্ট অনুমোদন ব্যতিরেকে প্রবেশ করতে পারে না।

 

রুম ৩৯

এটি আসলে একটি সিক্রেট সংস্থা

নাম রুম থার্টি নাইন হলেও আদতে এখানে কোনো কক্ষের নাম বলা হচ্ছে না। এটি আসলে একটি সিক্রেট সংস্থা। এ সংস্থার হেডকোয়ার্টার এবং খোদ সংস্থাটিকেই বিশ্বের অন্যতম রহস্যমণ্ডিত ও গোপন এলাকা ধরা হয়। এটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার একটি গোপন সংগঠন। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনটির কার্যক্রম এবং এর বিচরণ ক্ষেত্র সম্পর্কে এখনো কোনো পরিষ্কার ধারণা লাভ করা যায়নি। তবে প্রচলিত ধারণা অনুসারে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানেই সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রেখে এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় বলে মনে করা হয়। তবে এ সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কেউ অবগত নয়। খোদ উত্তর কোরিয়ার লোকজনের কাছেই এটি একটি অপার রহস্য এবং নানা মুখরোচক গল্পের কেন্দ্রবিন্দু। অনেক গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, বিশ্বের অনেক বড় বড় অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে এ সিক্রেট অর্গানাইজেশন। এ সংগঠনটি বিশ্ববাজারে নকল আমেরিকান ডলার ছেড়ে সবার কাছে আলোড়ন তোলে। যদিও নকল আমেরিকান ডলারের সঙ্গে এ সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করা যায়নি, এরপরও এই সুপার ডলার কেলেঙ্কারির পেছনে এদেরই দায়ী করা হয়। সুপার ডলার হচ্ছে আমেরিকান ডলারের নকল ভার্সন অথবা জাল ডলার যা কি না পৃথিবীর সব গোয়েন্দা সংস্থা আর আমেরিকার মতো দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। আর এসব ডলার এতই নিখুঁত যে, দেখতে একেবারে মূল ডলারের মতোই লাগত। শুধু তাই নয়, উন্নতমানের কটন-লিনেন বেন্ড দিয়ে তৈরি এই ডলারে আমেরিকার মুদ্রার অনেক সিকিউরিটি ফিচারও সংযুক্ত ছিল।

 

মস্কো মেট্রো

শহরে কারা থাকে কেউ জানে না

কারও কারও দৃষ্টিতে এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে গোপনীয় ও রহস্যময় স্থান। তবে এসব জায়গার কোনোটি সম্পর্কেই যেহেতু মানুষের কোনো পরিষ্কার ধারণা নেই, তাই সবগুলোকে মোটামুটি একই কাতারে ফেলা যায়। সেদিক থেকে রাশিয়ায় অবস্থিত মস্কো মেট্রো-২ এর অবস্থান তালিকার ওপরের দিকেই হওয়ার কথা। আর এ গোপন স্থানটির আরেকটি বিশেষত্ব হলো- এটি একটি আন্ডারগ্রাউন্ড। আরও স্পষ্ট করে বললে এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি। পুরো একটি শহর অথচ কারও জানা নেই, এখানে কারা থাকে, কী করে। দেখতে কেমন ইত্যাদি। তবে স্থানটির অস্তিত্ব মোটেও স্বীকার করে না রাশিয়ান সরকার। এর পেছনের কারণ হিসেবে এ স্থানটি নিয়ে চরম গোপনীয়তাকেই কারণ মনে করা হয়। যেহেতু রাশিয়ানদের গোপন তৎপরতাগুলোর অনেক কিছুই এখান থেকে চালানো হয়, তাই রাশিয়ান সরকার কোনোমতেই চাইবে না পৃথিবীর কাছে সেগুলো প্রকাশ হয়ে পড়ুক। তাই পুরো জায়গাটিকে কোনো প্রকার স্বীকৃতি না দিয়ে অস্তিত্বহীন করে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ মনে করছে কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হয়, এ আন্ডারওয়ার্ল্ড সিটি তৈরি হয়েছিল স্টালিনের আমলে। আর এখান থেকেই রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। আন্ডারওয়ার্ল্ড সিটির অস্তিত্বে বিশ্বাস করে এমন মানুষের দাবি, এ আন্ডারওয়ার্ল্ড সিটি ক্রেমলিনের সঙ্গে এফএসবি হেডকোয়ার্টারের সংযোগ স্থাপন করে আছে।

