শিরোনাম
২৫ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:০৫

ড্রেসিংরুমের ভিডিও ভাইরাল, কোচের যে কথায় জ্বলে উঠেছিলেন সৌদি খেলোয়াড়রা

অনলাইন ডেস্ক

ড্রেসিংরুমের ভিডিও ভাইরাল, কোচের যে কথায় জ্বলে উঠেছিলেন সৌদি খেলোয়াড়রা

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বমঞ্চে কোনো দলই যে ছোট নয়, নিজেদের দিনে জ্বলে উঠতে পারেন যে কেউ। এবারের কাতার বিশ্বকাপে বিষয়টি আরেকবার সত্য প্রমাণ করে দিল সৌদি আরব। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনাকে মাটিতে নামিয়ে আনল তারা। টুর্নামেন্টের হট ফেবারিটদের হারিয়ে আসরের প্রথম অঘটনেরও জন্ম দিল গ্রিন ফ্যালকনরা।।

১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশ নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিল সৌদি আরব। এরপর আরও চার আসরে খেলে একবারও গ্রুপপর্বের বাধা পেরোতে পারেনি দলটি। কাতারে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নেমে আরবের মাটিতে স্বপ্ন দেখছিল বড় কিছুর। কঠিন সব প্রতিপক্ষ সামনে থাকলেও নিজেদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল তারা। হট ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শুরুটা স্মরণীয় করে রাখল দলটি। অবশ্য এমন সাফল্যের নেপথ্যে আছেন সৌদি আরবের ফরাসি কোচ হার্ভে রেনার্ড।

আর্জেন্টিনা বনাম সৌদি আরবের ম্যাচের প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির পেনাল্টিতে এগিয়ে গিয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। এরপর আর্জেন্টিনার তিনটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে এসেপাল্টে যায় দৃশ্যপট। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সৌদি আরবের হয়ে দুই গোল করেন সালেম আল-দাওসারি ও সালেম আল-শেহরি। এরপর সৌদি আরবের ডিফেন্স ভেদ করে জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি আর্জেন্টিনা।

কিন্তু সৌদি আরবের এই জয় নিশ্চিতের পেছনে যে কোচ হারভে রেনার্ডের মন্ত্রণাই কাজ করেছে তা সম্প্রতি ভিডিওতে প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রথমার্ধ শেষে বিরতির সময়ে দলের ড্রেসিং রুমে খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলেন রেনার্ড। গত বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের অফিশিয়াল টুইটার একাউন্টেই ড্রেসিং রুমের সেই ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ার কয়েক দিনের মাথায় সৌদি আরবের ড্রেসিং রুমের ভিডিওটি নিয়েও তুমুল হইচই পড়ে গেছে।

সৌদি আরবের মিডফিল্ডার আবদুলিল্লাহ আল-মালকি বলেন, আমাদের কোচ ভীষণ পাগলাটে। তিনি পুরো বিরতির সময়টা আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, এমন সব কথা বলেছেন যে আমাদের মনে হচ্ছিলো মাঠে গিয়ে প্রাণপণে লড়াই করে খেলি। 

রেনার্ডের কথায় তার চোখে পানি এসে গিয়েছিল বলেও জানান আল-মালকি। তিনি বলেন, খেলার আগে আমরা কোচের সাথে কথা বলছিলাম, আল্লাহর কসম, আমি তখন কাঁদছিলাম। তিনি আমাদের এতটাই অনুপ্রাণিত করেছিলেন যে খেলতে নামার জন্য তর সইছিল না আমাদের।

হারভে রেনার্ড ড্রেসিং রুমে থাকা খেলোয়াড়দের বলেছিলেন যে, তারা তাদের প্রতিপক্ষকে প্রথম ৪৫ মিনিটে অনেক বেশি সম্মান দিয়ে ফেলেছে।
এক পর্যায়ে রেনার্ড একজন খেলোয়াড়ের দিকে চিৎকার করে বলেন, আমি দেখেছি মেসির পায়ে বল ছিল আর তুমি ডিফেন্সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলে! তাহলে ফোনটা বের করে মেসির সাথে একটা ছবি নিয়ে নিলেও পারো।

রেনার্ড তার দলের খেলোয়াড়দের চিৎকার করে বলছিলেন, "তোমাদের কি কিছু অনুভব হচ্ছে না এখানে? তোমাদের মনে হচ্ছে না যে আমরা জিততে পারি এই ম্যাচটা? মনে হচ্ছে না কি? তারা একদম আরামে খেলেছে। এটা বিশ্বকাপ। নিজেদের সবটা দিয়ে লড়াই করো।

প্রসঙ্গত, ম্যান ম্যানেজার’ হিসেবে দারুণ সুনাম সৌদি আরবের ফরাসি কোচ রেনারের। ভালো ব্যবস্থাপক হিসেবে নিজের সেরাটা তিনি যেখানে কোচ হিসেবে কাজ করেছেন, সেখানেই রেখেছেন। তিনি কোচ হিসেবে ব্রিফ করেই নিজের কাজ সারেন না, কাজটা হাতে–কলমে খেলোয়াড়দের করে দেখান।

২০১২ সালে জাম্বিয়াকে আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের শিরোপা জিতিয়েছিলেন রেনার। সেটি করেছিলেন চাকরির দ্বিতীয় বছরে। ২০১৫ সালে আবারও আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের সেরা কোচ এই ফরাসি- এবার শিরোপা জেতান আইভরি কোস্টকে। এরপর জার্মান লিগ ‘আঁ’র ক্লাব লিলের কোচ হিসেবে কাজ করে আবারও ফেরেন জাতীয় দলের দায়িত্বে। ২০১৮ বিশ্বকাপে তাঁর কোচিংয়েই মরক্কো ২০ বছরের আক্ষেপ ঘুঁচিয়ে পৌঁছে যায় বিশ্বকাপের মূল পর্বে। ২০১৯ সালে শুরু হয় তার সৌদি অধ্যায়।

মূলত রেনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বাছাইপর্ব পার করে সৌদি আরবকে বিশ্বকাপের টিকিট এনে দেওয়ার জন্য। সেটা তো রেনার করেছেনই, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে যা করেছে তার দল, সেটা এখন জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়।

সূত্র- মিরর।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর