রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

কমর উদ্দিনের পরিবারের মুখে এখন ভাত নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

কমর উদ্দিনের পরিবারের মুখে এখন ভাত নেই

বগুড়ায় নিহত কমর উদ্দিনের পরিবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে নিহত রিকশাচালক কমর উদ্দিন খান বাঙ্গির (৪০) সংসার আর চলছে না। রিকশা চালিয়ে পরিবারের জন্য ভাত খাওয়ানোর মানুষটি না থাকায় অসহায় অবস্থায় দিন পার করছে পরিবারটি। সহায়-সম্বলহীন পরিবারের সদস্যরা নিজেদের নিরাপত্তা, তিনবেলা খাবার ও কমর উদ্দিনের হত্যার বিচার চাইছেন। নিহত কমর উদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৪ আগস্ট বগুড়া শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে বাড়ি থেকে সকালে বের হয়েছিলেন বগুড়া সদরের চক আকাশ তাঁরা গ্রামের কমর উদ্দিন খান বাঙ্গি। বিকালে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হয়। তার পর ফোন বন্ধ।

খোঁজ করার একপর্যায়ে সন্ধ্যায় খবর পাওয়া যায় তার লাশ পড়ে আছে বগুড়া শহরের নবাববাড়ী সড়কে। এর পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার লাশ দেখতে পান স্বজনরা। জানতে পারেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। গোটা শরীরেই বুলেটবিদ্ধ ছিল। নিহত কমর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সংসারের উপাজর্নক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশাহারা তার পরিবার। স্বামীকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে নির্বাক-নিস্তব্ধ স্ত্রী তহমিনা আক্তার। গর্ভে রয়েছে সাত মাসের সন্তান। ষাটোর্ধ্ব মা জমেলাও তাদের সংসারে। সহায়-সম্বল বলে কিছুই নেই। আছে শুধু থাকার একমাত্র ঘর। বড় মেয়ে কাজলীর বয়স এখন ১৭ বছর। সাত বছরের ছেলে তৌহিদ স্থানীয় মাদরাসায় পড়ে, দুই বছরের আবদুল্লাহ এখনো মায়ের কোলে। নিহতের স্ত্রী তহমিনা আক্তার বারবার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছিলেন, চোখে যেন অন্ধকার, তিন সন্তান আর গর্ভের সন্তান নিয়ে কীভাবে চলবেন, সেই প্রশ্ন তার চোখেমুখে। কমর উদ্দিনের মা জমেলা বেগম জানান, ছেলে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেও আর ফেরেনি। তার বুকে পিঠেসহ গোটা শরীরেই বুলেটবিদ্ধ ছিল। ছেলে আর ফিরবে না। ভাতও খাওয়াবে না। এখন কীভাবে জীবন চলবে, সেই চিন্তাই অশ্রুসিক্ত হচ্ছেন বারবার। কমর উদ্দিনের বড় মেয়ে বিবাহযোগ্য, তাকে বিয়ে দিতে হবে। কমর উদ্দিন রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন, এখন কী হবে, সেই চিন্তা তাদের।

 

সর্বশেষ খবর