 

এরিয়া ৫১

পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন স্থানগুলোর একটি

পৃথিবীর সব গোপন স্থানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ও গল্পের প্রচলন রয়েছে সম্ভবত এরিয়া ৫১-কে ঘিরে। এটি আমেরিকায় অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন স্থানগুলোর একটি। এর অবস্থান আমেরিকার নেভাদা মরুভূমিতে। এটি আমেরিকার একটি গোপন সামরিক ঘাঁটি যেখানকার কর্মীরা সরাসরি মি. প্রেসিডেন্টের কাছে দায়বদ্ধ। জায়গাটি নিয়ে বিশ্ববাসীর সবচেয়ে বেশি কৌতূহল। এ এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আর এ এরিয়ার বাইরেও চারদিকে বিশাল এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে নো ম্যানস ল্যান্ড। যেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। সাইনবোর্ডে স্পষ্ট লেখা আছে- সাধারণ কেউ সংরক্ষিত এলাকার দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে গুলি করা হবে। ধারণা করা হয়, আমেরিকার সবচেয়ে বড় বড় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা, গোপন গবেষণা সবকিছুই এখান থেকে পরিচালিত হয়। অস্ত্রশস্ত্র তৈরি, অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য এ ঘাঁটিকে ব্যবহার করা হয়। পত্র-পত্রিকায় নানা সময়ে এ জায়গাটি কেন্দ্র করে নানা মুখরোচক খবর বেরোলেও আমেরিকান সরকার সেগুলোকে বরাবরই এড়িয়ে গেছে। মাঝখানে খবর বেরোয়, ইউএফও সমেত একটি এলিয়েন ধরা পড়েছে। আর সেই এলিয়েনের শরীরের ব্যবচ্ছেদ ঘটানো হয় এ এলাকার ভিতরেই। বেশ কিছু বিজ্ঞানীর দাবি- আমেরিকানদের ভিনগ্রহী প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে যে গবেষণা চলছে তার পুরোটাই এখান থেকে পরিচালিত হয়। বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে এখান থেকে ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে বলে দাবি করেন অনেকে। আমেরিকানদের ১৯৬৯ সালে চন্দ্র বিজয় নিয়ে যে বিতর্ক, তার সঙ্গেও জড়িত এই এরিয়া ৫১।

 

হোয়াইট জেন্টেলম্যানস ক্লাব

এটি ক্লাব-৩৩ এর মতোই আরেকটি গোপন ক্লাব। শুধু তাই নয়, এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে অভিজাত ক্লাব ধরা হয়। ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে অবস্থিত এ ক্লাবটি লন্ডন তো বটেই বিশ্বের সব ভিভিআইপির ক্লাব হিসেবে স্বীকৃত। কোনো নারী এ ক্লাবের সদস্য হতে পারেন না। রাজপরিবারের লোকজন, রাজনৈতিক বা ব্যবসা ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যতিরেকে কেবল টাকা থাকলেই এ ক্লাবের সদস্য হওয়া যায় না। এর বাইরে কেউ এ ক্লাবের সদস্য হতে চাইলে ব্যাপক কাঠখড় পোহাতে হয়। নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্লাবের সদস্যপদ পাওয়া যায়। এখানকার ক্লাবটি কঠোর গোপনীয়তা ও আভিজাত্যের জন্য বিখ্যাত হলেও এ ক্লাবের বাজির বই বা বেটিং বুক বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। এ বই এখানকার সদস্যদের নানারকম উদ্ভট বাজি ধরার অনুমোদন দেয়। এ ধরনের বাজির মধ্যে বিখ্যাত হলো ৩ হাজার পাউন্ডের একটি বাজি।

 

আইস গ্র্যান্ড শ্রিন

এ জায়গাটি সমগ্র বিশ্বের কাছে আরেকটি বিস্ময় ও রহস্যের নাম। এটি জাপানে অবস্থিত। আইস গ্র্যান্ড শ্রিন যেমন জাপানের সবচেয়ে গোপনীয় স্থান, তেমনি এটি সেখানকার সর্বোচ্চ পবিত্র স্থান। আর এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম গোপন স্থানগুলোর একটি মানা হয়। আইস গ্র্যান্ড আসলে জাপানের ১০০টিরও বেশি মঠের সমষ্টি যা কি না খ্রিস্টপূর্ব ৪ অব্দে নির্মাণ করা হয়েছিল। এ জায়গাটির ভিতরে সাধারণ কারও প্রবেশাধিকার নেই। আর ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের মতে, এখানে এককালের জাপানিজ সাম্রাজ্যের অনেক পুরনো এবং মূল্যবান নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। রয়েছে অনেক জরুরি নথিপত্রও যা কখনো বিশ্বের সামনে আসেনি। আইস গ্র্যান্ড শ্রিন বিশ্ববাসীর সামনে উš§ুক্ত হলে বিশ্বসভ্যতা ও ইতিহাসের অনেক দিকই ভিন্নমাত্রা পেত বলে গবেষকরা মনে করেন। কিন্তু সেটি একেবারেই অসম্ভব। কেননা সাধারণ কেউই এ পবিত্র জায়গাটিতে প্রবেশ করতে পারেন না। শুধু পূজারি অথবা জাপানের রাজপরিবারের লোকজন নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এখানে প্রবেশ করতে পারেন। এতকাল ধরে জাপানের রাজকীয় পরিবার আর প্রিস্ট ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউ এখানে ঢুকতে পারেননি। এ শ্রিনটি প্রতি ২০ বছর পরপর ভেঙে আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। আর এ ক্ষেত্রেও অবলম্বন করা হয় কঠোর নিরাপত্তা আর গোপনীয়তা।

 

ভ্যাটিকান সিটি আর্কাইভ

তালিকায় থাকা সবচেয়ে শক্তপোক্ত নামটি সম্ভবত ভ্যাটিকান সিটি। কারণ এখানকার গোপনীয়তা ও রহস্যময়তা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই, কারও কোনো দ্বিধা বা সংশয় নেই। প্রকৃত অর্থেই এটি রহস্য এবং গোপনীয়তার নগরী। আর যুগ যুগ ধরে মানুষের আগ্রহ আর রহস্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এ ভ্যাটিকান সিটি।

পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক পটপরিবর্তন ও গুরুত্বপূর্ণ সব ঘটনাপ্রবাহের সাক্ষী এ ভ্যাটিকান সিটি। আর ভ্যাটিকান সিটির ভিতর সবচেয়ে রহস্যের জায়গাটি হলো ভ্যাটিকান সিটি আর্কাইভ বা সংগ্রহশালা। জায়গাটিকে বলা হয়, ‘স্টোর হাউস অব সিক্রেট’। অর্থাৎ গোপনীয়তার সংগ্রহশালা। এ জায়গাটিতে সাধারণ তো নয়ই ভ্যাটিকান সিটির স্কলাররাও ঢোকার অনুমতি পান না। খুব অল্প সংখ্যক স্কলার বা পণ্ডিতেরই এখানে ঢোকার সৌভাগ্য হয় বা হয়েছে। তাও মহামান্য পোপের অনুমতি ছাড়া সেটি একেবারেই অসম্ভব। অত্যন্ত সুরক্ষিত এ জায়গাটিকে পবিত্রতার দিক থেকেও আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে প্রায় ৮৪ হাজার বই আছে। এ জায়গাটি প্রায় ৮৪ কি.মি দীর্ঘ। ধারণা করা হয় খ্রিস্টান, মিশনারি, প্যাগান আরও অনেক ধর্ম আর মতবাদের অনেক গোপন ডকুমেন্ট এখানে সংরক্ষিত আছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর