রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

সবুজের পরিবারের স্বপ্ন পুড়ে ছাই

কখনো রিকশা চালিয়ে, কখনো দোকানে কাজ করে নিজের পড়াশোনা চালাতেন সবুজ আলী। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষে ধরবেন সংসারের হাল, সে স্বপ্ন এখন পুড়ে ছাই...

নীলফামারী প্রতিনিধি

সবুজের পরিবারের স্বপ্ন পুড়ে ছাই

নীলফামারীতে সবুজের মায়ের আহাজারি। ইনসেটে সবুজ আলী

নীলফামারী শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে সবুজের বাড়ি। সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের আরাজী দলুয়া বাংলাবাজার গ্রামে। একমাত্র বাড়িভিটার আট শতক জমি ছাড়া তেমন কোনো সম্পদ নেই সবুজ আলীর পরিবারের। বাবা আবদুর রহিম বাদশা ভ্যানচালক এবং মা সূর্য বানু কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। দুজনের সামান্য আয়ে সাত সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণের পাশাপাশি ছেলে সবুজ আলীকে পড়াচ্ছিলেন ঢাকা কলেজে। কখনো রিকশা চালিয়ে কখনো-বা দোকানে কাজ করে নিজের পড়াশোনা চালিয়েছেন সবুজ আলী। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষে ধরবেন সংসারের হাল, কিন্তু নিমেষেই নিভে গেল সেই স্বপ্ন। জানা গেছে, চার ভাই এক বোনের মধ্যে সবুজ আলী তৃতীয়। সবার বড় ভাই সুজাব আলী একজন প্রতিবন্ধী। মেজো ভাই নুরুন্নবী ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করে সংসার খরচে কিছুটা জোগান দেন। একমাত্র বোন বাছিরন বেগমের বিয়ে হয়েছে। সবুজ আলী ঢাকা কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স শেষে ভর্তি হয়েছিলেন মাস্টার্সে। তার ছোট ভাই শাহ সুলতান পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ যায় সবুজ আলীর। গত ১৬ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘটে। ১৮ জুলাই তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। সবুজের বাবা আবদুর রহিম বলেন, ‘মানুষের বাড়িতে দিনমজুরি করে সংসার চালাইছি। ছেলেও আমার ঢাকায় কখনো রিকশা চালাইছে, কখনো অন্যের দোকানে কাজ করে নিজের পড়ালেখা চালিয়েছে সে।’ তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারই এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি।

সর্বশেষ খবর