রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

গিয়েছিলেন সংসার চালাতে ফিরলেন লাশ হয়ে

নাশতা শেষ করে রমজান উঠে দাঁড়াতেই গুলি এসে লাগে তার গলায়। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

গিয়েছিলেন সংসার চালাতে ফিরলেন লাশ হয়ে

১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ভ্যানচালক রমজান। গিয়েছিলেন সংসারের হাল ধরতে, বাড়ি ফিরলেন লাশ হয়ে। রমজানের মৃত্যুতে তার পরিবার পড়েছে অনিশ্চয়তায়। নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের নন্দীপুর গ্রামের দিনমজুর লিটন মিয়ার বড় ছেলে রমজান মিয়া (২৪)। সংসারের দায়িত্ব নিতে ঢাকার রামপুরা এলাকায় আকিজ কোম্পানিতে সেলসম্যানের কাজ নেন। বাড়িতে কলেজপড়ুয়া ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন রমজান। নিজে ভ্যান চালিয়ে দোকানে দোকানে পৌঁছে দিতেন মালামাল। গত ১৮ জুলাই কাজ সেরে রাতে রামপুরার ভাড়া বাসায় ফেরেন। রাতভর খাওয়া হয়নি তার। তবে কথা হয়েছে ভাই ও স্বজনদের সঙ্গে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে অস্থিরতার কথা বলে সাবধানও করেছেন কলেজপড়ুয়া ছোট ভাই শাহীনকে। পরদিন সকালের নাশতা করতে দোকানে যান রমজান। ১৯ জুলাই, শুক্রবার। নাশতা শেষ করেই রমজান উঠে দাঁড়াতেই গুলি এসে লাগে তার গলায়। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রমজানকে স্থানীয়রা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে সব শেষ। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন এসে লাশ শনাক্ত করেন, বাড়িতে খবর দেন। ভাই শাহীন মিয়া জানায়, সেদিন হঠাৎ রমজান মিয়ার খবর আসে। তার ভাই গুলিবিদ্ধ। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো হাতে, পায়ে গুলি লেগেছে। পরে জানতে পারি গুলি গলায় ঢুকে বের হয়ে গেছে। রমজানের আয়ে পুরো সংসার চলত। এখন তারও ভাবনা, কে দেবে পড়াশোনার খরচ আর কে চালাবে দিনমজুর বাবা-মাকে? মা-বাবা, দাদির এখন অশ্রুসিক্ত চেহারা। দিশাহারা পুরো পরিবার।

সর্বশেষ খবর