২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৮:১২

পাহাড়ে ভোট : প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে ভোট : প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের পাশাপাশি আছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও। সম্ভাব্য নাশকতা নিয়ে দেখা দিয়েছে চাপা আতঙ্ক। অন্যদিকে, পাহাড়ি অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্রধারীদের ভোট ডাকাতির শঙ্কায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া হামলা-মামলায় ক্ষুদ্ধ বিএনপি। তবে প্রশাসন বলছে, নির্বাচনকে ঘিরে সব সমস্যা নিরসনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। 

এদিকে, গত শুক্রবার রাত ১২টায় মোটরসাইকেল ও শনিবার রাত ১২টার মধ্যে মাইক্রোবাস, জিপ, ট্টাক্সিক্যাব, টেম্পো, বেবী ট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজি বাইক, সিএনজি, লঞ্চ, স্পিড বোট, ইঞ্জিনচালিত সব ধরনের নৌযান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে রাঙামাটি রিটানিং কর্মকর্ম ও জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। 

তিনি বলেন, রাঙামাটির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সম্ভাব্য সব ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিয়োজিত আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোটগ্রহণের দিন কোনো সহিংসতা সৃষ্টিকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। কেন্দ্রের ভিতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

এদিকে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনকের নিরপক্ষ ভূমিকা পালন করার দাবি জানান রাঙামাটি বিএনপি প্রার্থী মনি স্বপন দেওয়ান। শনিবার সকালে রাঙামাটি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই রাঙামাটি জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের যেভাবে হামলা-মামলা দেওয়া হচ্ছে এটা দেশে কোথাও দৃশ্যমান না। ভোট কেন্দ্রে বিএনপির নেতা-কর্মী শূন্য করার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছে একটি মহল।  

অন্যদিকে, স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা উল্টো অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা বাঘাইছড়ির আমতলী, বরকলের কুরকুটিছড়া, রিজার্ভ বাজারের নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামা লীগ নেতাকর্মীদের উপর হুমকি ও হামলা-নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এসব অপকর্মকে ঢাকা দেয়া ও নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হীন উদ্দেশ্যে বিএনপির প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। 

তবে রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে তিনগুণ পুলিশ রাঙামাটি জেলায় মোতায়ন করা হয়েছে। কেউ নাশকতা করে পার পাবে না। কোনো রকম রক্তপাত ঘটলে পুলিশ তাৎক্ষণিক কঠোর পদক্ষেপ নিবে।

প্রসঙ্গত, রাঙামাটির ১০টি উপজেলা মিলে একটি মাত্র আসন ২৯৯। পাহাড়ি এ অঞ্চলে রয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ২১৭ ভোটার। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৬ হাজার ৫৩৬ ও নারী ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ৩০৭। যার মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালির সংমিশ্রণ। 

এবার নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের দীপংকর তালুকদার (নৌকা), বিএনপির মণিস্বপন দেওয়ান (ধানের শীষ) এবং জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি ঊষাতন তালুকদার (সিংহ), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার (লাঙ্গল), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জুঁই চাকমা (কোদাল) এবং ইসলামি শাসন আন্দোলনের মো. জসিম (হাতপাখা)।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর