বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

পৃথিবীখ্যাত নান্দনিক বাতিঘর

আবদুল কাদের

পৃথিবীখ্যাত নান্দনিক বাতিঘর

শতাব্দী থেকে শতাব্দী সমুদ্রপথে বাণিজ্য জাহাজের পথপ্রদর্শক- লাইটহাউস (বাতিঘর)। যা নাবিকদের তীরের সন্ধান দিয়ে আসছে। এসব স্থাপনারও রয়েছে গর্বিত ইতিহাস।

 

গ্রিসের আন্দ্রোস দ্বীপের বাতিঘরটি বিশ্বের অন্যতম মনোরম এবং অনন্য বাতিঘর। ১৯ শতকে নির্মিত বাতিঘরটি দ্বীপের রাজধানী চোরা উপকূলে একটি খাড়া পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে...

আদিম যুগে সমুদ্রের দ্বীপশিখা থেকে আজকের আধুনিকতা; সমুদ্রপথের জাহাজের নাবিকদের পথপ্রদর্শক বাতিঘরের আলোর ঝলকানি অনেক দূর এগিয়েছে। অসংখ্য শতাব্দী ধরে সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করছে- লাইটহাউস (বাতিঘর)। এসব স্থাপনা আবার নাবিকদের প্রকান্ড ঢেউয়ের মাঝেও দেখিয়ে আসছে তীরের সন্ধান।

ইতিহাসে বাতিঘরের ঐতিহাসিক সূচনা মিসর পর্যন্ত প্রসারিত। যেখানে রয়েছে প্রাচীন বিশ্বের সাতটি আশ্চর্য এবং সবচেয়ে বিখ্যাত বাতিঘরগুলোর একটি। ইতিহাসবিদদের মতে, মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার ফারোস বন্দরে ছিল ‘ইতিহাসের প্রথম বাতিঘর’। যা সমগ্র বিশ্বের বুকে- ‘আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর’ হিসেবে পরিচিত। ২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নির্মিত বাতিঘরটির আলোর উৎস ছিল- এর চূড়ায় থাকা বিশাল খোলামেলা আগুনের কুন্ডলি। যা একে বিশ্বের প্রথম বাতিঘরের মর্যাদার পাশাপাশি, উচ্চতা কিংবা লম্বায় ৪৫০ ফুট হওয়ায় সর্বকালের সবচেয়ে লম্বা বাতিঘরের স্বীকৃতিও দিয়েছিল।

প্রাচীন বিশ্বে সমুদ্রেপথে চলাচলের সময় নাবিকদের হাতে কোনো না কোনো আলোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এর আগে জাহাজের নাবিকেরা দিনের বেলা-মানবসৃষ্ট পাথরের ূস্তূপকে দিবাচিহ্ন হিসেবে এবং রাতের অন্ধকারে আগ্নেয়গিরির আভাকে পথপ্রদর্শক হিসেবে ব্যবহার করত। পরবর্তীকালে নাবিকরা উপকূল কিংবা তীরবর্তী অঞ্চলে অত্যাধুনিক ব্রেজিয়ার কিংবা লোহার ঝুড়িতে কাঠ-কয়লা জ্বালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করত। যা স্থাপন করা হতো- কোনো টাওয়ারের একদম ওপরে। আয়ারল্যান্ডে পঞ্চম শতাব্দীতে ব্রেজিয়ারগুলোয় আলোর ব্যবস্থা করেছিল। সেন্ট ডুভান নামে একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি দেশটির একটি পাথুরে উপকূলে নাবিকদের জাহাজকে ভাঙা থেকে রক্ষা করার জন্য ‘হুক হেড’-এ একটি সতর্কবাণী জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। ১৬০০-এর দশকে প্রথমবারের মতো একটি বাতিঘরের নকশা প্রদর্শন হয়েছিল। নকশায় দেখানো হয়েছিল- বাতিঘরের ছাদে একটি খোলা কয়লার আগুন।

বহু শতাব্দী অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে, আলোর উৎস, গুণ এবং মান ধীরে ধীরে উন্নত হয়। কাঠ, কয়লার পরিবর্তে ১৭০০-এর দশকে স্পাইডার ল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ল্যাম্পে একটি বাটির মতো ডিভাইস ছিল। যার ঠিক মাঝখানে একটি ছোট তেলের বাতি ছিল। যা থেকে আলো একত্রিত হয়ে পেছনের আয়নার মাধ্যমে আলো ছড়িয়ে পড়ত। পরে আরগ্যান্ড বাতি আবিষ্কারের ফলে মোমবাতির চেয়ে সাতগুণ বেশি উজ্জ্বল আলো তৈরি হয়। লার্ড অয়েল এবং স্পার্ম তিমির তেলের মতো জ্বালানি ব্যবহার করে এগুলো জ্বালানো হতো। ১৯ শতকের শেষদিকে, বৈদ্যুতিক আলোর বাল্ব আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত বাতিঘরের ফ্রেসনেল লেন্সের (উদাহরণ: বেলফাস্টের গ্রেট লাইট) ভিতরে আর্গ্যান্ড বাতি ব্যবহার করা হয়। ১৯ শতককে বাতিঘরের স্বর্ণযুগ বলা হয়। কমিশনারস অব আইরিশ লাইটের প্রতিষ্ঠাতা জর্জ হ্যালপিন উপকূলের সবচেয়ে প্রশংসিত বাতিঘরগুলো তৈরি করেছেন। যাকে যুগের সেরা উদ্ভাবন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে বিদ্যুতায়নের প্রবর্তনের আগে কেরোসিন এবং প্যারাফিন আলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। ১৯৮০-এর দশকে ইলেকট্রনিক অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (অওঝ) জাহাজগুলো শনাক্তে ব্যবহার করা হয়। এর জন্য প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিটার বাতিঘরের ভিতরে স্থাপন করা হয়।

 

স্পিট রক লাইটহাউস [ আমেরিকা ]

স্পিট রক লাইটহাউসটি আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের ১৩০-ফুট পাহাড়ের ওপরে বসে আছে। এটি মিনেসোটার সামুদ্রিক ঐতিহ্যের প্রতীক। যা সুপিরিয়র হ্রদের ঠিক উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। ১৯০৫ সালের নভেম্বরের একটি মর্মান্তিক ঝড়ের কবলে পড়ে অনেক জাহাজ-ডুবির ঘটনা ঘটেছিল। পরে অবশ্য জাহাজ মালিকদের দাবির মুখে আমেরিকান কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ বাতিঘরটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে স্পিট রক লাইটহাউসটি জাহাজের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ শুরু করে। ১৯২০ সালে এর আলোর পরিমাণ বাড়িয়ে তোলা হয়।  মিনেসোটার সুপিরিয়র হ্রদের প্রলয়ঙ্করী ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে বাতিঘরটি আজও নিরাপদে জাহাজ পরিচালনায় ভূমিকা পালন করে আসছে।

 

হেসেটা হেড লাইটহাউস [ আমেরিকা ]

ওরেগনের হেসেটাকে সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি ছবি তোলা বাতিঘর বলা হয়। ৫৬ ফুট টাওয়ারের বাতিঘরটি ১৮৯৪ সালে প্রথম আলোকিত হয়েছিল।

হেসেটা হেড লাইটহাউস হলো- আধুনিক প্রকৌশল বিদ্যার অন্যতম বিস্ময়। ১৮৯৪ সালে বাতিঘরটি তৈরি করা হয়েছিল। সে বছর থেকেই বাতিঘরটি আশপাশের অঞ্চলগুলোকে আলোকিত করে আসছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হাজার ফুট উচ্চতায় ৫৬ ফুট হেসেটা হেড বাতিঘরটি স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। এর স্বয়ংক্রিয় আলোর নাচন প্রায় ২১ মাইল দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। ওরেগন উপকূলে সবচেয়ে শক্তিশালী আলো নিয়ে হেসেটা নাবিকদের পথ দেখিয়ে আসছে। একদিকে বিশাল সমুদ্র এবং অন্যদিকে বিশাল পাহাড় আর সবুজেঘেরা মনোরম দৃশ্যের জন্য স্থাপনাটি বিখ্যাত। দর্শনার্থীরা বাতিঘরটি ঘুরে দেখতে পারেন। এমনকি এর রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মীদের বাড়িতে রাতযাপন করতে পারেন। বাতিঘরের জন্য আধা মাইল পার্কিং রয়েছে। লাইটহাউস এবং ভিউপয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়ার পথে লাইটকিপারের বাড়িটি দেখা যায়।

 

পেগিস কোভ লাইটহাউস [ কানাডা ]

পেগি’স কোভ লাইটহাউস কানাডার নোভা স্কোটিয়ায় প্রধান আকর্ষণ। এটি ১৯১৫ সালে নির্মিত হয়েছিল। শত বছরেরও বেশি সময় আগে নির্মিত বাতিঘরটি আজও নাবিকদের সমুদ্রে পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি এলাকাটি ভ্রমণপ্রিয়দের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। আটলান্টিক মহাসাগরের জল উপেক্ষা করে পাথুরে প্রান্তের (বিশাল চর) ওপরে বাতিঘরটি অবস্থিত। যা নোভা স্কোটিয়ার মাছ ধরার গ্রামের কাছাকাছি অবস্থিত। জনপ্রিয় বাতিঘরটি তার ক্লাসিক্যাল লাল বাতিঘর এবং সাদা স্ট্রাইপের টাওয়ারের জন্য স্বীকৃত। লাল-সাদা বাতিঘরটি এখনো কানাডিয়ান কোস্ট গার্ডের সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ করেন।

 

লা কর্বিয়ার লাইটহাউস [ আইসল্যান্ড ]

লা কর্বিয়ারের বাতিঘরটি সমুদ্রের একটি পাথুরে দ্বীপে স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে হরহামেশা জোয়ারের ঢেউ আছড়ে পড়ে। যার চারপাশই পাথরে আবৃত। ৬২ ফুট উচ্চ বাতিঘরটি সেন্ট ব্রেলেডে অবস্থিত। যার অবস্থান মূলত চ্যানেল দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট ব্রেলেডে জার্সির দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে। ১৮৭৩ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। এ টাওয়ারে শুধু ভাটার সময় যাওয়া যায়। এছাড়া বাতিঘরটি পাথুরে দ্বীপ এবং অনন্য অবস্থানের জন্য বিখ্যাত। দর্শনার্থীরা এখানে ভ্রমণে আসেন। এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন।

 

ফানাদ হেড লাইটহাউস [ আয়ারল্যান্ড ]

ফানাদ হেড লাইটহাউস হলো আয়ারল্যান্ডের ওয়াইল্ড আটলান্টিক তীরের অতন্দ্র প্রহরী। আইডিলিক লফ সুইলি এবং মুলরয় বে-এর মধ্যে দাঁড়িয়ে, লাইটহাউসটি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর বাতিঘরগুলোর একটি। এর নির্মাণের পাঁচ বছর আগে এক ঝড়ে অসংখ্য জাহাজ ধ্বংস হয়েছিল। যার প্রতিক্রিয়ায় বাতিঘরটি নির্মাণ করেছিল আয়ারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। ১৮১৭ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। ঠিক তার ১০০ বছর পরে, ১৯১৭ সালে আবারও ডোনেগালের অত্যাশ্চর্য বাতিঘরটি বজ্রপাতের শিকার হয়েছিল। সেবারও বাতিঘরটি রক্ষা পায়।

 

কেপ বায়রন লাইটহাউস [ অস্ট্রেলিয়া ]

কেপ বায়রন লাইটহাউসটি হলো অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পূর্বদিকের বাতিঘর। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে এর অবস্থান। ঔপনিবেশিকশৈলীর বাতিঘরটি ১৮৯৯ সালে নির্মিত। যা প্রায় ৭৪ ফুট লম্বা। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের ঝলমলে জলকে উপেক্ষা করে ১৯০১ সালে প্রথমবারের মতো আশপাশের অঞ্চলগুলোকে আলোকিত করে আসছে। ঐতিহাসিক বাতিঘরটি উপসাগর এবং আশপাশের উপকূলরেখার মনোরম দৃশ্যে অবতার সৃষ্টি করে। পর্যটক ও ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

 

বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত বাতিঘর...

টাওয়ার অব হারকিউলিস [ লা কোরুনা, স্পেন ]

খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী থেকে স্পেনের উত্তর-পশ্চিমের টাওয়ার অব হারকিউলিস বাতিঘর হিসেবে কাজ করে আসছে। যার উচ্চতা প্রায় ১৮০ ফুট। বিখ্যাত টাওয়ারটি আশপাশ মিলিয়ে প্রায় ১৮৫ ফুট জায়গাজুড়ে বিস্তৃত।

 

পেগিস পয়েন্ট লাইটহাউস [ নোভা স্কশিয়া ]

সাদা টাওয়ার এবং লাল বাতিঘরসহ টাওয়ারটি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর বাতিঘরগুলোর একটি। নোভা স্কশিয়ার রাজাধানী শহর হ্যালিফ্যাক্স থেকে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে এর অবস্থান। ১৯১৫ সালে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

 

পোর্টল্যান্ড বিল লাইটহাউস [ ডরসেট, ইংল্যান্ড ]

ইউরোপে প্রচলিত লাল-সাদা বাতিঘরের অনন্য উদাহরণ পোর্টল্যান্ড বিল লাইটহাউস। যা ইংল্যান্ডের ডরসেটের হেরিটেজ কোস্টের প্রান্তেই অবস্থিত। ১৯০৬ সালে ১৩৫ ফুট উচ্চতার দৃষ্টিনন্দন টাওয়ারটি নির্মিত হয়েছিল।

 

লেস ইক্লেয়ারস লাইটহাউস [ উশুয়া, আর্জেন্টিনা ]

সাদা বরফের পাহাড়ে আবৃত বাতিঘরটি ইক্লেয়ারসের বিগল চ্যানেলে অবস্থিত। যার অবস্থান চিলি-আর্জেন্টিনার সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে। একে প্রায়শই বিশ্বের শেষ প্রান্তের বাতিঘর বলা হয়ে থাকে। এর উচ্চতা মাত্র ৩৬ ফুট।

 

পিজিয়ন পয়েন্ট লাইটহাউস [ সান-ফ্রান্সিসকো ]

ইউরোপে প্রচলিত লাল-সাদা বাতিঘরের অনন্য উদাহরণ পোর্টল্যান্ড বিল লাইটহাউস। যা ইংল্যান্ডের ডরসেটের হেরিটেজ কোস্টের প্রান্তেই অবস্থিত। ১৯০৬ সালে ১৩৫ ফুট উচ্চতার দৃষ্টিনন্দন টাওয়ারটি নির্মিত হয়েছিল।

 

লিন্ডেসনেস লাইটহাউস [ ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড, নরওয়ে ]

লিন্ডেসনেস হলো নরওয়ের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত একটি লাইটহাউস। লাল-সাদা লাইটহাউসের লিন্ডেসনেস লাইট-হাউস নরওয়ের সবচেয়ে পুরনো বাতিঘর। ১৬৫৬ সালে নির্মিত এ বাতিঘরটি এখন কেবলই একটি জাদুঘর।

 

সান্তা মার্তা লাইটহাউস [ লিসবন, পর্তুগাল ]

বাতিঘরটি লিসবনের কেন্দ্রস্থল থেকে ১ ঘণ্টারও কম দূরত্বে পর্তুগিজ রিভেরায় অবস্থিত। যা উপকূলরেখার এক সুদর্শন স্থাপনা, যেখানে সিগনেচার টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। এর নীল-সাদার ডোরাকাটা নকশাও সুন্দর।

 

পোর্টল্যান্ড হেড লাইটহাউস [ পোর্টল্যান্ড, ইংল্যান্ড ]

বিখ্যাত বাতিঘরটি ফোর্ট উইলিয়াম পার্কের অন্যতম আকর্ষণ। যা ৯০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। এটি বৃত্তাকার সাদা একটি টাওয়ার; যা ১৭৯১ সাল থেকে সমুদ্রপথে নাবিকদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আসছে।

 

গিবস হিল লাইটহাউস [ বারমুডা ]

১৮৪৬ সাল থেকে ঢালাই-লোহার স্থাপনাটি ৪০ মাইলের মধ্যে নাবিকদের সতর্কতা দিত। কেরোসিনের আলোর বাতিঘরটি আজও সমুদ্রযাত্রীদের পথপ্রদর্শক। ২৪৫ ফুট উচ্চতার পাহাড়ে অবস্থিত বাতিঘরটি ১১৭ ফুট লম্বা।

 

লাইটহাউস অব জেনোয়া [ জেনোয়া ]

জেনোয়ার বাতিঘর, নাম ল্যান্টারনা। যা শহরের প্রতীক। ৭৭ মিটার উচ্চতার স্থাপনাটি ভূমধ্যসাগরের সবচেয়ে উঁচু এবং ইউরোপের অন্যতম বাতিঘর। ১৫৪৩ সালে নির্মিত। তবে ১২ শতক থেকে বাতিঘর হিসেবে কাজ করছে।

 

কী ওয়েস্ট লাইটহাউস [ ফ্লোরিডা, আমেরিকা ]

বাতিঘরটি তার সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। ফ্লোরিডার কী ওয়েস্টের লাইটহাউস, আশপাশের পামগাছ ও কিপারস কটেজটি ১৮৪৮ সাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে। দুই বছর আগে এক প্রলয়ংকরী ঝড়ের পর এটি নির্মাণ করা হয়।

 

ক্যালিফোর্নিয়া লাইটহাউস [ আরুবা ]

এটি ক্যারিবীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম। ১৮৯১ সালে উত্তর-পূর্ব আরুবার কাছে হারিয়ে যাওয়া জাহাজ এসএস ক্যালিফোর্নিয়ার নামে এর নামকরণ করা হয়েছিল। নীল সমুদ্রের তীরঘেঁষে সাদা পাথরের ঘরটি দাঁড়িয়ে আছে।

 

লাইটহাউস অব ছানিয়া [ ক্রিট, মিসর ]

মিসরীয় বাতিঘরটি ছানিয়া শহরের প্রতীক। ১৬ শতক থেকে বাতিঘরটি নাবিকদের নির্দেশনা দিয়ে আসছে। তপ্ত সূর্যালোকে শহরের তীরঘেঁষে ভেনিসিয়ারা এটি নির্মাণ করেছিল। পরে ১৯ শতকে মিশরীয়রা পুর্ননির্মাণ করে।

 

মাকাপুউ পয়েন্ট লাইটহাউস [ হনলুলু, হাওয়াই ]

হনলুলুর মাকাপুউ লাইটহাউসটি পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন বাতিঘরের একটি। যা ওহুর আগ্নেয়গিরির পূর্বে অবস্থিত। ১৯০৯ সালে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মাকাপুউ বিচের কাছে ৬০০ ফুট পাহাড়ের ওপরে এর অবস্থান।

 

ফারো কাবো দে পালোস [ কার্টেজেনা, স্পেন ]

লা মাঙ্গা দেল মার মেনোরের কার্টেজেনা থেকে ৩০ মিনিটের দূরত্বে বাতিঘরটি অবস্থিত। ১৮৬৫ সাল থেকে এটি সমুদ্রে নাবিকদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করছে। এর আলো সমুদ্রের ২৪ মাইল পর্যন্ত আলোকিত করে।

সর্বশেষ খবর