শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধে মওলানা ভাসানী

মহিউদ্দিন খান মোহন

মুক্তিযুদ্ধে মওলানা ভাসানী

পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ববাংলা তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা সর্বপ্রথম উচ্চারণ করেছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। প্রথমত, তাঁরই উদ্যোগে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকারের বিপরীতে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ; যা পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্মলাভের  ১০ বছরের মাথায় ১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে (সন্তোষ) আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের উদ্দেশে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে তিনি বুঝিয়ে দেন, পাকিস্তানের দুই অংশের একত্র থাকা সম্ভব নয়। ওই সময় অনেকে তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও পরবর্তীকালে এর যথার্থতা অনুধাবন করতে সক্ষম হন। এর ১৩ বছর পর ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর দেশের দক্ষিণ উপকূলে প্রলয়ংকরী সাইক্লোনে লণ্ডভণ্ড এলাকা সফর শেষে ঢাকায় ফিরে ২৩ নভেম্বর পল্টন ময়দানের জনসভায় তিনি পাকিস্তানিদের উদ্দেশে ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন’ বলার মাধ্যমে আবারও স্বাধীনতার কথা স্পষ্ট করেই উচ্চারণ করেন। তিনি নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত আওয়ামী লীগসহ অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন বর্জন করে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করারও আহ্বান জানান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ঘোষণার পর ৯ মার্চ পল্টন ময়দানের জনসভায় ভাষণ দিয়ে মওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধুকে আলোচনার পথ পরিত্যাগ করে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করার আহ্বান জানান। এমনকি তিনি জনগণের উদ্দেশে এও বলেন, ‘আমি শেখ মুজিবের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছি, তোমরাও তাঁর নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ো।’ বস্তুত মওলানা ভাসানী আগাগোড়াই ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার। এক কথায় তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা।

২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় মওলানা ভাসানী ছিলেন সন্তোষে। ৩ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী তাঁর সন্তোষের বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। সে সময় তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম বিন্নাফৈরে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের অনুচরদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরুর ভিত্তিভূমি ভারতের আসাম রাজ্যে প্রবেশ করেন। এ সম্পর্কে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ভাসানী গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর ‘ভাসানী’ গ্রন্থে (প্রথম খন্ড) লিখেছেন- ‘১৭ এপ্রিল ১৯৭১-এ দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা ‘সীমান্তের এপারে ভাসানী : সজল চোখে সাহায্য প্রার্থনা’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে মওলানা ভাসানীর আসামে গমনের সংবাদ প্রকাশ করে। পত্রিকাটি জানায়, সেখানে আগের দিন মাঝরাতে ভারতের কেন্দ্রীয় শিল্পোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী মৈনুল হক চৌধুরী ও আসামের তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী সৈয়দ আমেদ আলীর সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের জনগণের ওপর পাকিস্তানি জঙ্গি ফৌজের নির্যাতন বন্ধের জন্য তিনি ভারত সরকারের সাহায্য প্রার্থনা করেন’ (পৃষ্ঠা : ৩৬৪-৩৬৫)। কাকতালীয় ব্যাপার হলো, আনন্দবাজার পত্রিকা যেদিন মওলানা ভাসানীর ভারতে প্রবেশের খবরটি প্রকাশ করে, ওই দিনই কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় (পরে মুজিবনগর) প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে। দুটি ঘটনা একই সময়ে ঘটলেও একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো যোগাযোগ ছিল না। সুতরাং এ কথা নিঃসংকোচে বলা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে মওলানা ভাসানী বরাবরই ছিলেন সোচ্চার এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ ও তা পালনে বিলম্ব করেননি। এরপর মওলানা ভাসানী কলকাতায় যান। ২৩ এপ্রিল আনন্দবাজার মওলানা ভাসানীর আরেকটি সুদীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পূর্ববাংলার মানুষের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার তীব্র সমালোচনা করে একাত্তরের সংগ্রামকে বহিঃশক্তির শোষণ, শাসন ও বাঙালিদের স্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে ন্যায়সংগত সংগ্রাম হিসেবে অভিহিত করেন। ভাসানী তাঁর বিবৃতিতে বলেন, “চীনসহ সমাজতান্ত্রিক দুনিয়া সব সময়ই শোষিত নিপীড়িত জনসাধারণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মহান সংগ্রামে সর্বপ্রকার মদদ জোগাইয়াছে। কিন্তু আজ পূর্ববাংলার সাড়ে সাত কোটি নিপীড়িত নিষ্পেষিত শোষিত মজলুম মানুষের দীর্ঘ ২৩ বৎসরের সংগ্রামের যে চূড়ান্ত সংগ্রামী রূপ পূর্ববাংলার মাটিতে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে, বাঙ্গালীদের এই মহান সংগ্রামে ও স্বাধীনতার প্রশ্নে তাঁহারা বিশ্বজনমতকে কীভাবে বুঝাইবেন যে, তাঁহারা নিপীড়িত শোষিত মানুষের বন্ধু?” (প্রাগুক্ত)।

মওলানা ভাসানীর ভারতে গমন ও স্বাধীনতার পক্ষে তৎপরতা সম্বন্ধে মঈদুল হাসান তাঁর ‘মূলধারা-৭১’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, “এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে আসাম সীমান্তের ধুবড়ী দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর মওলানা ভাসানী কোলকাতায় আসেন এবং তাজউদ্দীনের সঙ্গে পরামর্শের পর চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েট ইউনিয়ন, বৃটেন, ফ্রান্স, মিশর, জাতিসংঘ, আরব লীগ প্রভৃতি দেশ ও সংস্থার নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দানের অনুরোধ জানিয়ে আলাদা আলাদাভাবে তারবার্তা প্রেরণ করেন। মঈদুল হাসান লিখেছেন, মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ সংগ্রামের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখার উদ্দেশ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করার জন্য তাজউদ্দীন ও ভারত সরকারের কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং চারটি বিকল্প অঞ্চলকে তিনি চিহ্নিত করেন। প্রতিটি অঞ্চলের তুলনামূলক সুবিধা-অসুবিধা বিচার করে এই চারটি অঞ্চলের মধ্যে রংপুর- কুচবিহার সীমান্তকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয় এবং মাসাধিককাল কোলকাতা অবস্থানের পর তিনি কুচবিহার শহরের অদূরে তাঁর নতুন আশ্রয়স্থলে যান। কুচবিহারে অবস্থানকালে গুরুতর পেটের পীড়া দেখা দেওয়ায় তাঁকে দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস’-এ ভর্তি করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর হিমালয়ের পাদদেশে দেরাদুন শহরে (বর্তমানে উত্তরাখ- রাজ্যের রাজধানী) তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এই সমগ্র সময়ে বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র তাজউদ্দীনের সঙ্গেই তিনি যোগাযোগ রেখেছিলেন” (পৃষ্ঠা : ৮৪-৮৫)। মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতে মওলানা ভাসানীর অবস্থান সম্পর্কে বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ লিখেছেন, “ভারত সরকার সব সময় ভয় পেত যে মওলানা মুক্তি পেয়ে বিদেশ চলে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে (লন্ডন?) আরও একটি প্রবাসী সরকার গঠন করলে রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তান উপকৃত হবে। তদুপরি মওলানা ভারতের শত্রু চীনাদের পরম বন্ধু। বাংলাদেশের মুক্তির পথের দূরত্ব বাড়বে। কিন্তু দেরাদুন থেকে তিনি (ভাসানী) তাজউদ্দীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বিশ্বের ২৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে বাংলাদেশের স্বীকৃতি অর্জনের চেষ্টা করে দীর্ঘ পত্র লিখেছেন (ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডকুমেন্ট’ দ্রষ্টব্য)।” (মধ্যরাতের অশ্বারোহী (অখন্ড); পৃষ্ঠা : ৬৯৩-৬৯৪)।

ভারত সরকার অসন্তুষ্ট হতে পারে, এ আশঙ্কায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার মওলানা ভাসানীকে এড়িয়ে চলার নীতি অবলম্বন করে। তবে এক পর্যায়ে এসে প্রবাসী সরকারকে মওলানার দ্বারস্থ হতে হয়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের প্রতিনিধি আগা শাহী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ‘শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের আন্দোলন এবং তাকে ভারত সশস্ত্র যুদ্ধের রূপ দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করলে ভারত বেকায়দায় পড়ে যায়। কেননা, আওয়ামী লীগ এমনভাবে সরকার গঠন ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করছিল যে, তাতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন বা অংশগ্রহণ রয়েছে তা বোঝা যাচ্ছিল না। পাকিস্তানের প্রতিনিধির মন্তব্যের বিপরীতে ভারতের প্রতিনিধি সমর সেন একেবারে লা জবাব হয়ে যান। কেননা, তার কাছে এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত বা প্রামাণ্য দলিল ছিল না, যা দ্বারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণ সমর্থিত ‘জনযুদ্ধ’ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। সমর সেন এ বার্তা দিল্লিতে পাঠালে ভারত সরকার নড়েচড়ে বসে এবং বাংলাদেশবিষয়ক সমস্যার দায়িত্বে কেবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদায় নিযুক্ত ‘পলিসি প্ল্যানিং কমিটি’র চেয়ারম্যান ডি পি ধরকে কলকাতায় প্রেরণ করে। কলকাতায় চার দিন অবস্থান করে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ডি পি ধরের সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র বামপন্থি দলগুলোকে স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল শক্তি আওয়ামী লীগের সঙ্গে এমনভাবে গ্রথিত করা, যাতে এই সংগ্রাম জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের রূপ লাভ করে। ডি পি ধরের আলোচনা ও প্রস্তাবের আলোকে প্রবাসী সরকার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের আলোচনা শুরু করলেও আওয়ামী লীগের একাংশ এতে আপত্তি করে। মঈদুল হাসান লিখেছেন- “এই পরিস্থিতিতে সরকার জাতীয় ঐক্যজোট গঠন করে ঠিকই, তবে এই জোটকে কোনো কার্যকরী সংগঠনের মর্যাদা না দিয়ে নিছক উপদেষ্টা সংস্থার মর্যাদা দান করে এবং এর অধিকার সীমিত করে মুক্তি সংগ্রামের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে ‘পরামর্শ’ দানের মধ্যে। কিন্তু এই পরামর্শ দান প্রক্রিয়া কীভাবে বা কত নিয়মিত সংগঠিত হবে, সে বিষয়টিও সর্বাংশে অস্পষ্ট থাকে। অন্য কথায়, বৃহত্তর রণনৈতিক বিবেচনা থেকে জাতীয় মোর্চা গঠনের জন্য ভারতের জোরালো অভিমতের কথা বিবেচনা করে মন্ত্রিসভা ‘জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি’ গঠনে সম্মত হলেও সাংগঠনিক অর্থে এই মোর্চা একটি দুর্বল প্রতিষ্ঠানের রূপ লাভ করে”। (প্রাগুক্ত; পৃষ্ঠা : ৮২-৮৩)।

এরপর ৮ সেপ্টেম্বর সে কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য কলকাতায় নেতৃবৃন্দের যে বৈঠক হয়, তাতে অংশ নেওয়ার জন্য মওলানা ভাসানীকে দেরাদুন থেকে কলকাতায় আনা হয়। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছাড়া ন্যাপ চেয়ারম্যান মওলানা ভাসানী, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মনি সিং, ন্যাপের অপর অংশের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ এবং পূর্ববাংলা কংগ্রেসের মনোরঞ্জন ধর যোগদান করেন। সভায় মন্ত্রিসভার দুই সদস্য তাজউদ্দীন আহমদ ও মোশতাক আহমদ ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে আরও দুজন প্রতিনিধি এবং যোগদানকারী চার নেতাকে সদস্য করে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। তাজউদ্দীন আহমদকে ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। মঈদুল হাসান মন্তব্য করেছেন, “এমনিভাবে জাতীয় ঐক্যজোটকে একটি সক্রিয় রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত করার যে সামান্য সম্ভাবনা ছিল তা নিঃশেষিত হয়। তবে এই ঐক্যজোট যত দুর্বলই হোক, তা বৃহত্তর রণনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক শক্তি-সম্পর্ককে বাংলাদেশের অনুকূলে আনার পক্ষে সহায়ক হয়” (পৃষ্ঠা : ৮৫)। মূলত উপদেষ্টা কমিটি গঠনের মূল কারণ ছিল এটাই। ভারতের পরামর্শ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে সর্বদলীয় ও জনসমর্থিত জনযুদ্ধ হিসেবে পরিচিত করার উদ্দেশ্যে, যাতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা উপস্থাপন ও সমর্থনের পক্ষে বিশ্বজনমত সংগঠিত করা সহজ হয়। তবে বয়োজ্যেষ্ঠ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম প্রবক্তা হিসেবে মওলানা ভাসানীকে কমিটির প্রধান করা যৌক্তিক হলেও সেটা করা হয়নি। তাজউদ্দীনকে আহ্বায়ক করায় ওই কমিটি সরকারের একটি অঙ্গ-কমিটিতে পরিণত হয় এবং এর কোনো কার্যকারিতা আর থাকেনি। উল্লেখ্য, ৮ সেপ্টেম্বরের পরে ওই উপদেষ্টা কমিটির আর কোনো সভা হয়নি।          

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর