জীবন তো মানুষকে নানাভাবেই চমকে দেয়, দাঁড় করার কিছু মুহূর্তের মুখোমুখী। যে মুহূর্ত কল্পনাকেও হার মানায়। অবিশ্বাস্য লাগে নিজের চোখকেও। তেমন এক মোমেন্টাম ধরা দিল ফিলিস্তিনের নাগরিক হুসাম সাফারানির ডেরায়।
কাতার বিশ্বকাপে গিয়েছিলেন ব্রাজিল-সার্বিয়া ম্যাচ দেখতে। সেলেসাওদের জয়ে ফুরফুরে মেজাজে স্টেডিয়াম থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। দোহার মেট্রো স্টেশনে গেলেন, ধরবেন ট্রেন। সেখানেই দেখলেন এক নারী তার ঘুমন্ত শিশুকে নিয়ে ট্রেনে উঠতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্বভাবতই সাফারানি সাহায্যের হাত বাড়ালেন, শিশুটিকে কোলে নিলেন!
ঘটনা সেখানে শেষ হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে সময় বদলে দিল মুহূর্তের রঙ! গল্পের মোড়ে তখনও আরও চমক বাকি। সাফারানির কোলে নেওয়া সেই শিশুটি ছিল আদেনর লিওনার্দো বাচ্চি নামের এক ব্রাজিলিয়ানের নাতি। নামটা শুনেও তো মনে হচ্ছে, হতে তো পারে, তাতে কী? কিন্তু বড় নামটা অপরিচিত ঠেকলেও ব্রাজিল ফুটবল দলের কোচ তিতেকে তো চেনেন! শিশুটি সেই তিতের নাতি।সাফারানির সাহায্য করা সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে চোখে পড়ে তিতেরও। পরোপকারী মানুষটাকে খুঁজতে থাকেন তিনি। দেখার করতে চান এই মানবতামুখী মানুষটার সাথে।
খুঁজে পাওয়া গেল সাফারানিকে। স্বয়ং ব্রাজিল কোচের দাওয়াত পেয়ে অবাক এই ফিলিস্তিনি। ক্যামেরুনের সঙ্গে ম্যাচের আগে অনুশীলন সেশনে সাফারানির নিমন্ত্রণ ছিল। তিনি গেলেন তার ছেলেকে নিয়ে। সেখানে দেখা হয় তিতের সঙ্গে, কথাও হয়। তিতের কাছ থেকে ব্রাজিলীয় ফুটবলারদের সই করা একটি হলুদ জার্সিও পেয়েছেন উপহার।
তিতে বলেছেন, ‘ফুটবল আমাদের অনেক দারুণ দারুণ মুহূর্ত উপহার দেয়, এটি তেমনই একটি। আমি সাফারানির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছি, কারণ সে এমন একজন মানুষ, যাঁর মধ্যে এমন কিছু আছে, যেটি ফুটবলেরও অনেক ঊর্ধ্বে।’
ব্রাজিলের পাঁড় ভক্ত সাফারানি বললেন ‘এমন কিছু কখনোই ভাবিনি। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটিই স্বপ্নের মতো। মনে হচ্ছে, গোটা দুনিয়ার মালিক আমি।’
সূত্র: মিডল ইস্ট আই
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল