শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইতিহাসের পাতায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস

ইতিহাসের পাতায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস

৮ মার্চকে বিশ্ব নারী দিবস হিসেবে পালন করার রীতি বেশ পুরনো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে দিবসটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বের সঙ্গে দিনটি পালন করা হয়। কিন্তু এই দিনটি আসলে কীসের জন্য?  কবে থেকে পালন হচ্ছে? আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এর নানা দিক। 

 

প্রায় একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে সারা বিশ্বের মানুষ। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সংক্ষেপে আইডব্লিউডি বলা হয়ে থাকে। মূলত শ্রমিক আন্দোলন থেকেই নারী দিবসের ধারণার জন্ম। পরবর্তীতে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়।

১৯০৮ সালে কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা, বেতন বৃদ্ধি এবং ভোটাধিকারের দাবিতে প্রায় ১৫ হাজার নারী নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছিল। এ আন্দোলন সারা বিশ্বে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এই আন্দোলনের এক বছর পর আমেরিকার সোশ্যালিস্ট পার্টি সর্বপ্রথম জাতীয় নারী দিবস ঘোষণা করে। জাতীয় পর্যায় থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পরিণত করার প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন কমিউনিস্ট ও নারী অধিকার কর্মী ক্লারা জেটকিন। ১৯১০ সালে তিনি কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধারণার প্রস্তাব দেন। সেই সম্মেলনে উপস্থিত ১৭ দেশের ১০০ জন নারীর সবাই তার প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করেন।

এর পরের বছর, অর্থাৎ ১৯১১ সালে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ২০১১ সালে পালিত হয় দিনটির শতবর্ষ।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণাটি যখন ক্লারা উত্থাপন করেন, তখন তিনি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের আগ পর্যন্ত দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট করা যায়নি বলেই উল্লেখ রয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে। একই বছর রুশ নারীরা ‘রুটি এবং শান্তি’-এর দাবিতে তৎকালীন জারের (রাশিয়ার সম্রাট) বিরুদ্ধে ধর্মঘট শুরু করেন; এর ৪ দিনের মাথায় গদি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল জার এবং জারের গদিতে বসা অস্থায়ী সরকার তখন নারীদের আনুষ্ঠানিক ভোটাধিকার দিয়েছিলেন। সে সময়ে রাশিয়ায় প্রচলিত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, নারীদের ধর্মঘট শুরু হয়েছিল ২৩ ফেব্রুয়ারি, রবিবার।

আর গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে এই দিনটি ছিল ৮ মার্চ; পরবর্তীতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৮ মার্চকেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মূলত, সামাজিক সব বাধাবিপত্তি পেরিয়ে নারীর সুন্দর, নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবনের নিশ্চয়তার জন্যই আনুষ্ঠানিকভাবে নারী দিবস পালিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর