সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্ব মিডিয়ায় শেখ হাসিনা

বিশ্ব মিডিয়ায় শেখ হাসিনা

উন্নয়নের ধারায় রকেট গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের হাল ধরে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা পুঁজি করে দেশের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। দেশের কল্যাণে তার এই অসামান্য অবদানের জন্য বহির্বিশ্বেও তিনি সমানভাবে সমাদৃত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের দৃঢ় প্রত্যয়ে আছেন। তাই বিশ্ব মিডিয়াতেও শেখ হাসিনার জয়জয়কার।  অনলাইনের তাজা খবর জেনে জানাচ্ছেন- তানিয়া তুষ্টি

 

২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্রমশ বেড়েছে। আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে দেশের বিভিন্ন খাত। দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতিতে সাহায্য করেছে। অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক খাতে চাঙ্গাভাব এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও তার অবদান চোখে পড়ার মতো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের এমন উন্নয়নের খবর ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। আর তাই রকেট গতির উন্নয়নে থাকা বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ববাসীর নজর রয়েছে সব সময়। মেয়াদভিত্তিক সরকার গঠনে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও তাই বিশ্ব মিডিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আর স্বভাবতই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিবেশী দেশ ভারতের পত্রিকা ‘ইন্ডিয়া টাইমস’-এ বলা হয়েছে, জনগণ সমর্থিত ৭১ বছর বয়সী শেখ হাসিনা টানা শাসনকালের এক দশকের বেশি সময় পার করেছেন। এ সময়ে বাংলাদেশকে পরিণত করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার উল্লেখযোগ্য ও সন্তুষ্টজনক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশ হিসেবে। অথচ এই দেশটিই এক সময় বন্যাকবলিত দেশ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিল।

ভারতের অপর সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক বর্তমান’-এর একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ভারতের পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কারণ, এই ভোটেই প্রমাণিত হবে উন্নয়নের প্রশ্নে শেখ হাসিনা কতটা সফল। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গড়ে বিএনপির ভোটের লড়াইয়ের নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করাও নির্বাচন কমিশনের কাছে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। 

মার্কিন ব্যবসায়িক সাময়িকী ফোর্বস এই নির্বাচনকে ‘টিকে থাকার লড়াই’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে- এক দশক ধরে বাংলাদেশ ৬ শতাংশের বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। ফলে ২০০৯ সালের ১০ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতি ১০ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ২০১৮ সালে ২৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। জাপান, চীন ও ভারতের কোম্পানিগুলোও এসব অগ্রগতির ভাগ পাচ্ছে।

সিএনএনের খবরে নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তেজনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ননীতির প্রশংসা করা হলেও বাকস্বাধীনতা সীমিতকরণের সমালোচনা করা হয়েছে এতে। গত নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপির অংশ না নেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এবার তারা নির্বাচনে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময়ে প্রপাগান্ডা ঠেকাতে ইন্টারনেটের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুক্রবার বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) থ্রি-জি ও ফোর-জি সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, প্রপাগান্ডা এবং বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছে। এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার সহিংসতার প্রসঙ্গ শেখ হাসিনার বিজয়ী হওয়ার আভাস দিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ‘শেখ হাসিনার দশ বছর : উন্নয়ন বিয়োগ গণতন্ত্র’ শিরোনামে লিখেছে, ব্যবসাবান্ধব নীতির কারণে অনেক উদ্যোক্তা সরকারের প্রশংসা করলেও অবকাঠামো নির্মাণে ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

শেখ হাসিনাকে লৌহমানবী আখ্যা দিয়ে মার্কিন সাময়িকী টাইমস তার এক দশকের শাসনামলে অর্জিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির খবরকে সামনে এনেছে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নিচে চাপা পড়ে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সঙ্কুচিত হওয়ার প্রসঙ্গও আলোচনায় এনেছে তারা।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়া তরুণদের প্রসঙ্গ। নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা থাকার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব রকম বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তরুণরা তাদের কণ্ঠস্বরকে সামনে আনতে চায় ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়ে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর সামনে এনেছে শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রসঙ্গ। হলি আর্টিজান হামলার দুই বছর অতিক্রান্তের পর বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলা হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রশংসা করা হয়েছে সরকারের সন্ত্রাসবাদবিরোধী নীতির। দেশের জনগণের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে আস্থা ও বিশ্বাস।  ‘রয়টার্স’-এর প্রতিনিধিকে তিনি জানান, জনগণ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে বলে আমার বিশ্বাস।  নৌকা নিঃসন্দেহে জিততে যাচ্ছে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।  আমি আমার দেশের জনগণের ওপর সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর