রাজশাহীর তানোরে ২০২৪ সালে ফিলিপাইন থেকে আসেন দুই তরুণী। তারা বিয়ে করেন পাশাপাশি দুই গ্রামের দুই তরুণকে। এখনো তারা গ্রামে বসবাস করছেন। ২০২২ সালে প্রেমের টানে রাজশাহী এসেছিলেন মালয়েশিয়ান তরুণী স্যান্ডি। বিয়ে করেন প্রেমিক জুলফিকারকে। এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে এক কন্যা সন্তান। এখন তারা মালয়েশিয়াতে থাকছেন। জুলফিকার রাজশাহী মহানগরীর বিনোদপুর এলাকার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। ২০ বছর বয়সি স্যান্ডি বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। এখন তিনি আলিশা অ্যানি। তিনি মালয়েশিয়ার পাসপোর্ট দপ্তরে কর্মরত। সে সময় জুলফিকার বলেছিলেন, প্রায় আট বছর আগে পড়ালেখার জন্য তিনি মালয়েশিয়ায় যান। ওই সময় পড়াশোনার পাশাপাশি খন্ডকালীন চাকরি করতেন তিনি। সেখানেই স্যান্ডির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক সময় তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ২০২২ সালের মালয়েশিয়া থেকে উড়ে আসেন স্যান্ডি। ওই বছরের ১৪ জুলাই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর এক মাস রাজশাহীতে ছিলেন। এরপর দুজনেই চলে যান মালয়েশিয়ায়। সেখানে তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। বিয়ের এক বছর পর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে রাজশাহী ঘুরে গেছেন। জুলফিকারের মা ফাইমা বলেন, ‘আমাদের ছেলে, বউ সন্তান নিয়ে ভালো আছে। আমিও দুই মাস মালয়েশিয়ায় থেকে রমজান আসার আগে দেশে এসেছি। ছেলে ও বউ সেখানে একটা দোকান দিয়েছে। দুজনেই নিজেদের সেই দোকানে থাকে। ভিডিও কলে পুত্রবধূ ও ছেলের সঙ্গে কথা হয়। তাদের ভালোই চলছে।’ ফেসবুকে পরিচয়ের পর প্রেম। এরপর সেই টানে ফিলিপাইন থেকে রাজশাহী উড়ে আসেন দুই তরুণী। এখানে এসে পছন্দের মানুষকে তারা বিয়েও করেন। তারা এখন আছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলায় শ্বশুরালয়ে। এই দম্পতি হলেন, তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলাম (২২) ও ফিলিপাইনের জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ অঞ্চলের খাদিজা ইসলাম (২২) এবং তানোরের মালশিরা গ্রামের রেজাউল করিম (৩৩) ও ফিলিপাইনের নেগ্রোস দ্বীপের পশ্চিম অংশ বাগো শহরের মরিয়ম খাতুন (৩২)। কৃষ্ণপুর ও মালশিরা তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের পাশাপাশি দুটি গ্রাম। রাকিবুল ইসলাম জানান, ২০২২ সালে রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় ফিলিপাইনের জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দা খাদিজা ইসলামের। খাদিজা তখন সৌদি আরবে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ধর্ম পরিবর্তনের আগে তার আগের নাম ছিল রিজেল ক্লিয়ার। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব গড়ায় ভালোবাসার সম্পর্কে। গত বছরের ৫ অক্টোবর সৌদি থেকে বাংলাদেশে আসেন খাদিজা ইসলাম। ঢাকায় বিমানবন্দরে তাকে রিসিভ করেন রাকিবুল। পরদিন ৬ অক্টোবর মুসলিম রীতিতে বিয়ে করেন তারা। বর্তমানে তারা নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন। রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা ইসলাম এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চান না। ভালো আছেন জানিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে যান রাকিবুল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গ্রামে বসবাস করলেও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা হয় না রাকিবুলের স্ত্রীর। দুই ভাই, বাবা-মা ও দাদিকে সঙ্গে নিয়ে বসবাস। প্রতিবেশী জব্বার মৃধা জানান, বাইরে খুব একটা বের হন না রাকিবুল ও তার স্ত্রী। কথাও বলেন না কারও সঙ্গে। একই উপজেলার মালশিরা গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে রেজাউল করিমের কাছে ছুটে আসা মরিয়ম খাতুনের ধর্ম পরিবর্তনের আগে তার নাম ছিল চারিনা মলিন। প্রেমিক রেজাউল ও ভিনদেশি প্রেমিকা মরিয়ম খাতুন সিঙ্গাপুরে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজের সুবাদে রেজাউল সিঙ্গাপুরে থাকায় মরিয়মের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। ২০২২ সালের আগস্টে মরিয়ম বাংলাদেশে এসে তানোর উপজেলার মালশিরা গ্রামের প্রেমিক রেজাউলকে মুসলিম রীতিনীতিতে বিয়ে করেন।