৩ জুন, ২০১৮ ১১:৩২

নিজের প্রাণ দিয়ে আত্মঘাতী গোলের মাশুল দিয়েছিলেন যিনি!

অনলাইন ডেস্ক

নিজের প্রাণ দিয়ে আত্মঘাতী গোলের মাশুল দিয়েছিলেন যিনি!

আন্দ্রে এস্কোবার

১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের আসর বসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেই আসরে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হয় শক্তিশালী কলম্বিয়াকে। সেই ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় কলম্বিয়া।

সেদিন গ্যালারীতে দুই দেশের সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়েছিল। ম্যাচ শুরুর পর থেকেই সবকিছু ঠিক চলছিল। কিন্তু খেলার ৩৩ মিনিট পার হওয়ার পরেই ছন্দপতন ঘটে। মার্কিন ফুটবলারদের আক্রমণ রুখতে গিয়েই আত্মঘাতী গোল করে বসেন কলম্বিয়ার অধিনায়ক আন্দ্রে এস্কোবার। হতাশা কাটিয়ে ফের লড়াই শুরু করেন এস্কেবার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। তবে বিশ্বকাপে আত্মঘাতী গোলের প্রায়শ্চিত্ত তাকে নিজের জীবন দিয়ে করতে হয়েছিল। 

ফুটবল মাঠে আত্মঘাতী গোল নতুন কিছু নয়। কিন্তু কলম্বিয়ার উন্মাদ সমর্থকেরা এরপরই কলংকিত করলো ফুটবল অঙ্গণকে। ওই ম্যাচের ১০ দিন পর কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরে একটি বারে মন খারাপ করেই মদ্যপান করছিলেন এস্কোবার। সেই পানশালায় আচমকা ঢুকে পড়ে কয়েকজন আততায়ী। প্রকাশ্যে অসংখ্য মানুষের সামনে পরপর ৬টি গুলি করা হয়ে এস্কোবারকে। খুনিরা প্রতিবার গুলি করার সময় 'গোল' 'গোল' স্লোগান দিচ্ছিল। এরপর তারা নির্বিঘ্নে গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।

সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এস্কোবারকে, কিন্ত ডাক্তারদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ঘন্টাখানেকের মাথায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই ফুটবলার। মনে করা হয়, মনে করা হয়, এস্কোবারের আত্মঘাতী গোলের কারণে কলম্বিয়ার জুয়াড়িরা সেই ম্যাচে প্রচুর টাকার বাজি হেরে যায়। দেশে ফিরতেই তারাই খুন করেছিলো তাকে।

১৯৯৫ সালে ক্যাস্ট্রো মুনোজ নামের এক ব্যক্তিকে এস্কোবারের হত্যার দায়ে ৪৩ বছর কারাদণ্ডের সাজা দেন আদালত, যদিও ১১ বছর জেল খেটেই পার পেয়ে যায় সে। এস্কোবারের শেষকৃত্যে প্রায় সোয়া এক লক্ষ লোক অংশ নিয়েছিল, এখনও তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে কলম্বিয়ানরা, প্রতিবছর মৃত্যুবার্ষিকীতে তার ছবিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় তারা। ২০০২ সালে মেডেলিন শহরে তাঁর একটি স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়, এখন সেখানেই জড়ো হন ভক্তরা। 

আত্মঘাতী গোলের সেই দৃশ্য।

বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

সর্বশেষ খবর