সোমবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সিলেটে বর্তমান এমপিদের হাতে দলীয় টিকিট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে বর্তমান এমপিদের হাতে দলীয় টিকিট

কোনো ধরনের চমক ছাড়াই ঘোষণা করা হয়েছে সিলেটে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর তালিকা। জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে গতকাল চারটি আসনের প্রার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে মনোনয়নের চিঠি। এই চারটি আসনের মধ্যে সিলেট-১ (সদর-সিটি করপোরেশন) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের জায়গায় মনোনয়ন পেয়েছেন তার ছোট ভাই জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন। বাকি তিনটির মধ্যে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সিলেট-৪ (জৈন্তা-গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ) আসনে ইমরান আহমদ ও সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দলীয় মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন। এ তিন প্রার্থীই বর্তমান জাতীয় সংসদে নিজেদের এলাকা থেকে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

জেলার অপর দুটি আসন ২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ও সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সেলিম উদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গতকাল এ দুটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় এবারও আসন দুটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। তবে গেলবার সহজে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারলেও এবার আসন দুটি থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নির্বাচনে জয়ী হতে আসন দুটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়ার দাবি তাদের।

বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পংকী খান বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে নিশ্চিত বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাত-দিন কাজ করে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়াকে বিজয়ী করেছিলেন। উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে যে এহিয়া পাঁচ হাজার ভোটও পাননি, সেই এহিয়াকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করেছেন। তাই এবার এ আসনটিতে অন্য কোনো প্রতীক নয়, নেতা-কর্মীরা নৌকা প্রতীকে শফিকুর রহমান চৌধুরীকেই প্রার্থী দেখতে চাচ্ছেন।’

সিলেট-৫ আসনে গতবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এবার আসনটিতে দলীয় প্রার্থী চাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কেফায়েতুল কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট-৫ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হলে কোনোভাবেই বিজয়ী হওয়া সম্ভব নয়। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে নৌকা প্রতীকের কোনো বিকল্প নেই।’

এদিকে, সিলেটের ৬টি আসনে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন প্রায় অর্ধশত নেতা। গতকাল ৪টি আসনে দলীয় প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের পর আসনগুলোতে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সিলেট-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর সঙ্গে এবার দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আরও অন্তত ৬ নেতা। কিন্তু এবারও মাহমুদ উস সামাদ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে এসব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে দলীয় প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করতে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আসনটির অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম। একই আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাছিত টুটুলও।

সর্বশেষ খবর