১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:৫৫

মেসি-রোনালদোকে পিছনে ফেলে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন এমবাপ্পে

অনলাইন ডেস্ক

মেসি-রোনালদোকে পিছনে ফেলে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন এমবাপ্পে

সংগৃহীত ছবি

কিলিয়ান এমবাপ্পে, ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের ১০ নং জার্সিধারী খেলোয়াড়। পেশাদার ফুটবলে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমারের সঙ্গে খেলেন ফরাসি ক্লাব ‘প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)-তে।

বর্তমানে তার বয়স মাত্র ২৩ বছর। এর মধ্যেই দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে তার গোলের সংখ্যা ৯। রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ১২টি ম্যাচ।

এবারের বিশ্বকাপে পাঁচটি গোল করে স্বর্ণের বুটের দৌড়েও এগিয়ে রয়েছেন ফ্রান্সের এই স্ট্রাইকার। অনবদ্য পারফরম্যান্সে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি, পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন এমবাপ্পে।

বিশ্বকাপে গোল সংখ্যা বিবেচনায় এমবাপ্পে নিজ দেশের থিয়েরি ওঁরি বা জিনেদিন জিদানকে ছাপিয়ে গেছেন আগেই। ২৪ বছর বয়স হওয়ার আগে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি গোল করার পেলের নজিরও ছুঁয়েছেন তিনি। 

সাধারণভাবে বিভিন্ন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে তুলনা করা কঠিন। প্রতিপক্ষ, সতীর্থ, খেলার কৌশল, নিয়ম, প্রযুক্তি অনেক কিছুই বদলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বদলে যায় সেরা বেছে নেওয়ার মাপকাঠিও। পরিসংখ্যান বিচার করলে গত মে মাসেই দুই তারকা মেসি, রোনালদোকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন এমবাপ্পে।

২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর ২৩ বছর পূর্ণ করেছেন এমবাপ্পে। এই বয়সে গোল করার নিরিখে পর্তুগাল অধিনায়কের থেকে অনেকটাই এগিয়ে তিনি। পেশাদার ফুটবলে রোনালদোর গোল সংখ্যা ছিল ১৩২টি। মেসি এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। পিএসজির দুই সতীর্থের ২৩ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনে গোল সংখ্যা ছিল ১৯৭। আরও একটি পরিসংখ্যানে মেসি, রোনালদো দু’জনকেই পিছনে ফেলে দিয়েছেন এমবাপ্পে। ২৩ বছর বয়সের এমবাপে ১১১ বার সতীর্থদের গোল করতে সাহায্য করেছেন। এই সংখ্যা মেসি এবং রোনালদোর ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৮৪ এবং ৬৬।

এমবাপ্পে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে। এমবাপ্পের ঝুলিতে ১৪টি ট্রফি। ২৩ বছর বয়সে মেসি ১২টি এবং রোনালদো পাঁচটি ট্রফি জিতেছিলেন। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রেও এই দু’জনের থেকে পিছিয়ে নেই এমবাপ্পে। ২৩ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে এমবাপ্পে ফ্রান্সের হয়ে ৫৩টি ম্যাচ খেলেছেন। সম সংখ্যক ম্যাচ খেলেছিলেন রোনালদো। এক্ষেত্রে আবার কিছুটা পিছিয়ে মেসি। তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে খেলেছিলেন ৪৯টি ম্যাচ। মাত্র ১৭ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব রয়েছে এমবাপ্পের, যা নেই মেসি বা রোনালদোর।

একাধিক পরিসংখ্যানে ২৩ বছরের এমবাপ্পে পিছনে ফেলে দিয়েছেন ২৩ বছরের মেসি এবং রোনালদোকে। প্রায় কোনও ক্ষেত্রেই তিনি কারও থেকে পিছিয়ে নেই। শেষ পর্যন্ত একজন খেলোয়াড়ের শ্রেষ্ঠত্বের বিচার হয় সাফল্যের পরিসংখ্যান দিয়েই। খেলোয়াড়ের দক্ষতা, শিল্প গুরুত্বপূর্ণ হলেও শেষ কথা বলে সাফল্যই। সেদিক থেকেও মেসি, রোনালদোর থেকে এগিয়ে রয়েছেন এমবাপ্পে। রোনালদো পর্তুগালকে ইউরো জিতিয়েছেন। মেসি আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন করেছেন, বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছেন। যদিও বিশ্বকাপ দিতে পারেননি। এমবাপ্পে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ দিয়েছেন। কাতারে চ্যাম্পিয়ন হলে দ্বিতীয়বার ট্রফি দেবেন।

মেসি, রোনালদোর সাফল্য যেকোনও ফুটবলারের কাছেই ঈর্ষনীয়। তারা ফুটবল জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন। আর এমবাপ্পে রয়েছেন শুরুর দিকে। এই নিক্তিতে তাকে মাপার সময় হয়তো এখনও আসেনি। এখনও অন্তত এক দশক ক্লাব ফুটবল খেলবেন এমবাপ্পে। নিশ্চিতভাবেই খেলবেন আন্তর্জাতিক ফুটবলও। তার অর্জন করার জন্য পড়ে রয়েছে গোটা ফুটবল দুনিয়া। এমবাপ্পে যে গতিতে এগোচ্ছেন তাতে আরও বহু রেকর্ড তার পায়ে চলে আসতে পারে। এখনই বিশ্বের সব থেকে দামী ফুটবলার তিনি। পেশাদার দুনিয়ায় সাফল্যই শেষ কথা।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর